পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰাবণ - ব্ৰহ্ম প্রবাসী বাঙালী (rంత {ান স্থানে অতি সামান্য বেতনে চাকুরী করিতেন। কিন্তু মধ্যবসায় বলে ব্ৰহ্মদেশের বিশেষ বিশেষ আইনবিষয়ক রীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া এবং ততোধিক কঠিন ব্ৰহ্মভাষা শিক্ষা pরিয়া ও তৎসংহই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া আইন-ব্যবসায় আরম্ভ করেন এবং নিজ নিজ ক্ষমতাবলে অতি উচ্চস্থান মধিকার করেন। অনেক উচ্চপদস্থ রাজকৰ্ম্মচারীই এই আইনব্যবসায়ী বাঙালীদের কৃতিত্বের কথা উল্লেখ করিয়াছেন । প্তমানে রেজুন হাইকোর্টে এক জন বাঙালী বিচারপতি আছেন। পূৰ্ব্বে এই আইনব্যবসায় অবলম্বন করিতে হইলে পূৰ্ব্বোক্ত পরীক্ষাগুলিতে উত্তীর্ণ হইলেই চলিত। কিন্তু ওঁমানে বিদেশী—অর্থাৎ ভারতবাসী-ব্যবহারজীবীদের অব্যাহত তিরোধ করিবার জন্য এই নিয়ম করা হইয়াছে, যে, ব্যবসায়প্রার্থীকে আদেশের বাসিন্দারূপে ( domiciled ) পরিগণিত ইতে হইবে । ইহার জন্য কারণ দর্শাইয়া আবেদন করা আবশ্যক । চিকিৎস-বিভাগে যে-সকল বাঙালী স্বাধীনভাবে I্যবসায় করিতেছেন, তাহারা প্রায় সকলেই রেজুনে অবস্থান করেন । মফস্বলে বেশী বাঙালী চিকিৎসক এখনও গমন করেন নাই । এই সকল ব্যবসায়ক্ষেত্রে বাঙালী হিন্দুরাই অগ্রবর্তী । Iাঙালী মুসলমান ব্যবহারজীবী বা চিকিৎসকের সংখ্যা ষ্টিমেম্ব । কিন্তু অন্যান্য সাধারণ ব্যবসা ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে [সলমানরা হিন্দুদিগের অপেক্ষা অনেক বিষয়ে অগ্রবর্তী । রসুন শহরে স্বৰ্গীয় শশিভূষণ নিয়োগী মহাশয়ই একমাত্র প্রতিষ্ঠাপন্ন হিন্দুব্যবসায়ী ছিলেন । ঢাকনিবাসী স্বগীয় রচন্দ্র দত্ত মহাশয় এককালে ঠিকাদারী কাজ করিমু প্রভূত অর্থ উপার্জন করেন । তদ্ভিন্ন স্বগীয় শিবপদ সি প্রমুখ আরও অনেক বাঙালী হিন্দু ব্ৰহ্মদেশের tান স্থানে ঐ শ্রেণীর কাজ করিয়া বহু অর্থ টপ জন করেন। কিন্তু ব্যাপকভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে !ঙালী হিন্দুদিগের অপেক্ষ মুসলমানরাই বেশী অগ্রবর্তী । রজার কাজ, দপ্তরীর কাজ প্রভৃতি মুসলমানদের একচেটিয়া গরবারগুলি ছাড়াও নানারূপ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে বহু সলমান নিযুক্ত আছেন। ইরাবতী ফ্লোটিলা কোম্পানীর iাহাজের খালালী প্রায় সকলেই বাংলার মুসলমান । তম্ভিন্ন রঙ্গুনে এবং অন্তান্ত দু-তিন জায়গায় খেয়-মাঝির কাজেও ট্রগ্রাম ও পাশ্ববর্তী জিলাগুলির মুসলমানরাই প্রধানতঃ নযুক্ত আছেন। কারিগর, মিস্ত্রী প্রভৃতির কাজেও বাঙালী মুসলমানই বেশী । তম্ভিয় প্রতিবৎসর ধানকাটার সময়ে ংিলা দেশ হইতে বহু লোক, প্রধানতঃ মুসলমান, ব্ৰহ্মদেশে মিন করিয়া থাকেন । তাহারা ষৎসরের মধ্যে কয়েক সি মাত্র ঐ দেশে অবস্থান করিয়া প্রচুর অর্থ উপার্জনাস্তে দশে প্রত্যাবৰ্ত্তন করেন। এইরূপ কাধের জন্য অবঞ্চ y=ణశి -স্থানেও মান্দ্রাজ ও উড়িষ্যা হইতেও অনেক লোক গমন করিয়া থাকেন । পুৰ্ব্বে দুধ-বিক্রীর কাজ প্রধানতঃ বাঙালীদের হাতেহ ছিল। এই সকল দুগ্ধব্যবসায়ী যে সকলেই জাতিতে গোপ ছিলেন, তাহা নহে । কিন্তু ক্রমে এই ব্যবসায়টি বাঙালীদের হস্ত হইতে হিন্দুস্থানীদের হস্তে গিয়া পড়িয়াছে। তবে এক বিষয়ে বাঙালী হিন্দুরা এখনও ব্ৰহ্মদেশের প্রায় সৰ্ব্বত্রই বিশেষ তৎপরতার সহিত কারবার চালাইতেছেন—তাহ নাপিতের ব্যবসায় । ব্রহ্মদেশের প্রায় সৰ্ব্বত্রই যথেষ্টসংখ্যক বাঙালী নাপিত দেখিতে পাওয়া যায় । রেসুন শহরে বাঙালী নাপিতরাই কুলীন । মফস্বলের অনেক স্থলে তাহার চুল কাটিবার দোকান করিয়া প্রভূত অর্থ উপার্জন করে । এই সকল ক্ষৌরকার প্রধানতঃ চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলারই অধিবাসী এবং সকলেই জাতিতে পরামানিক নহে । মফস্বলের অনেক স্থলে নিম্ন.শ্রণীর বাঙালীরা— হিন্দু ও মুসলমান– কৃষিকাৰ্য্য করিয়৷ বিশেষ সচ্ছলভার সহিত বসবাস করিতেছেন । ইহার একরূপ ব্ৰহ্মদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হইয় পড়িয়াছেন । ইহাদের মধ্যেও হিন্দু অপেক্ষ মুসলমানদের সংখ্যাই বেশী। হিন্দু কৃষিজীবীর সাধারণতঃ নিম্নব্রহ্মের ইরাবতী নদীর ব-দ্বীপে কয়েকটি জেলাভেই বাস করে। মুসলমানের বহুদূরবর্তী পাৰ্ব্বত্য বসতি স্থাপন করিয়াছে । এই সকল কৃষক প্রধানতঃ চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ত্রিপুর এবং ময়মনসিং জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমার অধিবাসী। মুসলমানদিগের অনেকেরই ব্ৰহ্মদেশীয় নারীর সহিত বিবাহ হইয়াছে । গত ১৯৩১ খৃষ্টাব্দের লোকগণনা অনুসারে ব্রহ্মদেশে ৩৭৮,০০০ জন বাঙালী ছিল । এই লোক-গণনা ব্যাপারে একটি অদ্ভুত বিষয় লক্ষ্য করিবার আছে। বাঙালী ভিন্ন চট্টগ্রামবাসী ( Chittagonians ) বলিয়া একটি ভিন্ন শ্রেণীর বরাবরই উল্লেখ করা হইয়া থাকে । উপরে যে সংখ্যা দেওয়া হইল তাহ বঙ্গভাষাভাষীর সংখ্যা । কিন্তু ঐ লোকগণনার বিভিন্ন স্থানে হিসাবে বাঙালী ও চট্টগ্রামবাসী বলিয়া দুইটি পৃথক শ্রেণীর উল্লেখ করা হইয়াছে । ইহার কারণ অনুসন্ধান করা আবশ্বক এবং ভবিষ্যতে যাহাতে আর এইরূপ অদ্ভুত শ্রেণী-বিভাগ না হয় তাহার জন্য বিশেষ ভাবে চেষ্টা করা আবশ্বক। এই বিবয়ে চট্টগ্রামবাসীদিগেরই প্রধান ভাবে চেষ্টা করিতে হইবে। তবে এই সংপ্রবে একটি কথা বলা অবাস্তর হইবে না। ব্রহ্মদেশের সর্বজ্ঞই বাঙালী ভিন্ন অন্ত সম্প্রদায়ের লোকেরা চট্টগ্রামী বলিয়া একটি বিশেষ শ্রেণী বা সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব স্বীকার করিয়া থাকে। চট্টগ্রামীরা যে অন্য বাঙালী হইতে বিভিন্ন সম্প্রদায় হইতে পারে না, তাহা বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াও সাফল্যলাভে সমর্থ झझे नाहे ।