পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ় - - মূলক পরীক্ষা আগেকার মত কৃতকাৰ্য না হইতে পারে। বাঙালী জাতির বুদ্ধি কমিয়া যায় নাই। - তাহার একরকম প্রমাণ আগে একাধিকবার দিয়াছিলাম, আধুনিক অন্ত প্রমাণ একটা দিতেছি। - জামানদের কাছে বাঙালীও যা, অন্য ভারতীয়েরাও তাই। বাঙালীদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করিবার তাহাদের কোন কারণ নাই। ডয়েশ (জামান) একাডেমির ইণ্ডিয়া ইন্সটিটিউটে ভারতীয় গ্র্যাজুয়েট বিদ্যার্থীদিগকে ভিন্ন ভিন্ন জামান বশ্ববিদ্যালয়ে পড়িবার জন্য ছয়টি বৃত্তি দিবেন বলিয়৷ আবেদন চাহিয়াছিলেন। আবেদকদিগের মধ্যে যে ছয় জনকে বৃত্তি দেওয়া হইয়াছে, র্তাহাদের মধ্যে তিন জন বাঙালী। আবেদন করিয়াছিলেন সকল প্রদেশের গ্র্যাজুয়েট বিদ্যার্থীরা। ভারতবর্ষীয় গ্রাজুয়েট বিদ্যার্ঘদিগকে এইরূপ বৃত্তি আগে আগেও দেওয়া হইয়াছিল। র্তাহাদের মধ্যে র্যাহাদের কাজে ভিন্ন ভিন্ন জামান বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষেরা অধিক সন্তুষ্ট হইয়াছেন, এইরূপ দশ জনকে ডক্টর উপাধি পাইবার নিমিত্ত অধ্যয়নে সমর্থ করিবার জন্য আরও কিছু কাল সাহায্য দেওয়া হইবে । এই দশ জনের মধ্যে পাঁচ জন বাঙালী । ভয়েশ (জামনি ) একাডেমির ইণ্ডিয়া ইন্সটিটিউটের বৃত্তিপ্রাপ্ত যে তিন জন ভারতীয় গ্র্যাজুয়েট গত সেমেষ্টারে ( বর্ষাৰ্দ্ধে ) ডক্টর উপাধি পাইয়াছেন, তাহারা তিন জনেই বাঙালী । এই সকল তথ্য হইতে ইহা মনে হয় না, যে, বাঙালী ছাত্রছাত্রীদের বুদ্ধি কমিয়া গিয়াছে। মানসিকশক্তিসাপেক্ষ যেকোন কাজ করিবার শক্তি অন্ত জাতিদের মত বাঙালীর আগেও ছিল, এখনও আছে। কিন্তু বুদ্ধির স্বপ্রয়োগ চাই এবং পরিশ্রম করা চাই। পরিশ্রম না করিলে শুধু বুদ্ধি ও প্রতিভার জোরে বড় কিছু করা যায় না । বাঙালীদের অন্য দিকেও শক্তি আছে। কোন কোন খেলায় বাঙালীর আগে খুব নাম করিয়াছিল। এখনও স্বাস্থ্যের সৰ্ব্ববিধ নিয়ম মানিয়া চলিয়া পরিশ্রম ও অভ্যাস করিলে, অন্যেরা ৰাহা করিতে পারে, বাঙালীরাও তাহা করিতে পারে। সেদিকে মন না দিয়া আজকাল গুনিতেছি কোন কোন বাঙালী খেলার দল জিতিবার লোভে অন্য প্রদেশ হইতে পেশাদার -" * - খেলোয়াড় আনিয়া নিজেদের দলভুক্ত করিতেছে। ইহা বাঙালী Ree ঠিকৃ নয়। সকল প্রদেশের লোকের খেলায় এবং অন্য সব বিষয়ে উন্নতি করেন, ইহা খুবই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু যাহা বাঙালীর দল বলিয়া পরিচিত, তাহাকে বাঙালীর দল রাখিয়াই তাহার' উন্নতি করা উচিত। যদি পটলডাঙার একটা দল থাকে, কিন্তু তাহাতে ক্রমে ক্রমে পাটনা বা পেশাওয়ারের খেলোয়াড় জোটান হয়, তাহু হইলে তাহার পটলডাঙা নামটাও বদলান উচিত । ব্যবসা-বাণিজ্যে বাঙালী বৰ্ত্তমান সময়ে, অন্য প্রদেশের কথা দূরে থাক, বাংলা দেশেরই ব্যবসা-বাণিজ্যে বাঙালীর স্থান অতি সামান্য। বড় বড় কারখানা ও সওদাগরীতে ত বাঙালীর স্থান সামান্য বটেই, ছোট ছোট ব্যবসাও বঙ্গের বাহিরের লোকেরা আসিয়া অনেক পরিমাণে দখল করিয়া বসিয়াছে এবং ক্রমশঃ আরও দখল করিতেছে। ইহা হইতে অনেকে মনে করে, ব্যবসা-বাণিজ্যে বাঙালীর বুদ্ধিই কম। কিন্তু বৰ্ত্তমান সময়ে বঙ্গে ব্যবসাবাণিজ্যে বাঙালীর অপ্রাধান্য ব্যবসা-বুদ্ধির অভাব জন্য নহে, ইহার অন্য কারণ আছে। মানুষের মস্তিষ্কট ব্যবসাবুদ্ধির একটা খোপ, পরীক্ষা পাস করিবার একটা খোপ, রাষ্ট্রনীতি বুঝিবার একটা খোপ, ধৰ্ম্ম ও সমাজ-সংস্কারের উপায় আবিষ্কারের একটা খোপ—এই রকম আলাদ আলাদা নানা খোপে বিভক্ত নয়। বুদ্ধিশক্তিটা একই তাহার অনুশীলন ও প্রয়োগ নানা দিকে হইতে পারে। অবশ্য ইহা ঠিক বটে, যে, এক এক জন মানুষের শিক্ষ সাহচৰ্য্য বংশানুক্রম প্রভৃতি কারণে বুদ্ধিটা যে দিকে সহজে যায় ও খেলে, অন্য এক জন মানুষের বুদ্ধি সেই দিবে সহজে তত ন-যাইতে ন-খেলিতে পারে। কিন্তু একট দেশের সমগ্র অধিবাসীদের বুদ্ধি একটা বিশেষ দিকে খেলিতেই পারে না—এমন হয় না । গত শতাব্দীর ষাটের কোটায় জাপানের নূতন যুগ আরম্ভ হইবার পূৰ্ব্বে সেখানে বৈগুবৃত্তি অর্থাৎ ব্যবসাবাণিজ্য অবজ্ঞাত ছিল, জাপানী অভিজাতদের মধ্যে ব্যারন শিবুশাওয়া প্রথমে বৈশুবৃত্তির দিকে বেfাকেন। তাহার পর এখন এক শতাব্দী যাইতে ন-ধাইতেই জাপানের বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতায় নেপোলিয়ন ষে-জাতিৰে