পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

web-8 নন্দ গুইয়া ছিল, তাহাকে নাড়া দিম কহিল, “এসময়টা গুয়ে পড়ে না থেকে ঘুরে এসে না একটু ?” নন্দ বলিল, “ আজ শরীরটা কেমন ভাল লাগছে না।” অজয় সে-রাতে খাততে গেল না। বাকী পয়সা-কটাকে যথাসাধ্য সে বঁাচাইয়া চলিতে চায়। তিনদিন উপবাস করিয়া একবেল থাইলে আরও তিনদিন উপবাস করিবার শক্তি সে লাভ করিবে, হয়ত ছয়দিনের দিন তাহার কিছুএকটা উপায় হইবে। আকণ্ঠ কলের জল পান করিম আসিয়া সে আবার নাটক লইয়া বসিল । নন্দ সচরাচর যেসময় খাইতে যায় সেই সময়ে একবার বাহিরে বারান্দায় নিঃশ্বাস লইতে আসিম দেখিল, এককোণে অন্ধকারে গোজ হইয়া সে বসিয়া আছে। ডাকিল, “নন্দ।” নন্দ সাড় দিল না। কাছে গিয়া তাহার হাত ধরিম অজয় তাহাকে টানিম্ন তুলিল, কহিল, “এখানে বসে কি করছ ?” নন্দ কহিল, “কিছু না।” তাহার কণ্ঠস্বরে কি ছিল, “ঘরে এসে, বলিয়া অজয় তাহার হাত ধরিয়া টানিম্ন ঘরে লইয়া আসিল । বাতির আলোয় তাহার মুখ ভাল করিয়া দেখিয়া বলিল, “সেদিন তোমাকে বলেছিলাম মনে আছে, যে, এ-সমস্ত চলবে না, তুমি এ রকম করলে আমি চলে যাব ?” - ভয়ে নন্দের শুষ্ক মুখ আরও শুকাইয়া একেবারে এতটুকু হইয়া গেল। জড়িত কণ্ঠে অৰ্দ্ধস্কুট স্বরে কহিল, ”কথা দিচ্ছি আর কখনও করব না।” অজয় বলিল, “পুরুষ মানুষকে দুখভোগ করতে হয়, দুঃখভোগ করতে দিতে হয়। বিশেষতঃ এই দুর্ভাগা দেশে দুঃখের তপস্তাই ত আমাদের একমাত্র তপস্তা, আর কি আমাদের করবার আছে ?” নন্দ নীরবে মাথা নত করিয়া রহিল। অজয় বলিল, “শোনো নন্দ। দুঃখ তুমি আমার থেকে কম করছ না, আমি তা সারাক্ষণই দেখছি, যতটা চোখে দেখা যায়। তার বেশী যেটা সেটারও অনেকখানিকে অনুভব করছি। একএকবার মনে হয়, নিজের জন্তে না হোক, তোমারই মুখ চেয়ে আমার ব্লভভজ করি। যেমন করে হোক, যে-কোনো কাজ নিয়ে হোক, ছুজনে দুবেল পেট ভরে খাবার ব্যবস্থা করি। কিন্তু বিমান কি বলত তোমার মনে আছে ত? ষে কাজ আমার R 21-II-Il ; SOBO নয় তা যদি আমি করতে যাই ত সে কাজ সত্যিই যার এমন একজন মানুষকে আমি বঞ্চিত করব। দেশের অল্পসমস্ত আজ এমনি – যে-কাজের শক্তি এবং যোগ্যতা পৃথিবীতে আমারই একমাত্র আছে, তা যে কি তা আমি আজও জানি না। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কৰ্ত্তব্য ছিল অন্ততঃ সেইটে আমাকে জানিয়ে দেওয়া, তা সে দেয়নি। নিজের চেষ্টায় তা আমাকে এখন জানতে হবে। যদি তা করতে গিয়ে আমাকে অনাহারে মরতে হয়, তবু জানব মরা ছাড়া আমার উপায় ছিল না। দেশের লোক জানবে, আমার সমস্ত নিয়ে নিজের প্রতি আমি খাটি ছিলাম, সেই অপরাধে আমার জন্যে তারা মৃত্যুদণ্ড ব্যবস্থা করেছে। অবস্থাটাকে তারা অন্ততঃ উপলব্ধি করবে। ক্রমাগত নিজেদের ফাকি দিতে গিয়ে আমরা সকলে মিলে দেশ-বিধাতাকে ফাকি দিচ্ছি. সত্যকে আড়াল ক’রেই প্রতিকারের সম্ভাবনাকে বেশী করে দূরে সরিয়ে দিচ্ছি। আমরা মরেও যদি সত্যকে সকলের চোখে ধরিয়ে দিয়ে যেতে পারি ত সেই মৃত্যুই কি আমাদের জীবনধারণকে সার্থক করবে না ?” অজয়ের মুখে মৃত্যুর কথা এরূপ ভাবে নন্দ পূৰ্ব্বে আর কখনও শোনে নাই। ভয়ের উত্তেজনায় তাহার মুখ বিবর্ণ হইয় গেল। বেচারার অবস্থা দেখিয়া অজয় সত্যই অমৃতপ্ত হইল। মৃত্যুকে একেবারে সম্মুখে করিয়াই ত বেচার বসিয়া আছে, অনাহার ও অস্বাস্থ্য মিলিয়া তাহার জীবনের সব-কয়টি গ্রন্থিই শিথিল করিয়া দিয়াছে, পৃথিবীতে এমন আপনার জন তাহার কেহ নাই যে একমাত্র হৃদয়ের আবেগ দিয়া, স্নেহের আবেষ্টন দিয়া মৃত্যুর সেই করাল রূপকে তাহার ভয়াকুল দৃষ্টি হইতে আড়াল করিয়া রাখিতে পারে —ইহাকে মৃত্যুমন্ত্র শোনাইয়া আর কি হইবে ? তাহাকে প্রবোধ দিবার জন্য নিজের সম্মুখে টানিয়া জানিয়া বলিল, “খেতে যাওনি এখনো ?” নন্দ মাথা নাড়িয়া জানাইল, না। অজয় বলিল, “আজকের মতো আমাদের প্রতিজ্ঞ থাকুক। আর তিনদিন পরে তোমার পরীক্ষা, এখন উপোল দিলে চলে ?” * नक “हे थषभ चखरग्रज्ञ क्षीब्र भवशिष्ठ कब्रिव्र बनिण, “জাল আমি কিছুতেই খেতে যেতে পারব না।"