পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সিংহলের চিত্র শ্ৰীমণীন্দ্রভূষণ গুপ্ত 'একদা যাহার বিজয় সেনানী হেলায় লঙ্কা করিল জয়’ এই গানের জন্য বাঙালী সিংহলকে স্মরণ করে থাকে, আর আমাদের রামায়ণের সঙ্গেও সিংহলের স্মৃতি জড়িত। রাবণের স্বৰ্ণলঙ্কা ছিল এই সিংহলেই অবশ্য তার কোনো চিহ্ন নেই । ίf সিংহলী পুরুষ সাধারণ বেশ মাথায় পানাৰ বিজয়সিংহের লঙ্কাদ্বীপ জয়ের পর থেকেই সিংহলের ইতিহাস আরম্ভ। লঙ্কাদ্বীপে বিজয়সিংহের রাজত্ব হ’ল ব’লে এর নাম হয়ে গেল সিংহুল। আমাদের সঙ্গে বর্তমান সিংহলের কোনো পরিচয় নেই। ভারতের ধৰ্ম্ম, ভাষা, সাহিত্য, শিল্প নিয়েই সিংহলের সভ্যতা গড়ে উঠেছে। সিংহলীদের আচার-ব্যবহারের সঙ্গে আমাদের অনেক মিল আছে। সমূত্রের দ্বারা বিচ্ছিন্ন বলে ভারতের সঙ্গে যোগধারা নিরবচ্ছিন্ন চলে নি । সিংহলের সঙ্গে বিভিন্ন জাতির সঙ্ঘর্য হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। সেজন্য তারা বিজেতাদের দ্বারা অনেক বিষয়ে প্রভাবিত হয়ে পড়েছে, জাতীয় শক্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। প্রাচীন ইতিহাসে দেখতে পাষ্ট, ভারতের দাক্ষিণাত্য থেকে তামিলদের আক্রমণ লেগেই আছে। আরব এসেছে, চীন এসেছে, জাভা এসেছে, তারপর ধ্বংস এবং তাণ্ডবলীল। নিয়ে এসেছে পর্তুগীজ এবং ডাচ একটা ছোট দেশের পক্ষে এতগুলি আক্রমণ সাম্লে নেওয়া সোজা কথা নয়। ১৮১৪ খৃষ্টাব্দে সিংহল ইংরেজদের হাতে এসেছে, যদিও সমুদ্রতটবর্তী প্রদেশে এবং এখানে-সেখানে মাঝে মাঝে বিদেশী রাজত্ব করেছে। ১৮১৪ খৃষ্টাব্দের পর থেকেই সিংহলের স্বাধীনতা সম্পূর্ণ ভাবে লুপ্ত হয়েছে। এদের ইতিহাস, এদের শিল্পপ্রচেষ্ট, বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম নিশ্চয়ই খুর কৌতুহলোদ্দীপক। বৌদ্ধযুগে স্থাপত্য, ভাস্কৰ্য্য, চিত্র ইত্যাদি শিল্পের বিরাট কৰ্ম্মোন্তম দেখা যায়। ধ্বংসস্তুপ দেখে স্তম্ভিত হতে হয় এত ক্ষুদ্র দেশ কি ক’রে এ শিল্পসম্ভার স্বষ্টি করেছে। প্রাচীন কীৰ্ত্তির ন্যায় সিংহলের দৃশুও খুব মনোমুগ্ধকর। প্রকৃতির লীলানিকেতন পাৰ্ব্বত্য প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের বনানীর শুামল দীপ্তি, চতুদিকের নীল সমুদ্র সিংহলকে যেন ফ্রেমে বঁাধান ছবি করেছে। এখানে যে-কোনো লোকই ভ্রমণ করতে আক্ষক না কেন, নয়নে যে তৃপ্তি পাবে তার সীমা-পরিসীমা নেই। সিংহল ইউরোপীয় ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করেছে। তার প্রাচীন শিল্পগরিম প্রাকৃতিক সৌন্দৰ্য্যকে সকল ভ্রমণকারীই উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে। সেটা মিথ্যা স্তব নয়। আমিও নিজে তিন বৎসর সিংহলে অবস্থান করে সেটা অনুভব করেছি। তার বনানীর শুামন্বষম, সমুদ্রের নীলিমা, পাৰ্ব্বতা প্রদেশের বর্ণ-ব্যঞ্জন আমার চোখে যেন লেগে রয়েছে। সিংহলের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ । সেজন্য লোকদের