পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ় মা-বাপ ও অভিভাবকগণের নজরবন্দী হইয়া থাকিতে হয়, আর কলিকাতায় থাকিলে মাসের পর মাস মনি-অর্ডারে চল্লিশ পর তাল্লিশ টাকা করিম নিবিবাদে আদায় হয় ও ইচ্ছাচুরূপ খরচ করা যায়।" এই সম্পর্কে ঢাকার মোসলেম হোষ্টেলেব কথা বলি। যখন লর্ড হাডিং বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদ রহিত করিলেন তপন মুসলমান নেতাদিগকে এই বলিয়। প্রবোধ দিলেন যে, তাহানের সুবিধার জন্য একটি স্বতন্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি হইবে, সেখানে মুসলমান ছাত্রদের জন্য বিশেষ সুবিধাও কর হইবে। আমি চিরকাল এই মতষ্ট পোষণ করিয়! আসিতেছি এবং ইহ ব্যক্ত করিতে কখনও কুষ্ঠিত হইব না যে, অনুন্নত সম্প্রদায়গুলির ভিতর যতদিন না শিক্ষার আলোক প্রবেশ করিবে এবং যতদিন না তাহার বিদ্যাশিক্ষা করিয়া তথাকথিত উচ্চশ্রেণীদের সহিত সমভাবে মেলামেশা ও সমান অধিকার ও স্থবিপ লাভ করিবে ততদিন আমাদের প্রক্লত উন্নতি হইবে না। সেখানকার প্রকাণ্ড সেক্রেটারিয়েট বাড়ি মোসলেম হোষ্টেলে পরিণত হইয়াছে। কিন্তু কর্তৃণক্ষের ইহাও যথেষ্ট মনে করেন নাই । আবার দশ লক্ষ টাক; ব্যয় করিয় রাজ-প্রাসাদতুল্য একটি স্বতন্থ ‘মোসলেম হল নিৰ্ম্মিত হইয়াছে । এখানে থাকিতে গেলে কিছু উচ্চ হারে ভাড় দিতে হয় । একে ত মুসলমান ছাত্রের অধিকাংশই দরিদ্র, তাহার উপর এই দুৰ্দ্দিনে এইরূপ উচ্চ হারে ভাড় দেওয়৷ ক্লেশসাধা । কাজেই অধিকাংশ ঘরই খালি পড়িয়া আছে । র্যাহার একটু তলাইয়া বুঝিতে পারেন তাহার বলেন ছেলেদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করিবার ইহা অপেক্ষ প্রকৃষ্ট উপায় আর উদ্ভাবিত হইতে পারে না। আসল কথা এষ্ট যে, যদি দশ লক্ষ টাকা মূলধন-স্বরূপ অব্যাহত রাখিয় তাহার বাৎসরিক মৃদ আত্মানিক চল্লিশ হাজার টাকা দরিদ্র মুসলমান ছাত্রদের উন্নতিকল্পে বৃত্তিস্বরূপ ব্যয়িত হইত তাহ হইলে প্রকৃতপক্ষে তাহদের উন্নতির বিধান করা হইত। কিন্তু বুটিশ রাজনীতি ভাগ্যবিধাতার পরিকল্পনার ন্যায়ই দুজ্ঞের্ষ। বর্তমান শিক্ষাপ্রণালী যে কত রকমে শাপ ও পাপ গ্রস্ত তাহার একটুমাত্র আভাস দিলাম। অবশু ছাত্রগণ রিদ্যাশিক্ষার জন্য অভিভাবকদের নিকট হইতে মাসে মাসে 8令一船 শ্রমের মধ্যাদা-ৰাঙালীর পরাজয় రిస్చిపె টাক পাইবেন । ইহার বিরুদ্ধে আমি কিছুই বলিতেছি না। কিন্তু এখানে বিবেচ্য এই যে যাহারা কলেজে পড়ে তাহাদের এইটুকু বোঝা উচিত, তাহারা যে টাকার শ্রাদ্ধ করে তাহ কত কষ্টের । প্রয়োজনাতীত ব্যয় করা কেবল নীচাশয়তার পরিচায়ক নহে, ভাবী জীবনের উন্নতির মূলেও কুঠারাঘাত করা। 哆 আজকালকার তুলনায় একশত বৎসর পূৰ্ব্বে স্কটল্যাগু এক প্রকার নিধন ছিল, তখনও সেখানে নব্যসভ্যতা ও বিলাসিত জাল বিস্তার করে নাই। মনীষী কালাঙ্গলের জীবনচরিত হইতে ইহার একটি সন্দর বিবরণ দিতেছি । বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যাবস্থায় ছাত্ররুদ সুরম্য অট্টালিকায় বিলাসসম্ভারপুরিপূর্ণ প্রকোষ্ঠে ও বিপুল অর্থব্যয়ে তাহাদের ছাত্রজীবন অতিবাহিত করে । এই সকল ছাত্রের যাহা ব্যয় করে কালষ্টিল লোপ হয় তাঙ্গর জীবনের কোন বংসরেও তাহ উপার্জন করিতে সক্ষম হন নাই । তাহার সময়ে স্কটল্যাণ্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনকার মভ পারিতোষিক ও বৃত্তির ব্যবস্ত ছিল না । ছাত্রগণ অধিকাংশই দরিদ্র ছিল । কালঙ্গিলও এইরূপ একজন দরিদ্র কুযকের সস্তান । বিদ্যাশিক্ষার ব্যয়নির্বাহের জন্য ভাহাদের পিতামাতা ও অভিভাবকগণ যে কিরূপ কায়ক্লেশে অর্থ সংগ্ৰহ করিতেন তাহা প্রত্যেক বিদ্যার্থীক্ত হৃদয়ঙ্গম করিত এবং সময়ের সদব্যবহারের জন্য সতত সচেষ্ট থাকিত। বৎসরে মাত্র পাচ মাস বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করিয়া অবশিষ্ট সময় তাহার কুমিকাৰ্য্য ও শিক্ষকতা করিম তাহাদের ব্যয়-সঙ্কুলানের জন্য অর্থ সংগ্ৰহ করিত। চৌদ-পনর বংসর বয়সেই তাহাদিগকে এডিনবর গ্লাসগো প্রভৃতি স্থানের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হইত, এবং দীর্ঘ পথ পদব্রজে গমন ভিন্ন তাহদের আর কোন উপায় ছিল না । সেখানে অভিভাবকহীন হষ্টয় তাহাদের আহার ও বাসস্থান নিজেদেরই খুজিয়া লইতে হইত। সময়ে সময়ে ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য লোক মারফৎ পাঠাইতেন এবং তাহারাও তাহাদের মলিন বস্ত্র ধৌত করিবার নিমিত্ত সেই সকল লোক দ্বারা গৃহে প্রেরণ করিত। তাহাদের স্বল্পতুষ্ট স্বভাবের