পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন ভারতে বাসগৃহের দিওঁ নিৰ্বাচন ও সংস্থাপন ব্যবস্থা অধ্যাপক শ্ৰীপ্রসন্নকুমার আচাৰ্য্য, এম-এ, পিএইচ-ডি (লাইডেন), ডি-লিট (লণ্ডন ), আই-ই-এস্ কৌটলীয় অর্থশাস্ত্রের গ্রন্থকর্তা চাণক্যের নামে বাসগৃহের পারিপাশ্বিক অবস্থা সম্বন্ধে একটি প্রয়োজনীয় কথা প্রচলিত আছে । ধনী, শ্রোত্রিয়, রাজা, নদী ও বৈদ্য যে-স্থানে জুলভ সে-স্থানে বাসগৃহ নিৰ্ম্মাণ করা অমুচিত । সেরূপ স্থান যে লোকবসতির অনুপযুক্ত তাহা বিশেব করিয়া বুঝাইবার প্রয়োজন নাই। বস্তুতঃ গ্রাম বা নগর এরূপ স্থানেই প্রায় সৰ্ব্বত্র ও সৰ্ব্বকালে নিৰ্ম্মিত হইয়াছে যেখানে এই পঞ্চবিধ সুবিধা নূ্যনাধিক পরিমাণে বর্তমান ছিল । ধনী লোকের অভাবে গ্রাম বা নগর সমৃদ্ধিসম্পন্ন হইতে পারে না। ধৰ্ম্মযাজক না থাকিলে লোকের ধৰ্ম্মাচরণ অসম্ভব হয়। রাজা বা রাজপ্রতিনিধি না থাকিলে লোকের শাস্তিরক্ষাদির ব্যবস্থা হইতে পারে না। নদীর দ্বারা পানীয় জলের ব্যবস্থা, ভূমির উৰ্ব্বরতা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও যাতায়াতের সুবিধা বুঝিতে হইবে । নদীমাতৃক দেশ বা স্থান এই সকল কারণেই সভ্য লোক মাত্রেরই অভীমিত । বৈদ্য বা চিকিৎসকের বর্তমানে ঔষধপথ্যাদি স্বারা রোগাদির উপশম ও স্বাস্থ্যরক্ষার ব্যবস্থা বুঝিতে হইষে । মৌর্য-বংশের সংস্থাপক মহারাজ চন্দ্রগুপ্তের প্রধান মন্ত্রী ও দক্ষিণ-হস্ত রূপে চাণক্য পণ্ডিত পরিচিত। মৌর্য্য-সাম্রাজ্য ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক ঘটনা যাহা মহাবীর আলেকজাণ্ডার ও সেলেউকাস নিকটোর প্রভূতির বিবরণ দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু চাণক্য পশুিতই যে সৰ্ব্বপ্রথম ভারতবর্ষে গ্রাম নগর সংস্থাপন করিয়াছিলেন তাহা নহে। বৈদিক যুগেও সমৃদ্ধ গ্রাম নগর ছিল তাহারও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে। তাহারও সহস্রাধিক বৎসর পূর্বে সিন্ধুদেশের মহেঞ্জোদাড়োতে এবং পঞ্জাবের হরপ্পা নামক স্থানে প্রসিদ্ধ গ্রাম নগরের ংসাবশেষ আবিষ্কৃত হইয়াছে। সুতরাং এই বিষয়ে বৌদ্ধ যুগ বা রামায়ণ মহাভারতের কাল বা পৌরাণিক কালের উল্লেখ করা নিম্প্রয়োজন । বাসস্থান-বিষয়ে অর্থশাস্ত্রের ব্যবস্থা হইতেও বিশদ ও বিস্তারিত বিবরণ মানসারাদি শিল্পশাস্ত্রের মূলগ্রন্থে দেখিতে পাওয়া যায়। তাহ। এস্থলে আলোচ্য বিষয় নহে। এই পঞ্চবিধ সুবিধা লোকবসতির পক্ষে অপরিহার্য্য। বিশেষ প্রেয়োজন বশত: অন্ত পারিপার্থিক অবস্থারও বিবেচনা করা হইত। বৌদ্ধগ্রন্থ চুম্ববগের (৬, ৪, ৮ ) ব্যবস্থা অনুসারে জায়াম বা বিশ্রামাগার এমন স্থানে নির্শিত হইত যাহা কোলাহলপূর্ণনগর হইতে বেশী দূরে ও নহে, বেশী নিকটেও মহে । তাহ নগর নগরীর এন্ধপ উপকণ্ঠে হওয়া ছাই ধেখালে সহজে যাতায়াতের সুবিধা আছে অথচ দিনের বেলাম জনসমূহপূর্ণ নহে এবং রাত্রিতে লোকের কোলাহলে শান্তি ও বিশ্রামের ব্যাঘাত হয় না, অথবা নির্জনতাহেতু কোন ভয়ের কারণ থাকে না । চুল্লবগ (৬, ৪, ১০ ) ও মহাবগের (৩, ৫, ৯ ) বর্ণনা অনুসারে সাধারণ বাসগৃহে এবং উপাসকের আশ্রমাগারে নানা প্রকারের প্রকোষ্ঠ থাকিত। সাধারণ বাসগৃহে প্রয়োজনানুরূপ শক্ষনাগার, বিশ্রামাগার, ভোজনাগার, অগ্নিস্থানযুক্ত আস্থানাগার, দ্রব্যসংস্থাপনাগার, স্বানাগার, বস্ত্রপরিবর্তনগৃহ, পুরীষগৃহ, কূপগৃহ, পুষ্করিণী ও খোলা মওপ থাকা প্রয়োজন । তথাকথিত আশ্রমাগারেও যথাযথ শয়নকক্ষ, অশ্বশাল, শিখরযুক্ত গৃহ, ভূগর্ভস্থ গৃহ, উপাসন-মন্দির, দ্রব্যাগার, ভোজনাগার, বিপণি, উচ্চকক্ষ, পাকগুহ, উত্তাপ প্রাপ্তির জন্য অগ্নিগৃহ, পুরীষগুহ, ভ্রমণাগার, কূপগুহ, শীতোষ্ণ স্বানের জন্য যন্ত্ৰগৃহ, পদ্মযুক্ত পুষ্করিণী ও মণ্ডপাদি থাকিত। শিল্পণাস্ত্র, পৌরাণ এবং আগমাদি শাস্ত্র হইতে কোন প্রয়োজনের কোন কোন গৃহ বাস্তুভিটার কোন কোন স্থানে থাকা প্রয়োজন তাহার বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়। মধ্যবিত্ত গৃহস্থপরিবারের জন্ত চতুঃসাল ষোড়শকক্ষযুক্ত গৃহ অৰ্ব্বাচীন কালের বাস্তুশাস্ত্রের যুগে নির্দিষ্ট হইয়াছে। বাস্তুতত্ত্ব ( পৃ. ১ ) নামক এক ক্ষুদ্র পুস্তিক কোন প্রাচীন গ্রন্থ হইতে এই যোড়শ কক্ষের সংস্থাপন বিশদভাবে বর্ণনা করিয়াছে। এই ব্যবস্থা অনুসারে ঈশান বা উত্তরপূৰ্ব্ব কোণে (১) দেবগৃহ ; পূৰ্ব্বে (২) সৰ্ব্ববস্তু গৃহ, (৩) স্নানগৃহ ( ৪ ) দধিমন্থন গৃহ ; অগ্নি বা দক্ষিণ-পূৰ্ব্ব কোণে ( ৫ ) রন্ধনগৃহ ; দক্ষিণে ( ৬ ) বৃতসগৃহ, ( ৭ ) শৈলস্থূহ ও (৮) পুরীষগৃহ ; নৈঋত বা দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ( a ) শাস্ত্রগুহ ; পশ্চিমে ( ১০ ) বিদ্যাভ্যাস-গৃহ, ( ১১ ) ভোজনগৃহ ও ( ১২ ) রোদনগুহ ; বায়ু বা পশ্চিম-উত্তর.কোণে ( -৩ ৷ ধান্যগুহ ; উত্তরে ( ১৪ ) সংভোগ-গৃহ, ( ১৫ ) দ্রব্যগৃহ ও ( ১৬ ) ঔষধগৃহ থাকিবে । গৃহবাস্তপ্রদীপ নামক অপর পুস্তিকাও সংক্ষেপে এই ষোড়শকক্ষযুক্ত বাস্তুগৃহের বর্ণনা করিয়াছে । * * এই বিবরণ হইতে ইহা সহজেই বুঝা যাইতেছে যে, এই প্রণালীর গৃহ উত্তরমুখী, কেননা পূৰ্ব্ব-দক্ষিণ ও পুৰ্ব্বে যে

  • বিস্তারিত বিবরণের জঙ্ক লেখকের ‘শিল্পশাস্ত্রীয় অভিধান’ পূ. ৬১২-৬১৪ এৰ মানসার শিল্পশাস্ত্রের মূল পৃ. ৩২-৪৬, ২৭৪-২৭৯ এক श्ब्ौ खङ्कबीरः शृ. ७०-av, s१७-s७) झष्ठत्रा ।