পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা দেশের মৎস্য-শিকারী মাকড়সা শ্ৰী গোপালচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য “১৯৩১ সনের মার্চ মাসের প্রথম ভাগে, কলিকাতার উপকণ্ঠে, কোন বদ্ধ জলাশয়ে, ধূসর বর্ণের একটি পরিপুষ্ট মাকড়সার প্রতি হঠাৎ আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। জলাশয়টি নানা প্রকার জলজ উদ্ভিদ ও এক প্রকার ছোট ছোট ‘শালুক’ পাতায় পরিপূর্ণ ছিল, তাহারই একটি পাতার উপর মাকড়সাটি ভিন্ন জাতীয় আর একটি মাকড়সাকে বিয-শল্য ফুটাইয়া অসাড় করিয়া মারিয়া ফেলিয়া আস্তে चरिख ब्रन कृषिबा था३८उझिल ।। ७हे श्रदशग्र बांधि উহাকে ধরার উপক্রম করিতেই ছুটিয়া পলাইয়া গেল । আমিও উহার উপর দৃষ্টি নিবন্ধ রাখিয়া ক্রমাগত অনুসরণ করিতে লাগিলাম। অনেকক্ষণ ছুটাছুটির পর অবশেষে মাকড়সাটি পা গুটাইয়া মৃত্যুর ভাণ করিয়া জলের উপর চিৎ হইয়া ভাসিতে লাগিল। তখন সেইমাত্র আমি উস্থাকে কুড়াইয়া লইতে হাত বাড়াইয়াছি, অমনি আমার চোখের সম্মুখে হঠাৎ কোথায় যেন অদৃপ্ত হইয়া গেল। এই হঠাৎ অদৃপ্ত হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করিয়া পরে জানিতে পারিয়াছি যে, ইহারা স্বদক্ষ ডুবুরী ; জলের নীচে পনেরে মিনিট হইতে আধ ঘণ্টা পৰ্য্যস্ত অবলীলাক্রমে ডুবিয়া থাকিতে পারে। এই মাকড়সারা উভচর প্রাণী । দিনের বেলায় অধিকাংশ সময় ইহারা জলের উপর কাটায়। অনেক সময় জলজ উদ্ভিদের পাতার উপর বিশ্রাম করে, আবার কখনও কখনও জলের উপর ছুটাছুটি করিয়া বেড়ায়। দিবাবসানে সাধারণতঃ ইহারা জলাশয়ের তীরে উঠিয়া ঘাসপাতার মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করে। কখনও কখনও আবার পুকুরধারে পতিত ইট, কাঠ বা খোলামূকুচির তলায় ছোট ছোট গর্ভে লুকাইয়া থাকে। দিনের আলো ইহার খুবই ভালবাসে, কিন্তু দ্বিগ্রহরের প্রখর রৌত্রের সময় ঝোপঝাড়ের অন্তরালে বা ছায়ার নীচে অবস্থান করে। পুষ্করিণীর পরিষ্কার জলের উপর দিয়া সময় সময় খুব দ্রুত গতিতে লাফাইতে লাফাইতে ইহারা বহুদূর অতিক্রম করিয়া যাইতে পারে। যাইতে যাইতে জলের উপর বিশ্রাম করিলে শরীরের ভরে পায়ের নীচে জল একটু টোল খাইয়া যায় মাত্র ; জলের উপরের পাতলা পদ ছিন্ন করিয়া পা জলের ভিতর ডুবিয়া যায় না। পূর্বেই বলা হইয়াছে যে, ইহাদের জলের নীচে ডুবিয়া থাকিবার অদ্ভুত ক্ষমতা আছে। কোন প্রকার ভয়ের কারণ উপস্থিত হইলে অথবা শত্রুর নিকট হইতে আত্মরক্ষার নিমিত্ত ইহার জলের নীচে ডুব দিয়া ঘাসপাতা স্বাকড়াইয়া ধরিয়া থাকে। শরীরের চতুদিকের বাতাসের অস্তিরণ ভেদ করিয়া জল ইহাদের গায়ে লাগিতে পারে না এবং এই জন্য জলের নীচে ইহাদিগকে রূপালী রঙের মত বাকৃঝকে দেখায়। ধাড়ী মাকড়সাও ভয় পাইলে তাহার ডিম অথবা পৃষ্ঠে অবস্থিত বাচ্চাগুলিকে লইয়া জলের তলায় ডুব দিয়া জলজ লতাপাতার উপর দিয়া এক স্থান হইতে অঙ্ক নিরাপদ স্থানে গিয়া লুকাইয়া থাকে। ইহারা সাধারণতঃ নানাপ্রকার ছোট-ছোট পতঙ্গ এবং এক প্রকার জল-মক্ষিকা শিকার করিয়া বেড়ায়। এই জল-মক্ষিকাগুলিকে অনেক সময় দলবদ্ধভাবে জলের উপর ভাসিয়া বেড়াইতে দেখা যায়। এই মাকড়সার প্রায়ই দুৰ্ব্বল স্বজাতীয়দিগকে খাইয়া ফেলে। স্ত্রী মাকড়সারাই এ বিষয়ে বিশেষ অগ্রণী, এমন কি স্থযোগ পাইলেই তাহারা পুরুষ-মাকড়সাকে ধরিয়া উদয়স্থ করে। মাকড়সাদের মৎস্য-শিকারের কৌশল এই মাকড়সারা স্বদক্ষ শিকারী এবং ইহাদের কৌশলও অদ্ভুত। ইহারা কিরূপ ধৈর্ঘ্যের সহিত শিকারের উপর লাফাইয়া পড়িবার স্বঘোগের অপেক্ষায় বসিয়া থাকে এবং কিরূপ সস্তপণে শিকার অমুসরণ করে তাহা বাস্তবিকই প্রণিধানযোগ্য । আরও বিস্ময়ের বিষয়