পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e৫২ জয়তিলকের পত্নী। তিনি কলকাতায় বেড়াতে এসেছিলেন, দেশে ফিরে গিয়ে বাংলার শাড়ী পরার রীতি নিজেদের পরিবারে এবং বন্ধুবান্ধবদের ভিতর প্রচার করেন । বহু প্রাচীন কালে অবশু পোষাক এমন ছিল না। মেয়েদের গায়ে থাকত 'তন পট (স্তন পট) এবং উত্ত্বক সালুয়া । রাজাদের পরিচ্ছদর বর্ণনায় পাওয়া যায়, তাদের ছিল "সিউ সাটু বরণ (চতুঃষষ্ঠ আভরণ ) । চৌষটি রকমের অলঙ্কার ছিল, তাতেই গা ঢাকা থাকত। উত্ত্বক সালুয়া থাকত। সাধারণ লোকদের খালি চাদর গামে, জামা থাকত না । সিংহলী মেয়ে পরণে ওসারা" (আধুনিক সংস্করণ) ఏనD8O বিবাহ ভিন্ন জাতির ভিতর বিবাহ হতে পারে না। যদিই বা ভিন্ন জাতির ভিতর হয়ে যায়, তবে জানতে হবে সেটা পিতামাতার বিনা অনুমতিতেই হয়েছে। বৌদ্ধ সিংহলে জাতিভেদ আছে—ব্রাহ্মণ, ক্ষত্ৰিয় বৈশ্য এরূপ নয়— গয়িগান, করাভ, শালগান ইত্যাদি জাতির নাম । ‘লভ ম্যারেজ’ পিতামাত পছন্দ করেন না। আর সিংহলে ভীষণ রকম পণ-প্রথা থাকায় ‘লভ ম্যারেজ’ হতে পারে না, কারণ তাতে পণ না পাওয়ারই সম্ভাবনা। আমাদের দেশের মতই ‘কাপুরাল ( ঘটক ) বিবাহের প্রস্তাব আনে এবং দেনপাওনা ঠিক করে। বিবাহের প্রস্তাব উঠলেই সবচেয়ে দরকারী বিষয় হল পণ। অর্থের পরিমাণ কাপুরালের সাহায্যে দুই দলের ভিতর ঠিক হয়ে গেলে তারপরে অন্ত কথা। পণের পরিমাণ ভীষণ । একজন এডভোকেট হয় ত পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করতে পারে। বরের আর্থিক অবস্থা, সামাজিক স্থান, শিক্ষা অনুসারে পণের পরিমাণ স্থির হয়ে থাকে। আমাদের দেশের মত সেখানে গণ্ডায় গণ্ডায় গ্র্যাজুয়েট নেই বলে এ-রকম পণ দাবি করা সম্ভব । পণ ঠিক হ’লে কোষ্ঠী দেখা হবে । সিংহলীদের কোষ্ঠীর উপর খুব বিশ্বাস। কোষ্ঠীতে যদি বর-কনের মিল না পাওয়া যায়, তবে হয়ত বিবাহ ভেঙে যেতে পারে। বিবাহের সময় স্থির হয় ‘পঞ্চাঙ্ক-লিথ' বা পাজি দেখে— দিন ঘণ্টা মিনিট সমেত সময় নির্দিষ্ট হবে। সিংহলীদের পাজি দেখার চলন আছে—দূর দেশে যখন কেউ যায় (যেমন গ্রাম থেকে কলম্বো শহরে ) পাজির দিন ক্ষণ দেখে বেরুতে হবে । বিবাহের সব ঠিকঠাক হয়ে গেলে বর-কনের ভিতর একটু দেখাসাক্ষাৎ হতে পারে— ঐ যা একটু পূৰ্ব্বরাগ। পাকাপাকি বন্দোবস্ত হয়ে যায়, বর-কনের বাড়িতে গিয়ে আত্মীয়স্বজনের সম্মুখে যখন আংটি বদল করে আসে।