পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আকাঙ্ক্ষা করিয়াছিলেন । বেচার স্বামী বিবির আঁচলে তিন তালাক বধিয়া দিয়া মনের দুঃখে বিন্ধ্যাচল পার হইয়া গেল। সামাজিক নিন্দ ও অপবাদের ভয়ে শেখজী নীলবর্ণ শৃগালের স্তায় অন্তান্ত লোকেরও নাক-কান কাটাইবার জন্ত বাদশাকে পরামর্শ দিয়াছিলেন যেন তিনি দিল্লীতেও নাগরিকদিগের সহিত বিবাহসম্বন্ধ স্থাপন করেন । একদিন দিল্লীর বাহিরে বেগম-সাহেবার মাদ্রাসার কাছে বেড়াইবার সময় আকবর গুপ্তঘাতকের হাত হইতে * ভাগাক্রমে রক্ষা পাইয়াছিলেন। অবস্থা বুঝির তিনি সেদিন হইতে বদখেয়াল ছাড়িলেন । আকবর নাকি উহ্যর পীর সসীম চিশতীর অন্দরমহলে সরাসরি ঢুকিয়া পড়িতেন । ইহাতে শেখজীর পুত্রের বাদশার কাছে নালিশ করিয়াছিল, বাদশ এভাবে যাতায়াত করতে স্ত্রীরা তাহদের প্রতি উদাসীন হইয়াছে। কিন্তু একবার কোন ব্যক্তি চুরি করিয়াছিল বলিয়া দ্বিতীয় বার তাহার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ হইলে যদি বিনাবিচারে সোজা তাঙ্গকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তবে আইনের মর্যাদ। রক্ষ হয় না । পাকা ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ মীনাবাজার সম্পর্কে মৌনাবলম্বন তুরিয়া আকবরের প্রতি স্বীকার ন করুন, অন্ততঃ টডের মত অবিচার করেন নাই । ঘে-সময় আকবর দীন-ই-ইলাহী ও নওরোজ উৎসব প্রচার করেন তখন তাহার ধৰ্ম্মে মতি হইয়াছিল, বৎসরের পরিমাপে তিনি তখন বিগতযৌবন, সুতরাং শেষবয়সে তিনি সুন্দরী ধরিবার জন্ত মীনাবাজারের মত যে একটি বাদশাহী ফাদ পাতিয়াছিলেন, এ-কথা সহজে বিশ্বাস হয় না। তবে অবশ্য রাজচরিত্র স্ত্রীচরিত্রের স্তায় ছুঞ্জেয় । বয়সের অজুহাত রাজা-বাদশার পক্ষে থাটে না ; কেননা কালিদাস বলিয়াছেন, “বিভেশাণাং ন খলু বয়ঃ যৌবনাদন্তদস্তি ।” , আকবর বাদশার মীনাবাজার আগ্র কিংবা ফতেপুরসিক্রির বাদশাহী মহলের কোন অংশে বসিত, ইহ সাব্যস্ত করিতে বাওয়া যে কথা, গড়মাদারণের মাঠে কোন ভগ্ন শিব-মন্দিরে জগৎসিংহের সহিত তিলোত্তমার pঞ্জ প্রবাসী স্ট্র

  • Lowe, ii. 59-60.

S983 প্রথম সাক্ষৎ হইয়াছিল তাহ নির্ণয় করার চেষ্টাও সেইরূপ । নওরোজ সম্বন্ধে সমসাময়িক ইতিহাসে যাহা পাওয়া যায় তাহতে আকবরের চরিত্রের প্রতি কোন ইঙ্গিত নাই । আকবরের কুৎসা-রটনায় পঞ্চমুখ মোল্লা বদায়ুনীও টড-বর্ণিত খুশরোজের ব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরব ; ভয়ে নয়, সত্যের খাতিরে । এইবার নওরোজ অম্বষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আলোচনা করিব । সম্রাট আকবর ও আবুল-ফজল প্রমুখ সংস্কারপন্থী মুসলমানগণের স্বতঃসিদ্ধ ধারণ ছিল, হজরত রহুল-আল্লার প্রতিষ্ঠিত ইসলাম ধৰ্ম্মের পরমায়ু হাজার বৎসর পূর্ণ হইলেই, হয় উহা বাতিল হইবে, না-হয় যুগানুযায়ী নুতন রূপ ধারণ করিবে । কোরাণ-শরীফ অবতীর্ণ [ নাজেল ] হওয়ার তারিখ হইতে এই এক হাজার বৎসর শেষ হইয়াছিল ৯৯০ হিজরীতে । ঐ বৎসরেই নব ঘুগের ও নব ধৰ্ম্মের “জগৎগুরু” আকবর বাদশা তাহার দীন-ই-ইলাহী প্রচার করেন । প্রাকৃতজনের পক্ষে পরব্রহ্ম বা অল-হকের উপাসন ও উপলব্ধি প্রায় অসম্ভব। এজন্ত তিনি তেজোত্রহ্মের প্রতীক সূৰ্য্য ও অগ্নির উপাসনাই দীন-ইইলাহীর বহিরঙ্গ বা কৰ্ম্মকাও রূপে প্রবর্তিত করিলেন। দীন-ই-ইলাহী বস্তুতপক্ষে প্রাচ্যের ধৰ্ম্মে ও সমাজে সহস্র বৎসরের বদ্ধমুল সেমেটিক প্রাধান্তের বিরুদ্ধে সনাতন আর্য ও ইরাণীয় সভ্যতার প্রথম প্রতিক্রিয়া--যাহ নুতন মুক্তিতে পারস্ত ও তুরস্কে সম্প্রতি দেখা দিয়াছে। ৯৯০ হিজরীর পরে ইল্লাম হিন্দুস্থানের এফমাত্র রাজকীয় ধৰ্ম্ম রহিল না । ইহার সঙ্গে ইন্‌লামী চান্দ্রমাস, হিজরী সাল রাজানুশাসনে অপ্রচলিত হইয়া গেল । ইহার পরিবর্তে আসিল সৌর মাস, ইলাহি সাল এবং দুই মুসলমানী ঈদের পরিবর্তে প্রাচীন পারসোর বার মাসের তের ঈদ । মেঘরাশিতে স্বর্য্যের সংক্রমণের দিন ছিল ইলাহি বৎসরের নওরোজ বা New Year's Day. নওরোজ হইতে আরম্ভ হইয়। উনিশ দিন পর্য্যস্ত সাম্রাজ্যে সাৰ্ব্বজনীন মখণ্ড মহোৎসব অনুষ্ঠিত হইত। প্রথম মাসের প্রথম দিনে নওরোজ এবং উনিশ । তারিখেই—যেদিন দিবারাfত্র