পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سيast. S38S কিনিতে দেয় নাই ; বলিয়াছিল, ফজুল । নাই । আজ আবার তাহার কথা মনে পড়িল, সকল ছোট ছেলেরই কি আরশি কিনিবার সখ হয় ? ভাৰিল, শীতের রাত্রে বিষ৭ চলিয়াছে ; গাড়ী আট আনাম ঠিক হইয়াছে সত্য, কিন্তু ভালম ভালয় পৌছিতে পারিলে সে তাহাকে আরও দু-পয়সা বকশিস দিবে –ভাবিতে ভাবিতে রতিরাম উদার হইয়া উঠিল । মনটা আবার একফাকে বিকানীর রিয়াসতে চলিয়া গিয়াছে। এমনই করিয়াই কি চলিষে ? চলিবে বইকি ? তাহার চোখের সম্মুখেই ত ঘনশ্যামদাস দশ বৎসরের মধ্যে লাখে। রূপেয়া উপার্জন করিয়া ফেলিয়াছে—একটা ধৰ্ম্মশালাও করিয়া দিয়াছে । গভর্ণমেণ্টের খেতাব পাইয়াছে রায়-বাহাদুর। লক্ষ্মী মতলব করিলে কি না হয় ? তাহারও কি হইবে না ? আসিবে —তাহারও আসিবে-সবই ভাগোর খেলা। লসিবে থাকিলে লাগিয়া যাইবে ; শুধু ধৈর্য্য ধরিয়া থাকিতে হয় । আর কতদিন ? নসিব একবার খুলিয়া গেলেই রতিরাম একদম গদীয়ান হইয়া বসিবে । লোকে বলিবে, রতিরাম পেরিওয়াল লাখ পতি। না-হয়, কিছু দানধৰ্ম্মও করা যাইবে । তাহার কাছে কোথায় তুচ্ছ ছেলেপেলে লইয়া সংসার করা ; রুটির পয়সা জুটিলে, , শাকচচ্চড়ির পয়স জোটে না । ভাবিতে ভাবিতে রতিরামের তন্দ্রা আসিয়া পড়িল । স্বপ্নে সে দেখিতে থাকিল, স্বয়ং লছমীজী তাহাকে দর্শন দিয়াছেন। তিনি তাহাকে বর মাগিতে বলিতেছেন । সে এই বর প্রার্থনা করিতেছে যেন বদরগঞ্জের বাজারে পাট খরিদ কয়িবার পরই কলিকাতার বাজার-দর মশ-প্রতি তিন টাকা বাড়িয়া যায়। সহসা তন্দ্র টুটিয়া আসে। জাগিয়া বসিয়া রতিরাম ভাবিল, সে কি বেকুব । এই সামান্ত বর সে প্রার্থনা করে ? ভাষিতে ভাবিতে আবার তজ্ঞ আসিয়া পড়িল । বস্তি ছাড়িয়া গাড়ী মাঠে পড়িয়াছে। প্রকৃতি যেন গীতাৰ্ধ, নিস্তৰ হইয়া রহিয়াছে। উত্তরের বাতাস মাঝে মাঝে কম্পন জানিয়া দিতেছে—চারিদিকে উন্মুক্ত শস্তক্ষেত্র। রাখার পাশে পাশে কোথাও বাঁশের কোথাও জামের ঝাড় ; এ সবের দরকার তাহার মধ্য হইতে কখনও দুই একটা বাদুড় কিচমিচ করিম উঠিতেছে-কখনও দুই-একট। শিয়াল পাশ কাটাইয়া ঝোপের মধ্যে ঢুকিয় পড়িতেছে। চন্দ্র স্নান চোখে নিয়ের কুয়াশার পানে তাকাইয়া বিদায়-বেদন জানাইতেছে। এই নিগুতি রাত্রে শুধু দুইটি শীতাৰ্ত্ত ভাষাহীন প্রাণীর বোঝার পরিসমাপ্তি নাই। তাহারা চলিয়াছে—কতদূর যাইতে হইবে জানে না— নিরুদ্দেশে—অসহায়, ক্লাস্ত । ক্রমে গাড়ী নদীর ধারে আসিয়া পড়িল । নদীর নাম ‘মেচি'—বৃটিশ-ভারত ও নেপালের সীমারেখা। এদিকে বিহার প্রদেশ, অন্যদিকে মোরং । ‘মেচি’ স্বাধীনতা ও পরাধীনতার যোগসূত্র রচনা করিয়া গড়াইয়া চলিয়াছে। শীতের পাহাড়ী নদী ; স্থানে স্থানে শুষ্ক স্রোতাষেগবিক্ষিপ্ত —জল তাহার হিমশীতল। গাড়ী কতদূর তাহার শুষ্ক বক্ষদেশের পাশ দিয়া চলিল। সিক্ত বালুক ; জলের বক্ষ ঈবং আন্দোলিত হইলে যে-আকার ধারণ করে বালুর বক্ষও সেই আকার ধারণ করিয়া আছে । কোথাও অস্পষ্ট চন্দ্রালোকে আধপ্রতিফলিত বালুকণা চিকু চিকু করিয়া উঠিতেছে । ওপাবের বন দেখা যাইতেছে—কুয়াশার গাত্রাবাস পরিয়া স্তব্ধ, নিশ্চল । আকাশে তারা অগণ্য, তবে অমাবস্তার আকাশে যত দেখা যায় তত নয়। বালুতটের পাশ কাটাইম গাড়ী নদীর বুকে পড়িল । জল বেশী নয়, কোথাও হাটু, কোথাও কোমর । ওপাড়ের কাছ ঘেষিয়া শুধু কোমরজল। বালুর বুকের উপর দিয় তবুতর করিয়া জলের স্রোত চলিয়াছে ; হিমশীতল তাহার স্পর্শ ; স্পর্শমাত্র অবশ করিয়া আনে ; স্রোত অসম্ভব রকমের । জল অগভীর কিন্তু অত্যন্ত স্বচ্ছ । বালুর বুক পরিষ্কার রূপে দেখা যায়। চলিতে চলিতে সহসা গরু ফুটি দাড়াইয় গেল। বিষণ তাহার সনাতন পন্থী অনুসরণ করিয়া দেখিল তাহার পর বষ্টির দ্বারা আঘাতের পর আঘাত করিতে লাগিল, কিন্তু তথাপি বলদযুগল একান্ত অনড় অবস্থায় দাড়াইয়া রহিল। অগ্রসর হইবার জন্ত তাহারা আগ্রাণ চেষ্টা করিল সত্য, কিন্তু তাহাতে কোনো ফলোদয় হইল না । বিষণ জলে নামিয়া পড়িল । হিমশীতল জলের স্পর্শ তাহাকে আবশ করিয়া ফেলিল তথাপি হাতড়াইয়া দেখিল,