পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুঙ্খল ঐস্বধীরকুমার চৌধুরী - S$ প্রভাতে ঐন্দ্রিলার ঘুম না ভাঙিতেই বীণা বিছানা ছাড়িয়া উঠিয়া পড়িল । ছতলায় হেমবালা তখনও দ্বার খোলেন নাই, রুদ্ধভারের বাহিরে স্তিমিত আলোকে দেয়াল ঘেসিয়া বসিয়া ক্ষ্যাস্ত নিঃশব্দে অপেক্ষা করিতেছে । বাড়ীর অস্তু ঝিচাকরদের সঙ্গে শেয অবধি কিছুতেই আর তাহার বনিবনাও হইয়া উঠিল না, প্রায় সমস্ত জীবন একটা বৃহৎ -পরিবারে যে মৰ্য্যাদা পাইয়। সে অভ্যস্ত এখানে কেহ তাহাকে তাহ দিবে না, স্বতরাং পারতপক্ষে নীচেকার মহলে সে বড় একটা যায় না, স্বযোগ পাইলেই হেমবালাকে আসিয়া আশ্রয় করে । বীণা বলিল, "চুপ করে বসে কেন আছ, পিসীমাকে স্বল্পকার "ি ক্ষ্যাপ্ত বলিল, “না দিদিমণি, দরকার আর কি ? ঘুম ভাঙতেই ত ভাক পড়বে, আগে থেকে তৈরী হয়ে ব’লে আছি । আমরা রাজবাড়ীর ঝি-চাকর, কাজ পালিয়ে বেড়ানো, সাতডাকে সাড়া না দেওয়া, ও-সব ত আর আমাদের খাতে নেই।” বীণা বলিল, “তা কাজ করতে চাও, নীচে ত ঢের কাজ রয়েছে, স্বচ্ছন্দে করতে পার।" ক্ষ্যাম্ভ বলিল, “কোথা আর পারি দিদিমণি, আমর। পাড়াগেয়ে মানুষ, আমাদের কাজ কি আর তোমাদের মনে ধরবে ? কিছুতে হাত লাগাতে গেলে বাড়ীম্বুদ্ধ একসঙ্গে ই স্থা করে আসে, আবার ব’লে খাই ব’লে সেই সঙ্গে খোটাও উঠতে বলতে শুনতে হয় ।” বীণা বলিল, “খোটা আবার তোমাকে কে দেয় ?” ক্ষ্যাপ্ত বলিল, “কে আবার দেবে, দেয় আমার কপাল ॥* - বীণা বলিল, “খোটা ধারা দেয় ভাৱে ত তুমি ৰাঙ্ক जा, ढाँइट्णहे इल।” হৃষীকেশের মহলে পৌছিয়া বীণা দেখিল, তিনি স্বানের ঘরে ঢুকিয়াছেন। বেহারাকে ডাকিয় তাহার ঘর ঝাড়িতে বলিয়া বাগান হইতে কয়েকগুচ্ছ ফুল সংগ্ৰহ করিয়া আনিল। লিখিবার টেবিল স্বহস্তে ঝাড়িয়া একটি রেকাৰীতে কতকগুলিকে সযত্বে সাজাইয়া দিল । স্বানাস্থে একসঙ্গে কস্তাকে এবং ফুলগুলিকে দেখিতে পাইয়া হৃষীকেশের চিন্তাভারাচ্ছন্ন মুখ প্রসন্নতার হাসিতে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল । কহিলেন, “আজ খুব ভোৱে উঠেছ মা ?” বীণা বলিল, “রোজই খুব যে দেরি করে উঠি তা নয়, কিন্তু রাহু-মন্দিরার পাল্লায় কোনোরকমে একবার পড়লে ছাড়া পেয়ে বেরুতে সেদিন নট বেজে ধায় । ততক্ষণ চাকরষাকল্পগুলো তোমার কি হাল ক’রে রাখে জানতেও *ाझे मl * রান্ত-মন্দিরার নাম হইতেই চকিতের মত হৃষীকেশের মুখে আবার একটু স্নেহপ্রসন্নতার হাসি খেলিয়া গেল । কহিলেন, “আমার অস্থবিধা কিছু হয় না। তাছাড়া হেমও ডোরেই রোজ আসে । অপর্ণা কেমন আছেন এখন ?” বীণা কহিল, “ভালো ।” পিতাপুত্রীতে ইহার পর অনেকক্ষণ আর কোনও কথা হইল না। হৃষীকেশ চশমা বাহির করিয়া বই লইয়৷ বপিলেন। হৃষীকেশের মুখে কোনও হাসি মুহূৰ্ত্তেকের বেশী স্থান পায় না, তবু তাহার স্তন্ধ বিষন্নতারও কেমন একটি ঐ আছে, তাহার দিক হইতে চোখ ফিরাইয়া লওয়া কঠিন হয়। বীণা বসিয়া বসিয়া সম্পূর্ণ পরিতৃপ্ত চিত্তে একদুষ্টে তাহাকে দেখিতে লাগিল। বেহাৱা নিঃশৰে ঘরঘোর গুছাইয়া চলিয়া গেলে ক্ষিপ্ৰহস্তে তাহার ক্রটিগুলি সারিয়া লইল, তারপর পিতার খুব কাছে একটা চৌকি টানিয়া বসিয়া কছিল, “তোমাকে আজ একটু বিরক্ত করব, কিছু মনে করবে না ত ৰাধা ?”