পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ় সেখানে সেটি থাকে না, খুজিয়া বাহির করিতে হয়। ক্রমে একটি দুইটি করিয়া জিনিষ অদৃপ্ত হইতে লাগিল। আজ সাবানটা নাই, কাল তেলট নাই, একদিন দেখা গেল চিরুণীট। সরিয়া গিয়াছে, একদিন একটা কাপড় উধাও হইয় গেল, একদিন নূতন কেন স্কোর শিশিট নাই। ইতিমধ্যে একটা নূতন ঝি নিযুক্ত করা হইয়াছিল। তাহার আসার পর হইতেই এইরূপ কাণ্ড ঘটিতেছে, সেইজন্য সন্দেহটা তাহার উপরেই পড়িল। স্ত্রীও তাই মনে করিলেন, সাধুজীও সায় দিয়া বলিল - তাই হবে। নইলে এতদিন উৎপাত ছিল না, এখন আজ এটা কাল সেটা থাকে না কেন ?” বিকে ডাকি ধমক দিলাম। বেচার কাদিয়া ফেলিল। বলিল “বাবু, গরীব হতে পারি, কিন্তু আমন বেইজ্জত আর হইনি।” তার ভাব দেখিয় মনে হইল হয়ত সত্যই তার দোয নাই। কিন্তু তাহা হইলে এই কাণ্ড করিতেছে কে ? যেজীবটিকে ঘরে পুষিতেছি সেই কি ? কিন্তু সে এখানে বেশ আরামে আছে, খাওয়-পরা কিছুরই অভাব নাই, আমি তাকে সমস্তই দিই, তাছাড়া সে এ কাণ্ড করিতে যাইবে কার জন্ত ? সংসারেও সে সম্পূর্ণ এক। এইসব কথা মনে করিয়৷ তাকে কিছু বলিতে পারিলাম না। বিকে সাবধান করিয়া দিলাম, আর স্ত্রীকে সতর্ক থাকিতে বলিলাম। কয়েকদিন ভাল ভাবেই গেল। একদিন স্ত্রীর জন্য ছুইখানা নূতন সাড়ী কিনিয়া আনিয়াছি, কিন্তু আনিবার দুইদিন পরেই আর সেগুলি পাওয়া গেল না। ইহার পরদিনই স্ত্রীর এক জোড়া চুড়িও চুরি গেল। এবার মনে হইল আর শুধু সতর্ক থাকিলে চলিবে না। এর প্রতিকার করিতে হইবে। থানায় সংবাদ দিলাম। থানার লোকের প্রথম সন্দেহু হুইল বেচারী ঝির উপর। তাহাকে জেরা করা হইল তার বাড়ি থানাতল্লাসী করা হইল, কিছুই পাওয়া গেল না। তখন তাহদের সন্দেহ হইল সাধুজীর উপর। তাহার অল্পীজ্ঞা খুঁজিয়া দেখা হইল, তাহাকে ধরিয়া থানায় লইয়া যাওয়া হইল, কিন্তু কোন সদ্ধানই পাওয়া গেল না। जायू e) ۹۹ দয়া করে স্থান দিয়েছিলেন সেজন্য আপনার নিকট কৃতজ্ঞ, কিন্তু আমন বেইজ্জত হবার পর আর আমার এখানে থাক শোভা পায় না। আমি আমার পূৰ্ব্বস্থানে চলে যাচ্ছি।" বলিতে বলিতে তার চোখ দিয়া ঝরঝর করিয়া জল পড়িতে লাগিল । মনে দুঃখ হইল। সত্যিই ত যে রকম জিনিষ চুরি যাইতেছিল, সে-সব লইয়। সে কি করিবে ? টাকা পয়স হইলে কথা ছিল। বলিলাম : “পুলিশে সংবাদ দিয়েছি, তুমি আমার বাড়িতে আছ, কাজেই তোমার উপর তাদের সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক। কি করব বল। জিনিষ যা যাবার তা ত গিয়েইছে। তুমি এতকাল আছ, চলে গিয়ে আর কি করবে।” লোকটি চুপ করিয়া বসিয়া আরও কিছুক্ষণ কাদিল । তারপর ধীরে ধীরে নীচে নামিয় গেল। বিষয়টা আমার কাছে একট রহস্য হুইয়াই ছিল। কোনদিন যে আবার চুরি যাওয়া জিনিষ ফিরিয়া পাইব এমন আশা পোষণই করি নাই, কিন্তু বড় আশ্চৰ্য্য উপায়ে সেগুলি ফিরিয়া পাইলাম। সেদিন শহরে কি একটা উৎসব ছিল। কাশীতে উৎসবের অভাব নাই । বিশেষ তিথি থাকলেই লোকের মনে উৎসবের আনন্দ দেখা দেয়, মেল বসে, ভিড় জমিয়া যায়। সেদিনও দশাশ্বমেধ ঘাটে মেল বসিয়াছিল। দলে দলে লোক পৰ্ব্ব উপলক্ষে যার যা সাধ্যমত ভাল পোষাক পরিয়া যাওয়াআসা করিতেছিল। আমি এক্কা করিম মেলা দেখিয়৷ ফিরিয়া আসিতেছিলাম, এমন সময় ভিড়ের মধ্যে দেখিলাম একটি নিম্নজাতীয় যুবতী স্ত্রীলোক আমার সম্মুখ দিয়া কয়েকজন সঙ্গিনীর সহিত যাইতেছে, আশ্চর্যের বিষয়, তার হাতে আমার স্ত্রীর চুরি-যাওয়া চুড়িগুলির মতন একজোড়া চুড়ি আর পরণে সেই রকমের একখানা শাড়ী। আমার মনটা কেমন করিয়া উঠিল। এই শ্রেণীর স্ত্রীলোকের পক্ষে অমন বিলাস সম্ভব নয়। সে এরূপ শাড়ী ও চুড়ি পাইল কোথায় ? কিন্তু তৎক্ষণাৎ কিছু করিতে পারি না। সেইজন্য একা হইতে নামিয়া তার অনুসরণ করিতে লাগিলাম। সে আমাদের মহল্লার দিকেই অগ্রসর হইতেছিল। অবশেষে সে আমার বাড়ির পাশ্ববর্তী বাগানের অপর দিকের একটি বাড়িতে ঢুকিল। সমালো সে বানা হইতে ফিরিয়া আদি বলি–“বাৰু আমি তৎক্ষণাৎ বাড়ি ফিরিয়া আসিলাম ও স্ত্রীকে সযন্ত.

  • s ود سصحيط9