পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ বিংশ শতাব্দীর রাষ্ট্রীয় চিন্তাধারা 8VS যতদিন পর্য্যন্ত এইরূপ সকল শ্রেণীর শ্রমিকের সমবেত ধৰ্ম্মঘট উপস্থিত না করা যায় ততদিন পৰ্য্যস্ত শ্রমিকেরা যেন মন না দিয়া ধনিকের অধীনে কলের কাজ করিয়া যায়। তাহারা যেন সকল প্রকারে নিয়োগকারীকে ফাকি দিতে চেষ্টা করে, কল বিগড়াইয়া দিতে যত্নবান হয়, উৎপন্ন দ্রব্য যাহাতে খরিদ্ধারের পছন্দসই না হয় তাহার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখে। এইরূপে ধনিকের ক্ষতি করিতে থাকিলে তাহারা বাধ্য হইয়া উৎপাদনের উপায়সমূহের উপর কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করিবে। কিন্তু উৎপাদক-সঙ্ঘ-তন্ত্রবাদিগণ সাধারণ ধৰ্ম্মঘটের দ্বারা কেমন করিম যে ধনসম্পত্তির কর্তৃত্ব শ্রমিকদের হাতে আসিবে সে-সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণা পোষণ করেন না । উৎপাদক-সঙ্ঘের হাতে যদি সকল ক্ষমতা ন্তস্ত হয় তবে খরিদ্ধারদের উপর যে অত্যাচার হইবে না তাহা কে বলিতে পারে ? উংপাদক-সঙ্ঘ-তম্ববাদ ফরাসী দেশেই সমধিক প্রভাবশীল হইয়া উঠিয়াছে। ফরাসী চিন্তাধীর ( georges Sorel, Edmund Berth e Paul Louis est NCSA coff-F : নৈগম-সমাজতন্ত্রবাদ সমুহতন্ত্রবাদ ও উৎপাদক-সঙ্ঘ-তন্ত্রবাদের বিরোপের সামঞ্জস্য ও সমন্বয়ের উপর নৈগম-সমাজতন্ত্রবাদ বা (iuildSocialism-এর প্রতিষ্ঠ । এই মতের প্রধান পরিপোষক ইংলণ্ডবাসী এস্ জিহবসন ও জি-ডি-এইচ. কোল। ইহার কেবলমাত্র উৎপাদকের স্বার্থ দেখেন না, খরিদ্ধারের স্বার্থের প্রতিও মনোযোগ দিয়াছেন। শ্রমিকগণ নিজ নিজ শিল্প অনুসারে নিগমে সঙ্ঘবদ্ধ হইয়া উৎপাদনের নিয়ন্ত্রণ করিবে ও রাষ্ট্র খরিদারদের প্রতিভূস্বরূপ উৎপাদনের যন্ত্র, ধন ও ভূমির উপর স্বামিত্ব স্থাপন ও রক্ষা করিবে। শিক্ষার, ধৰ্ম্মের, ধন-উৎপাদনের, খেলাধুলার ও মেলামেশার প্রতিষ্ঠানগুলি নিজ নিজ ব্যাপারে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব করিবে। রাষ্ট্র এই সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত হইবে ও একান্ত প্রয়োজন ব্যতিরেকে অন্তান্ত প্রতিষ্ঠানের উপর হস্তক্ষেপ করিবে না। ইহাদের মতে রাষ্ট্র ট্রেড-ইউনিয়ন, হরিসভা, বিদ্যালয়, ফুটবল ক্লাব প্রভৃতির ন্যায় সমাজের একটি eडिप्लेन भोज–किस्त्र ७ कक्षांज नामाजिक थन्जेिन नश् । স্বতরাং রাষ্ট্র সৰ্ব্বশক্তিমানত্ব দাবি করিতে পারে না ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের উপর কর্তৃত্ব করিতে পারে না । কোন কোন নৈগম-সমাজতন্ত্রবাদী রাষ্ট্রের হাতে খরিদ্ধারদের স্বাণরক্ষার ভারও দিতে চাহেন না। তাহারা উৎপাদকদের সঙ্ঘের ন্যায় খরিদারদের সজা হওয়া প্রয়োজন মনে করেন। রাষ্ট্রের হাতে কেবলমাত্ৰ কৰ্ম্মচারীদের কার্য্য পৰ্য্যবেক্ষণ, আন্তর্জাতিক সম্বন্ধ পরিচালন, শিল্পকলা ও শিক্ষার উন্নতিবিধান কায্য ন্যস্ত থাকিবে। শ্রমজীবী ও মস্তিক্ষজীবী ব্যক্তিদিগের এমবিভাগ অনুসারে যে-সকল নিগম থাকিবে তাহারাই বেতন, কাৰ্য্য করিবার সময়, প্রণালী ও উৎপন্ন দ্রব্য ব| বিষয়ের মূল্য নিরূপণ করিয়৷ দিবে। বৰ্ত্তমান রাষ্ট্র একদিকে যেমন সমস্ত ধনসম্পত্তির স্বামিত্ব অর্জন করিয়া শক্তিশালী হইবে, অন্যদিকে তেমনি অর্থনৈতিক ধৰ্ম্ম ও শিক্ষা সঙ্গন্ধীয় বিষয়ের কর্তৃত্ব পরিহার করিয়া দুৰ্ব্বল হইয় পড়িবে। এক সৰ্ব্বশক্তিমান গণতন্ত্রের পরিবর্তে দুইটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হইবে-এক রাষ্ট্রীয়, অপর অর্থনৈতিক। এইরূপ ব্যবস্থার ফলে সমাজ-জীবনের বিরোধ ও অসামঞ্জস্য, দৈন্য ও দুর্দশ, কুসংস্কার ও বর্বরতা তিরোহিত হইবে বলিয়া আধুনিক অনেক চিন্তানায়ক বিশ্বাস করিয়া থাকেন। শ্রমিকগণ প্রভূর বেতনভুক্ ক্রীতদাস মাত্র না হইয়া, নিজ নিজ কাযে বিচারবুদ্ধির ব্যবহার করিতে পারিবে ও কারুশিল্পের সৌন্দৰ্য্যসাধনে যত্নবান হইবে। মাকুমঁ যে ধনিকানধাতনপ্রস্থত রাষ্ট্রের দ্বারা শ্রমিকের সর্বনাশসাধনের কথা বলিয়াছেন তাহ অন্তৰ্হিত হইবে, তাহার স্থলে ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশের উপর প্রতিষ্ঠিত, পরস্পরের সেবা ও সাহায্যের দ্বার সংবদ্ধ জনমতনিয়মিত রাষ্ট্রের স্বষ্টি হইবে । এই মতের বিরোধীগণ বলিয়া থাকেন যে, রাষ্ট্রের একাধিপত্য নষ্ট হইয় গেলে সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগ-সঙ্গন্ধ স্থাপিত হইবে কিরূপে এবং পরস্পরের মধ্যে বিরোধ মিটাইবে কে ? বিভিন্ন প্রকারের প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অনুসারে রাষ্ট্রে তাঁহাদের প্রতিনিধি লইবার কথা নৈগম-সমাজতন্ত্রবাদীরা বলিয়া থাকেন ; কিন্তু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব লইয়৷ যেবিবাদ উপস্থিত হইবে তাহা মিটাইবে কে ? আমার মনে হয়, এই সব ছোটখাট বাধা সামাজিক সদিচ্ছাস্বারা দূর করা অসম্ভব নহে। পরে দেখাইব যে, আধুনিক রাষ্ট্র কিংপরিমাণে