পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অম্বিন সৌধীনতার অক্ষম চেষ্টা মনে পড়ল । কত ক’রে ওর মুখের দিকে চেয়ে এত কাল কিছু গ্রাহ করিনি । বেশ দেখতে পেলাম ওর ঘন কাল চুলের সিতিপাটি ব্যর্থ হয়ে গেল-—ওর গুন্দ্র, নিষ্পাপ জীবন নিয়ে সবাই ছিনিমিনি খেলুলে । সপ্তম পরিচ্ছেদ X এখান থেকে কলকাতা যাবার সময় হয়ে এল। বিকলে আমি বটতলার পুকুরের ঘাটে বসে মাছ-ধরা দেথচি, নবীনমুহুরী এসে বললে—তোময়ি ডাক্‌চেন মেজবাবু। ওর মুখ দেখে আমার মনে হ’ল গুরুতর একটা কিছু ঘটেচে কিংবা ও-ই আমার নামে কি লাগিয়েচে । নবীন-মুহুরী এ-রকম ఢా অামার নামে লাগিয়েচে এর আগেও । কারণ তার চুরির বেজায় অসুবিধে ঘটচে আমি থাকার দরুণ । মেজবাবু চেয়ারে বসে, কুঞ্জ-নীয়েবও সেখানে দাড়িয়ে । মেজবাবু আমাকে মানুব বলেই কোনো দিন ভাবেন নি । এ-পর্য্যন্ত আমিও পারতপক্ষে তাকে এড়িয়েই চলে এসেচি । লোকটার মুখের উগ্র দাস্তিকতা আমাকে ওর সামূনে যেতে উৎসাহিত করে না । অামায় দেখে বললেন— শোনো এদিকে । কলকাতায় গিয়ে তুমি অন্ত জায়গায় চাকুরীর চেষ্টা করবে ! তোমাকে এক মাসের নোটিশ দিলাম । —কেন, কি হয়েচে ? --তোমার মাথা ভাল না, এ আমিও জানি, নবীনও দেখেচে বলচে । হিসেব-পত্রে প্রায়ই গোলমাল হয় । এ-রকম লোক দিয়ে আমার কাজ চলবে না । ষ্টেটের কাজ তো ছেলেখেলা নয় ? নবীন এবার আমীয় শুনিয়েই বললে—এই তো সেদিন আমার সামূলেই হিসেৰ মেলাতে মেলাতে মৃগীরোগের মত হয়ে গেল—আমি তো ভঙ্গেই অস্থির— মেজবাবুকে বিশ্বান থ'লে আমি সন্ত্রমের চোখেও দেখতাম। বললাম—দেখুন, তা নয়। আপনি তো সব বোঝেন, জাপমাকে কচি ; মাঝে মাঝে আমার কেমন একটা অৰস্থ ছয় শীর্থের ও মনের, সেট বলে বোঝাতে হয় । trష్టి$ পারি নে-কিন্তু তখঙ্গ এমন সব জিনিষ দেখি, সহজ অবস্থায় তা দেখা যায় না । ছেলেবেলায় আরও অনেক দেখতুম, এখন কমে গিয়েচে । তখন বুঝতাম না, মনে ভয় হ’ত, ভাবতাম এ-সব মিথো, আমার বুঝি কি রোগ হয়েচে । কিন্তু এখন বুঝেচি ওর মধ্যে সত্যি আছে অনেক । মেজবাবু কৌতুক ও বিদ্রুপ মিশ্রিত হাসি-মুখে আমার কথা শুনছিলেন–কথা শেষ হ’লে তিনি কুঞ্জ-নায়েবের দিকে চেয়ে হাস্লেন । নবীন-মুহুরীর দিকে চাইলেন না, কারণ সে অনেক কম দরের মানুষ । ষ্টেটের নায়েবের সঙ্গে তবুও দৃষ্টি-বিনিময় করা চলে । আমার দিকে চেয়ে বললেন—কত দূর পড়াশুনা করেচ তুমি ? —আই-এ পাস করেছিলাম শ্রীরামপুর কলেজ থেকে— —তাহ’লে তোমায় বোঝানো আমার মুস্কিল হবে । মোটের ওপর ও-সব কিছু না । নিউরোটিক যারা— নিউরোটিক বোঝ ? যাদের স্নায়ু দুৰ্ব্বল তাদের ওই রকম রোগই বইকি, ও এক রকম রোগ— আমি বললাম—মিথ্যে নয় যে তা আমি জানি । আমি নিজের জীবনে অনেক বার দেখেচি–ও-সব সত্যি হয়েচে । তবে কেন হয় এইটেই জানি নে, সেইজন্যেই আপনাকে জিগ্যেস করেচি । আমি সেন্ট ফ্রান্সিস অফ আসিসির লাইফ-এ পড়েচি তিনিও এ-রকম দেখতেন— মেজবাবু ব্যঙ্গর সুরে বললেন—তুমি তাহ’লে সেন্ট হয়ে গিয়েচ দেখচি ? পাগল কি আর গাছে ফলে ? নবীন ও কুঞ্জ দু-জনেই মেজবাবুর প্রতি সন্ত্রম বজায় রেখে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে হাসতে লাগল । আমি নানা দিক থেকে খোচ খেয়ে মরীয়া হয়ে উঠলাম । বললাম—আর শুধু ওই দেখি যে তা নয়, অনেক সময় মরে গিয়েচে এমন মানুষের আত্মার সঙ্গে কথা বলেচি, তাদের দেখতে পেয়েচি । নবীন-মুহুরীর বুদ্ধিহীন মুখে একটা অদ্ভুত ধরণের অবিশ্বাস ও ব্যঙ্গের ছাপ ফুটে উঠল, কিন্তু নিজের বুদ্ধির ওপর তার বোধ হয় বিশেষ অস্থিা মা থাকতে সে মেঞ্জবাবুর মুখের দিকে চাইলে । মেজৰ ৰু এমন ভাব দেখালেন যে, এ বন্ধ উন্মাদের সঙ্গে আর কথা বলে লাভ কি আছে ! তিনি কুঞ্জ-মায়েবের দিকে এভাবে চাইলেন যে একে জার