পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ এতদিন পরে খালসিধী আলিয় তাহারই সুখদুঃখের সাণী হইবে, মনের কোণে সঞ্চিত যত কথা তাহার কানে ঢালিয়া দিয়া কি আননো জুই জনে তাহার রসউপভোগ করিবে ভাকিয়৷ উৰ্ম্মিলার সঙ্গীহীন মন আপনি হাসিয় উঠতেছিল। কিন্তু মনের একটা কোণে অশ্র সে জমাট হইয়া আছে আজ দুই মাস ধরিয়া । সীকে দেখিয় সে-অশ্র কি উৰ্ম্মিল সংবরণ করিতে পরিবে ? সাওতাল পরগণার জলহীন বালুতটে শৈশবে যখন তা গর। দুই সীতে খেলা করিত, শুষ্ক বালুময় নদীগর্ভ পাৱ হইয়। ওপারে শালবন, ধানক্ষেত ও কাকুরে চিপি পাহাড়ে প্রজাপতির মত লঘু মন লইয়া চঞ্চল চরণে চুটিয়া বেড়াইত, তখনকার অনাবিল ভালবাসা লোকে বলে সংসারে টিকে না । কিন্তু দৈবগুণে কিশোর বয়সে সে যখন বালাসী জয়ন্তীরই দেবরের বধু হইয়া আসিয়৷ আবার এক-বাড়িতেই উঠিল তখনও সর্থীতে সর্থীতে গলাগলি ভাব ও পাৰ্ব্বত ঝরণার মত উচ্ছল কলহাসি কিছুমাত্র কমিল না । নব্যস্বাদিত প্রণয়ের গল্প তাহদের সথ্যের ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত করিয়া তুলিল। দু-জনে দু-জনকে সাজাইয়া তৃপ্তি পাইত না, পরদিন প্রসাধনের প্রশংসা শুনিয়া শুনিয়া পুরাতন হইতে চাহিত না । ভাস্কর লক্ষেী চলিয় গেলেন চাকরি লইয়া, কাজেই জয়ন্তীকও উম্মিলার আশা ছাড়িতে হইল । তারপর জয়ন্তীর ছুটি ছেলেমেয়ে কেবি আর ছবি, উৰ্ম্মিলার দুটি ছেলে রুণু ও দীক্ষ হইয়াছে। ছেলেমেয়ে ও সংসারের ঝঞ্চাটে সর্থীদের প্রত্যহ দীর্ঘ পত্রবিনিময় ক্রমে মাসে একথানায় আলিয়া দাড়াইয়াছে, মান অভিমান ভালবাসার গল্পের স্থান জুড়িয়ছে ছেলেমেয়ের সন্ধি কাশি ছাচি । দীর্ঘ আদর্শনের জন্তু বিলাপও কখন অকস্মাৎ থামিয়া গিয়াছে ; কিন্তু উৰ্ম্মিল মনের ভিতর চাহিয়া দেখিল ভালবাসার উচ্ছস না থাকিলেও টান তেমনি সজোর আছে । আজ এতদিন পরে সর্থী আলিবে, কিন্তু এ যে তাহর সে স্বামিলোহাগিনী গরবিনী সর্থী নয়, এ সৰ্ব্বত্যাগিনী ভিখারিণী। ই মাস হইল তাহার পার্থিব জীবনের শ্রেষ্ঠ °श्थ cन्तष श्रेय ब्रिएक्ल, अश्लङ्ग शब्रटग्न अख् ठाझोरक्क नौोई «as" প্রতীক্ষার অবসান হইবে । উৰ্ম্মিল। কিন্তু দুঃখের ভিতরেও সুখের মধুর স্পর্শটুকুর আশা ছাড়িতে পারিতেছে না । তাহাদের ভালবাসা ত এক দিনের লয় । এই সম্পর্ক হইবার পূৰ্ব্বে তাহারা দু-জনে ত শুধু পরস্পরের ছিল । জীবনে এতবড় রূপান্তরের পরেও জয়ন্তীর কঠোর ব্রহ্মচারিণী মূৰ্ত্তির অন্তরালে শৈশবের সেই স্নেহ-উৎস আবার খুজিয়ী পাইবে উৰ্ম্মিলার মন বার-বার এই কথা বলিতেছিল। পুরানো একটা বাগানের মাঝখানে ছোট দুইতলা বাড়ি । একতলায় রান্ন ভ*াড়ার চাকর-বাকর ইত্যাদির স্থান সংকুলান করিয়া বাকী আছে শুধু একটি কাজচলাগোছের বৈঠকখানা । উপরের তিনখানি ঘরেই সংসারের আর সমস্ত দাবি মিটাইতে হয় । সাত বৎসর আগে পূৰ্ব্ব-দক্ষিণ দুই দিক খোলা ষে-ঘরখানিতে বড়বে। থাকিতেন, তিনি বিদেশে চলিয়। যাইবার পরও উৰ্ম্মিল! তাহা দখল করে নাই, সে আপনার পশ্চিম দিকের ঘরেই এত কাল ছিল । তবে সংসার বাড়িয়াছে, কাজেই ছেলেদের দুধের ভুলী, স্নানের গামলা, ষ্টোভ, ঠেলাগাড়ী, দোলন ইত্যাদি একে একে সেই ঘরে ভীড় করিয়! টুকিয়া পড়িয়াছে । মাঝের খরখানা ভিতর হইতে বন্ধ হয় ন; ; কাজেই তাহ উৰ্ম্মিলা পড়ির মেয়েদের বসিবার জন্ত সাজাইয়া রাখিয়ছিল । নিজের হাতের গদি, তাকিয়া, পদা, ঢাকা ইত্যাদিতে তাহার সৌন্দৰ্য্য যথাসম্ভব বাড়াইবার চেষ্টায় গৃহকত্রীর বিন্দুমাত্র ক্রটি ছিল না । অতি-প্রয়োজনীয় কোনো নিতান্ত গদ্যময় জিনিষকে সে সহজে এ-ঘরের ত্রিসীমানায় আসিতে দিত না । এমন কি মেহগনির বুক-কেসটাও সে পাশের. ঘরেই রাথিয় দিয়াছিল । কিন্তু জয়ন্তী যে তাহার পূর্ব নিবাসে ফিরিয়া আসিতেছে এখন আর অন্ত কথা ভাবিলে, চলিবে না । পরদিন সকালেই ভোলা ও মোক্ষদা মিলিয়া ঘরের জিনিষপত্র সরাইতে লাগিয়া গেলঃ শমীন্দ্র আপিসে যাইবার আগে গলার টাইটা বধিতে বাধিতে বলিল— “পুৰ দিকের ঘরখানা বদলে নিলে হ’ত ন ? দিনরাত্তির এদিক বন্ধ থাকবে, পুবের আলে। হাওয়া আর তোমার কপালে জুটবে না ।” مياه