পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o, قة WoSS) "প্রবাসী ; মহাভারতের যে অতুবাদ করিয়াছিলেন তাহ “পরাগলী মহাভারত" নামে আজিও কোথাও কোথাও প্রচলিত আছে । হিন্দু মুসলমানের মধ্যে তথনকার দিনে এখনকার অপেক্ষ যে অনেক বেশী সম্ভাব ছিল, তাহ প্রাচীন বঙ্গসাহিত্য হইতে বেশ ভালরূপেই জানা যায়। মুসলমান কবিগণও নানাবিধ সদগ্রন্থাদি রচনা করিয়া বঙ্গসাহিত্যের পুষ্টিবৰ্দ্ধন করিতে পশ্চাৎপদ হন নাই। ঐ গ্রন্থগুলির কিছু কিছু আমি পাঠ করিবার সুযোগ লাভ করিয়াছি। দেখিয়া বিস্মিত হষ্টতে হয় যে. অনেক স্থপণ্ডিত মুসলমান বাস্তবিকই হিন্দুশাস্ত্রকে কতষ্ট ভক্তির চক্ষে দেখিতেন। তখনকার দিনে যপন তাহদের সঙ্গে বৈরা সম্বন্ধ থাকাই হয়ত স্বাভাবিক ছিল, তপন তাহার পরিবর্ষে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে কতখানি মধুর মৈত্রীভাব ও সম্প্রাতির উদ্রেক দুষ্টয়াছিল । আর কি সেদিন আসিবে না ? অতীত ঘাত ছিল চেষ্টা করিলে হসত তাঙ্গ। আবার আসিতে পারে । মুসলমান লেখকগণের ধৰ্ম্মতত্ত্ব. নীতি বিরহবর্ণন, কাহিনী ইত্যাদি নানাবিষয়ক রচনাই দেখিতে পাওয়া যায়। তাঁহাদের মধ্যে স্থলেগঞ্চের অভাব ছিল না। সৈয়দ সুলতান প্রণীত যোগতত্ত্ব-সম্বন্ধীয় খানি গ্রন্থে হঠযোগের নিগুঢ় সাধনতত্ত্ব প্রকাশ পাইয়াছে। সংস্কৃত, ফারসীর অনুবাদ এবং মৌলিক রচনা দ্বারা যথেষ্ট পরিমাণেই ইহার বঙ্গসাহিত্যের শ্ৰীবৃদ্ধি সাধন করিয়াছিলেন। প্রাচীন মুসলমান লেখকগণের ভাযা এতই বিশুদ্ধ ও মধুর যে লেখকের নাম জানা না থাকিলে তাহা কাহার রচনা বুঝিবার উপায় নাই। “রাগনামা” হইতে একটুখানি নমুনা দেওয়া যাইতেছে, - "চলহ সপি নাগরি, মান তুহি পরিহরি, দেপ আসি নন কি রায় । যত ব্ৰজকুলনারী অঞ্জলি ভরি ভরি আবীর পেপ্যন্ত শ্লাম গায় । * * কহে তাহির মহম্মদে, ভজ রাধাশামপদে ; বিলম্ব করিতে না জুয়ায় ।” আর দুইটি ছোট পদ অন্য একটি পুস্তক হইতে তুলিয়৷ দিব, দেখুন ব্রজবুলীর সেই চিরপরিচিত স্বরটিই শুনিতে পাইবেন ; শুধু যার নলিননয়ন দুটি বারিপূর্ণ হইয়া বর্ষাবারির সহিত বর্ষণমুখর হইয়া রহিমাছে, তিনি শ্ৰীমতী রাধিক নহেন, বিরহিণী লয়লা । ইতিহাস, সঙ্গীত, SనO8O “বরপিত বারিদ জগ ভরি যুগল নয়ানে বহে বারি।” শ্রীচৈতন্যদেবের সময় হইতে বঙ্গভাষা ও সাহিত্যে একটি নবযুগের উদয় হইল। বঙ্গদেশ প্লাবিত করিয়া প্রেমের বন্য। ছুটিল, ভাবের ভাগীরথী প্রবাহিত হইলেন। বঙ্গসাহিত্যের এ এক স্মরণীয় এবং বরণীয় দিন। শ্ৰীকৃষ্ণমঙ্গল. গোবিন্দমঙ্গল, কৃষ্ণপ্ৰেমতরঙ্গিণী, শ্ৰীমদভাগবতের বঙ্গাবাদ, তারপর শ্রীচৈতন্যচরিতামুতাদি বহু ধৰ্ম্মগ্রন্থ, জীবগোস্বামী রূপসনাতনাদি ভক্তবৃন্দের ও গুণরাজ খ. কবিকর্ণপুর, ভাগবতাচাৰ্য্য প্রভৃতি বহু খ্যাতনামা কর্তা লেখকবৃন্দের অভু্যদয় –এবং তন্মধ্যে সৰ্ব্বপ্রধান স্থানটি অধিকার করিয়া থাকিয়৷ আজিও স্বর্ণমুকুটের মামণির মতই দীপ্তি পাইতেছে বৈষ্ণবপদাবলী । পদাবলীসাহিত্যের মত ভাবমধুর অমৃতনিঃস্রাবী আর কিছু এই মরজগতে আছে কি-না আমি জানি না। - বিদ্যাপতি বা চণ্ডীদাসের কতকগুলি পদ আমাদের যেন বড় পরিচিত একাস্তষ্ট আপনার জনের মত মনের সঙ্গে যেন গাথা হইয়া গিয়াছে। এই যে পদটি “নুধের লাগিয়া এ ঘর বঁধিনু অনলে পুড়িয়! গেল", অথব৷ “জনম অবধি হুম্ রূপ নেহারিমু নয়ন না শুিরপিত ভেল,” এমন প্রগাঢ় ভক্তিপ্রেমের চিত্র. এমন সরল সুললিত শব্দঝঙ্কার, এমন মৰ্ম্মম্পশী বিরহবিযাদের, এমন মৰ্ম্মন্থদ বেদন আক্ষেপের কত অসংখ্য পদষ্ট আছে, তাহার ইয়াত্ত নাই । আমার এই যুগযুগাস্তের সংক্ষিপ্ত সাহিত্য পরিচয়ের মধ্যে আমি কোন মহিল-লেখিকার নামোল্লেখমাত্র করি নাই। তবে কি সাহিত্যে র্তাহাদের স্থান ছিল না ; অথবা দান কি তাহারা সাহিত্যে কিছুই করেন নাই ? তা নয় ; তাদের সম্বন্ধে অনেক কথা বলার ছিল বলিয়াই বলার অবসর পাই নাই। কি বৈদিক যুগে, কি পৌরাণিক যুগে, কি বৌদ্ধযুগে, কি শঙ্করাদি যুগে, কি মুসলমান যুগে, কি ইংরেজ-শাসিত ভারতবর্ষে, নারী-লেখিকার অভু্যদয়ে কেহ কোনদিনই বাধ৷ দিতে পারে নাই। প্রশান্ত তপোবনের স্বশীতল তরুচ্ছায়াম র্তাহারা অসংখ্য বেদমন্ত্র রচনা করিয়াছেন ; রাজসভামধ্যে মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিতের সহিত উপনিষদ-তত্ত্বের তর্ক করিতে তাহারা দ্বিধাবোধ করেন নাই ; অমিততেজ সৰ্ব্বশাস্ত্রবিং