পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ ঠাকুরপে কোথায় গেল ? তোরা আজ ঘুমুবি না ? কি একটা জাওয়াজ পেয়ে আমি ছুটে এলাম।” উৰ্ম্মিল মুখ তুলিয় একবার শুভদৃষ্টিত জয়ন্তীর মুখের দিকে তাক ইল । জদন্তী বলিল, “কি হয়েছে ? বলুবি না ?” উৰ্ম্মিলর দৃষ্টি হঠাৎ কঠোর হইয় উঠল, সে বলিল--- “নিজের দিক তাকিয়ে বুঝতে পরছ না, কি হয়েছে ? কেন যে ও-বেশ ছেড়ে বেরোবার কথাও ভুলে গিয়েছ ত,কি আমি জানি না ? তোমা দর সব কথা আমি শুনেছি। অামার কাছে আর ও মুখ দেখিও না ।” উৰ্ম্মিল কঁদিয়া ফেলিল। জয়ন্তীও চোখের জল সম্বরণ করিতে পারিল না । সে কি বলিত গিয়া চুপ করিয়া গেল। উৰ্ম্মিল বলিল, “তোমাকে প্রাণের চেয়ে BBBBBBB BB BBS BB B BBSBB BBBB BB ত কাতে না পেরে ছুটে চুড়ি পরিয়ে দিতে কি চুলটা বেঁধে দিতে নেতাম ব’লে এমসি ক’রে তার শোধ নিচ্ছ ? চিরকালের সম্বন্ধকে এমনি ক’রে শো করন্থ ?” সাশ্রনয়নে জয়ন্তী বলিল,—“উৰ্ম্মি, তোর মুথে একথা আমায় শুষ্কৃত হ’ল শেষে ! তেকে আমি এর উত্তর কি দেব, ভগবান করুন, এ-কথা তোকে যেন কথনও বুঝতে ন হয় ।” পরদিন অনেক বেলায় ঘরের বাহির হইয়। উৰ্ম্মিল! দেখিল জয়ন্তী বাড়ি নাই । বাপের বাড়ি হইতে জয়ন্তী উৰ্ম্মিলাকে চিঠি লিখিয়াছে-- “উৰ্ম্মি, তেকে যদি প্রথম দিল থেকে মার পেটের বোনের মত লা দেখতাম, সন্তানের মত না ভালবাসত{ম, তাহলে আজ আর তেকে এ-কয় ছত্র লিখতে পারতাম না । তোকে আমার বড় দুঃখের দিলে বহুদিন পরে পেয়ে বুকট জুড়িয়ে গিয়েছিল যাকে হারিয়ে আমি পৃথিবীটাকে সৃষ্টর বাইরে বিধাতার একটা উপহাস মনে করতাম, তাকে ফিরে পাবার পথ তুই আমাকে দেধিয়ে দিয়েছিলি, কিন্তু তুই জাতিস না। এ বিধবার তপস্তার পথ নয়, বললে কেউ বিশ্বসও হয়ত করবে না । কিন্তু তুই করবি মনে ক’রে তোকেই একদিন বলব ভেবে রেখেছিলাম । কিন্তু আমার কপাল মন্দ, সে সুখের বলা আজ আমার অপমানের কৈফিয়ৎ হয়ে দাড়াল । বিধবার সজ্জণ - హి স্বামী ত চলে গেলেন । তারপর যখন হিতৈরি । সবাই মিলে আমার পিথির সি দুর মুছে, শাড়ীর পাড় ছিড়ে, হাতের চুড়ি ভেঙে আমাকে ভিখারী সাজিয়ে ছেড় দিলে তখন আমার জ্ঞান ছিল না । কিন্তু চৈতন্ত হ’ল ক’দি ন পরে নিজের দিক তাকিয়ে মনে হ’ল এ ত আমি নয়। কোথায় গেল সেই জয়ন্তী যার প্রতিটি শাড়ীর পাড়ে তার স্বামীর রুচি আ*াক ছিল, যার প্রতে ক অলঙ্কার ছিল স্বামীর জমাট ভালবাস, যার সিথির সি দুর কতদিন স্বামী স্বহস্তে এ-কে দিয়েছে ? সে মরে গেছে হারিয়ে গেছে । সঙ্গে সঙ্গে তার সে স্বামী যে একবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে সংসার থেকে মুছে গেছে । তোর কাছে নথন এলাম তখন পাথর হয়ে গিয়েছি । কিন্তু তুই ত পাথরে প্রাণ জাগিয়ে দিলি । যে-চুলের গোছা মাস-শাশুড়ী মুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন তাকে তুই আবার যত্ন ক’রে বেধে ফুল দিয়ে দিয়েছিলি মনে আছে ? মনে প’ড়ে গেল দু-মাস আগে এলোথে*াপীয় ফুল কে দিয়ে দিয়েছিল। আবার যেন ঠিক তোর পাশে এসে দাড়িয়ে সে-ই হেসে উঠল । আচারে নিয়মে নিষেধে যাকে একেবারে হারিয়ে ফেলেছিলাম, ঐ দুটি ফুলের স্মৃতির মধ্যে সে জীবস্ত হয়ে উঠল । আমার এ-হাত থানাকে আমি ত চিনতেই পারতাম না । তুই তোর সোনার চুড়ি পরিয়ে চিনিয়ে দিলি । এই হাতেই বারো বৎসর স্বামীর সে tা করছি । চুড়ি দু-গাছ পরে তারা যেন খুজে আনলে তাদের এত কালের পরিচিত বন্ধুকে । ফুলের সঙ্গে যে দেখা দিয়েছিল ক্রমে সে প্রত্যহের সার্থী হয়ে উঠল, আমার সকল অপূর্ণ সাং-আহলাদ, আমর সকল কল্পনার সুখ যাক বেষ্টন ক’রে পুর্ণ হয়ে উঠতে চেয়েছিল একদিন, তাকেই ফিরে আবার তারা পুর্ণ হয়ে উঠল এবার। আমার সাজে সজ্জায় প্রসাধনে সেই যে আমার শরীর মন পুর্ণ করে জীবন্ত হয়ে উঠেছিল তাকি তুই বিশ্বাস করযি ? স্বামীকে ত ভালবাসিল, ভেবে দেখ, দিকি, তোর কোন সাধ-জাহাদ, কোন সুখ-সৌভাগটা তাকে ঘিরে নেই ? সবেতেই ত তোর সে মিশে রয়েছে ।