পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ় ইংরেজ ব্যবসায়ীকে হাজার ডলার মূল্যের তুলার জন্ত কত ষ্টালিং দিতে হইবে তাহার হিসাব সে সহজেই করিতে পারে. কিন্তু যে-মুহূৰ্ত্তে পাউণ্ড ষ্টার্লিঙের সহিত স্বর্ণের অভেদ্য সম্পর্ক ঘুচিয়া গেল, প্রত্যেক পাউণ্ড ষ্টার্লিঙের বিনিময়ে স্বর্ণ পাওয়া বন্ধ হইল, অমনি ষ্টার্লিঙের মূল্য হ্রাস হইতে স্বরু করিল। স্বর্ণ বা ডলারের সহিত তাহার বিনিময়ের হার কমিতে লাগিল ও অনিদিষ্ট হইল। যেখানে এক পাউণ্ড ষ্টালিং=৪৮৬ ডলার ছিল সেখানে বিনিময়ের হার অনির্দিষ্ট হইয়া এক পাউণ্ড ষ্টার্লিঙের মূল্য ৩৩০০ ডলার হইতে প্রায় ৪ ডলার পর্য্যস্ত অনবরত ওঠা-নমা করিতে লাগিল । ফলে ইংরেজ ব্যবসায়ীকে হাজার ডলারের বিনিময়ে কেবলমাত্র যে অধিক ষ্টালিং দিতে হক্টল তাহা নহে, উপরন্তু কতটা অধিক দিতে হইবে তাহাও সে বিনিময়ের অনিশ্চয়তার দরুণ বুঝিতে পারিল না। স্বতরাং আমরা দেখিতে পাইতেছি বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিনিময়ের হার ঠিক না থাকিলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মূল্য নিরূপণ করা কঠিন হইয় পড়ে এবং বাণিজ্য জুয়াখেল ও ভাগ্যপরীক্ষায় পরিণত হয় । স্বর্ণমান আর একটি বড় উদ্দেশ্য সাধন করে। প্রত্যেক নোটের বিনিময়ে স্বর্ণ দিবার সন্ত থাকায় কোন গবর্ণমেণ্ট অত্যধিক নোট ছাপাইয় চালাইতে পারেন না। কারণ নোটের বিনিময়ে স্বর্ণ দিবার জন্ত তাহাদিগকে সৰ্ব্বদাই প্রস্তুত থাকিতে হয়। তদরুণ অতিরিক্ত কাগজের মুদ্র প্রচলিত হইয়া জিনিষের দর অত্যধিক বৃদ্ধি পাইতে পারে না। কেনাবেচার জন্য যে পরিমাণ মাল দেশে আছে তদনুপাতে যদি মুদ্রার osfruto cast zg ( inflation of currency ) sisi ķērzi যোগান ও চাহিদার সাধারণ নিয়মানুসারে জিনিষের মূল্য অপেক্ষাকৃত বাড়িয়া যাইবে । তদরুণ সেই দেশের জিনিষ বিদেশে কম রপ্তানী হইবে এবং বিদেশী জিনিযের আমদানী বাড়িবে। অথচ বিদেশীকে জিনিযের মূল কাগজে দেওয়া চলিবে না। ফলে দেশের সোনা বিদেশে চলিয়া যাইতে স্বরু করিবে। স্বর্ণমান অতিরিক্ত মুদ্র প্রচলনের প্রতিবন্ধকত করিয়া এইরূপে তাহার কুফল নিবারণ করে। এই ত গেল জুবিধার দিক । একটা অল্পবিধার দিকও ইহার আছে। ইহার সাহায্যে ভিন্ন দেশের মধ্যে বিনিময়ের হার ঠিক থাকে সত্য, কিন্তু স্বর্ণমাল v9e> কোন জিনিষের দর দেশ-বিশেষের ধোগান ও চাহিদ, তৈরি খরচ, মুদ্রার পরিমাণ ইত্যাদি অবস্থার উপর ততটা নির্ভর করে না –পৃথিবীময় মোট স্বর্ণের পরিমাণ ও অন্যান্য অবস্থার উপর যতটা নির্ভর করে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে সৰ্ব্বপ্রকার ব্যবধান ঘুচিয়া যাওয়ায় কোন দেশের পণ্য আর এখন কেবল সেই দেশের পণ্য হিসাবেই গণ্য হইতে পারে না ; বিশ্বের সকল হাটই তাহার খোজ রাথে এবং সেই কারণেই তাহার কদর দুনিয়ার হাটের অবস্থার উপর নির্ভর করে । আমরা দেখিয়াছি বিশ্বের হাটে কেনাবেচার মূল্য দেওয়া হয় স্বর্ণে। পণ্য-বিনিময়ে যদি আমরা স্বর্ণ লঙ্গতে চাহ তাহ হইলে পৃথিবীর পণ্যের দর পৃথিবীর স্বর্ণের পরিমাণের উপর নির্ভর করিবে। তাই ধিখের হাটের দর তাহার নিজ নিয়মে যেমন নিয়ত ওঠানামা করিতে থাকে, বিভিন্ন দেশের দরকেও তাহার সহিত তাল রাখিয়! চলিতে হয় । ব্যাপার দাড়াইয়াছে এই যে, স্বর্ণমানের সাহায্যে সমগ্ৰ পৃথিবীর সহিত ব্যবসাক্ষেত্রে আমাদের সংযোগ যেমন সহজ হইয়াছে, তেমনি আমাদের দেশের জিনিষের দর অর্থের সংকোচন ও প্রসারণ সাহায্যে (deflation and inflation ) fosso of Rs: “if আমাদের হাতের বাহিরে চলিয়া গিয়াছে । আজকাল একদল লোক, যাহাঁদের একটা নির্দিষ্ট আয়ের উপর জীবিক নির্ভর করে, দরের এই নিয়ত পরিবর্তন কিছুতেই পছন্দ করিতে পারেন ন৷ -ভাগ্যাম্বেষী দলের নিকট ইহা যতই লোভনীয় হউক না কেন । e পৃথিবীর বাজার-দরের ওঠা-নাম প্রধানতঃ কি কারণে হয় এখানে তাহার একটু আলোচনা করা আবশ্বক। আমরা দেখিয়াছি বিশ্বের হাটে কেনাবেচা বাহত ঘে-ভাবেই হউক ন। কেন, কাৰ্য্যত ও প্রকৃতপ্রস্তাবে সোনার সাহায্যেই ইহ সম্পন্ন হইয় থাকে। তাহ হইলে অর্থনীতির মূলস্বত্র ঘোগান ও চাহিদার নিয়মানুসারে বিশ্বের স্বর্ণতহবিলের কমবেশীর সহিত জিনিষের দর নামিবে ও চড়িবে। সোনার পরিমাণ কমিয়া গেলে জিনিষ ক্রমকালীন আমাদিগকে বাধা হইয় সোন কম দিতে হইবে, অর্থাৎ জিনিষের দর কমিবে। পক্ষান্তরে পৃথিবীর স্বৰ্গতহবিল বৃদ্ধি পাইলে জিনিষ কিনিতে অধিক সোন দেওয়া সহজ হয় এবং জিনিষের দর বাড়িতে থাকে। . সেই জন্তই দক্ষিণ-আফ্রিকা, অষ্ট্রেলিয়া ও ক্যালি--