পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্রনাথের পত্র Butterton Vicarage, Newcastle, Staffordshire. હૈં কল্যাণীয়েষ্ণু, লগুনের গোলমালের পর কিছুদিনের জন্তে পাড়াগায়ে একজন পাদ্রির বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করেচি । জায়গাটি সুন্দর। চারিদিকে পৃথিবীর হৃদয় যেন একেবারে স্যামলতায় উচ্ছ,সিত হয়ে উঠেচে—এমন ঘন সবুজ আমি কখনো দেখিনি—এ যেন অতলম্পর্শ বর্ণের গভীরতা—চোখ যেন ডুবে গিয়ে কোথাও আর থষ্ট পায় না । যাদের বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করেচি র্তার মানুষ যেমন ভালো তেমনই তাদের গৃহস্থালীটি মধুর—চারিদিকের লোকের সঙ্গে এবং প্রকৃতির সঙ্গে তাদের সম্বন্ধটি কল্য,ণে ভর । বস্তু থেকে আরম্ভ করে পশু এবং মানুষ পর্য্যস্ত কোথাও তাদের নিরলস যত্বের লেশমাত্র বিচ্ছেদ নেই । এই যে নিজের জীবনকে এবং জীবনের চারিদিককে একান্ত সমাদরের সঙ্গে গ্রহণ করা এটা আমার ভারি ভাল লাগে । কারণ পৃথিবীতে ছোট বড় যারক্ট সঙ্গে আমাদের সম্বন্ধ ঘটে তার কোনোটিকেই উপেক্ষা করা নিজেরই আত্মাকে উপেক্ষা করা, নিজের শক্তিকে অপমান করা । নিজের প্রতি অশ্রদ্ধার দ্বারাই আমরা পৃথিবীর সর্বত্র অশ্রদ্ধা বিস্তার ক’রে সমস্তকে শ্ৰীহীন করে তুলি এবং নিজেকে ভোলাবার জন্যে মনে করি এটাই আধ্যাত্মিকতার লক্ষণ । আমাদের বোলপুর আশ্রমে ধরে বাহিরে যে অবত্ব পরিদৃশুমান হয়ে আছে, তার দ্বারা আমাদের যে গভীর একটা তামসিকতা প্রকাশ পাচ্চে সে কথা মনে পড়লে বার বার আমার নিজের প্রতি ধিকার জন্মে— আবি যখন আমাদের জীবনের মধ্যে আবিভূত হবেন তখন আমাদের ঘরদুয়ার আসন বসন সমস্তই তার সংবাদ জানাতে থাকবে—কোথাও কিছুমাত্র কুত্রত থাকবে না । রোটেনষ্টাইনের যে একটি চিঠি পেয়েছি সেটি এই সঙ্গে পাঠাই। এর থেকে বুঝতে পারবে আমার লেখাগুলিকে এর সাহিত্যের বিষয় করে রাখেন নি, জীবনের বিষয় করে গ্রহণ করেছেন—সেইটেই আমার পক্ষে সকলের চেয়ে আনন্দের কারণ হয়ে উঠেচে । চিঠিখানি হারিয়ো না $సె=ళలి যেমন আদরের সঙ্গে তিনি এটি লিখেছেন তেমনি আদরের সঙ্গে আমি এটিকে রক্ষা করতে ইচ্ছে করি * ইতি ৬ই আগষ্ট ১৯১২ তোমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কল্যাণীয়েষ্ণু, অজিত, মনে করেছিলুম এ-সপ্তাহে তোমাদের কিছু লিথে পাঠাব কিন্তু এখানকার লোকের ভিড়ের মাঝখানে কলম চালানে দুঃসাধ্য । সময়ের অভাব ব’লে নয় কিন্তু মনট বেশ স্থির হয়ে বলতে চাচ্চে না । বত্রিশ সিংহাসনে না চড়ে আমি সামান্য কিছুও লিখতে পারিনে—সেখন থেকে নামলেই আমার রাখালী ধর পড়ে । আমার ভিতরকার একটা মন আছে তারই হাতে যখন সম্পূর্ণ হাল ছেড়ে দিয়ে বসি তখনই আমার লেখা এগোয়—আমার বাইরেকার মানুষটা একেবারে কোন কাজের নয়। সে কিছু বোঝেও না, কিছু বলতেও পারে না—সে একটা অশিক্ষিত অক্ষম অজ্ঞ মানুষ—সে সামান্য বা কিছু শিখেচে সে কেবলমাত্র সেই অন্য মানুষটার সঙ্গে থেকে । সেই জন্যই কে{নো কাজের মত কাজ করতে গেলে আমার এত অবকাশের দরকার হয় । আমি এক এক বার ভাবি কবিমাত্রকেই কি এমনি জুড়ি হাকিয়ে চলতে হয়—ন, এই সার্কাসের কসরৎ কেবল আমারই ভাগে ঘটেচে ? মোটের উপর দেখা যায় সব দেবতারই বাহনগুলো জন্তু—কারে বা গরু, কারে বা মেষ, কারে বা মেষ-আমার ভিতরকার দেবতারও বাহনটা একটা চতুপদ বিশেষ—সে কেবল গু"তো থেয়ে চলে এবং শব্দ করে গর্জন করে—ন! পারে বুঝতে, না পারে বোঝাতে । আমার মনে হয় অক্সিজেনের সঙ্গে নাইট্রোজেনের মত বোধের সঙ্গে অবোধতার, দেবতার সঙ্গে পশুর জুড়ি মেলানোয় প্রয়োজন আছে—ওতে আক্ষেপ করবার কারণ নেই। দুঃখের বিষয় দেবতার দর্শন পেতে সাধনার দরকার হয় আর বাহনটা আপনি-ই চার পা তুলে দেখা দেয়। ইতি ১৪ই আষাঢ় ১৩৩৯ তোমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  • চিঠিখালি কোথাও হয়ত রক্ষিত আছে কিন্তু আপাতত অজ্ঞাতदcम ! झूर्वेोट्यनाथ

אש