পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ় शूनऊँौबम ৩২৩ যোগেশ, যোগেশ, বলিয়৷ ডাকিতে লাগিলেন। বামা বাড়ির বাহির হইয়া আসিল। বলিল,—দাদাবাবু ত এখানে নেই। খুব ভোরে উঠে বউদিকে নিয়ে কলকেতায় চলে গিয়েচে । উমেশ হতভম্ব হইয়া বাড়ি ফিরিয়া গেলেন। ভগিনীকে বলিলেন,—দেখেচ যোগেশের আক্কেল ! তার বউকে নিয়ে কলকেতায় চলে গিয়েচে । কলকেতার খরচ যোগাবে কে ? وعن কলিকাতায় যোগেশ যেখানে বাস করিম থাকিত তাহার পাশেই একটি ছোট দোতলা বাড়ি খালি ছিল। বাড়িওয়ালা যোগেশের পরিচিত, তাহারও বাড়ি সেইখানে । যোগেশ সরোজিনীকে গাড়ীতে বসাইয়া, গৃহস্বামীকে গিয়া বলিল,--আমি দেশ থেকে আমার বউকে নিয়ে এসেচি । আপনার খালি বাড়ী ভাড়া নেব । কত ভাড়া ? --কুড়ি টাকা। তুমি একটু দাড়াও, বাড়ির চাবি এনে निक्रि । বাড়িওয়াল চাবি আনিয়া যোগেশের হাতে দিল । বলিল,—বাড়ি বন্ধ আছে, অপরিষ্কার হয়ে থাকবে । আমাদের বাড়ির ঝি এখনি গিয়ে ঝটি দিয়ে আসবে, তারপর তোমাদের লোক আবশ্বক হয় সে একজন ঝি এনে দেবে। যোগেশ কৃতজ্ঞতা জানাইয়া, বাড়ির দরজা খুলিয়া, সরোজিনীকে গাড়ী হইতে নামাইয়া আনিল । বাড়িখানি ছোট কিন্তু দিব্য খটখটে। দোতলায় দুইটি ঘর, নীচে খাবার ঘর, ভাড়ার, রান্নাঘর। রান্নাঘরে নূতন উনান পাতা। সরোজিনী সমস্ত দেখিয়া বলিল, কি সুন্দর বাড়ি । বাড়িওয়ালার বাড়ির ঝি এক হাতে বাট, অপর হাতে একটা কলসী লইয়া আসিল । সরোজিনীকে দেখিয়া বলিল,— বউ যেন লক্ষ্মীঠাকরুণ ! উপর নীচে সমস্ত বীট দিয়া, ধুইয়া, উনান নিকাইম দাসী জিজ্ঞাসা করিল,—বউদি, আর কিছু কাজ আছে ? যোগেশ বলিল,—বি, আমাদের একটি লোক দিতে পারবে ? —কেন পারব না ? আমার বোনঝি বসে আছে, কাজকৰ্ম্ম সব জানে, বাজার থেকে ফিরে আসবার সময় তাকে নিয়ে আসব। —বাজারে আমাকেও যেতে হবে, ঘরসংসারের সব জিনিষ ত চাই । – তরিতরকারী মাছের বাজার আমি সব করে দেব । ইড়ি, কলসী, কলাপাত আমি নিয়ে আসব। আর যা চাই তুমি এন। বউদি নিজে রাধবে ? - তা নয় ত কি বামুন রাখতে হবে ? দুটি লোকের ত রান্না ! বিকে যোগেশ চার আন পক্ষস পুরস্কার দিল, বাজারের জন্য একটা টাকা দিল । ঝি চলিম গেলে যোগেশ সরোজিনীকে বলিল, তোমাকে খানিকক্ষণ একলা থাকতে হবে। ঘরে ত কিছু নেই, বসবার শোবার জন্য ত কিছু চাই। তুমি দরজায় থিল দিয়ে থেকে। ঝি যদি বাজার করে আগে আসে তাকে দরজা খুলে দিও। যোগেশ বেশ হিসাবী । জলপানির টাকা হইতে ৭৫২ টাকা জমা করিয়াছিল, সে টাকা তাহার কাছে ছিল । স্বতরাং কলিকাতায় পা দিয়াই তাহাকে টাকার ভাবনা ভাবিতে হইল না। সে বাজারে গিয়া আবশ্বক সামগ্ৰী ক্রয় করিল। দুই চারিখানা বাসন, গাড় ঘটি বট, দুখানা মাদুর, দুইটা তক্তপোষ, গদি, বালিশ ক্রয় করিল। দুই জন মুটের মাথায় জিনিষপত্র চাপাষ্টয়া দিয়া যোগেশ গরম কচুরি, পানতুম, রসগোল্লা কিনিল। বাড়ি ফিরিয়৷ দেখে বাড়িওয়ালার গৃহ হইতে আনীত বঁটিতে সরোজিনী তরকারী কুটিতেছে, উঠানে নূতন ঝি আঁশবটিতে মাছ কুটিতেছে। যোগেশ মুটেদের সাহায্যে জিনিষপত্র সমস্ত গুছাইয়া রাখিল । তাহার পর খাবার ঘরে গিয়া সরোজিনীকে ডাকিল। সে আসিলে তাহাকে বলিল,— এখনও রান্নার দেরি আছে, কিছু খাবার খাও। আমিও খাচ্চি। যোগেশের পীড়াপীড়িতে সরোজিনী একটা রসগোল্লা আর একখানা কচুরি থাইল। এক সপ্তাহ অতীত হইল। সংসার পাতিতে যোগেশের যথেষ্ট ব্যয় হইয়াছিল, হাতে বেশী টাকা ছিল না। টাকা ফুরাইলে কি হইবে ? পরীক্ষামু উত্তীর্ণ হইলে তখনই ত আর অর্থাগম হুইবে না। যোগেশ কলেজের অধক্ষের সহিত সাক্ষাৎ করিতে গেল। তিনি বলিলেন, যোগেশ, তোমাদের পরীক্ষার ফল এক সপ্তাহের পর প্রকাশ হবে।