পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Č3е

    • 21-Tol of

জলে স্থলে বনে শৈলে গ্রামে ও নগরে ছলে বলে প্রতি নীড়ে, বিবরে কোটরে গুহা-গর্ভে পণশালে প্রাসাদের মাঝে যেথা যত অত্যাচার নিত্যকাল রাজে,— যেথা যত শতাব্দীর পুঞ্জিত অন্যায় বাৰ্দ্ধক্যের দাবি করে,—জীবন-বন্যায় তাদের ভাষায়ে দেব যে কপটরে পারি। রাষ্ট্রে প্রজা মুক্তি পাবে, সংসারেতে নারী ; জগতের পশুপার্থী মানব-শাসনে ভোগ্য হয়ে আছে যারা জড়যন্ত্র সনে— তাহাদের মুক্তি দেব। এই বস্থধার সন্তান যে যেথা আছে সবারে উদার উন্মুক্ত আকাশতলে পথ ছাড়ি দিয়৷ মানুষ যেদিন তার শুভ বুদ্ধি নিয় নিখিলে রহিবে জাগি ; স্নেহস্পর্শে তার শাস্ত হবে সৰ্ব্বপ্রাণী, সকল ব্যথার যেদিন সমাপ্তি হবে ধরিত্রীর বুকে,— সে-দিনের পথ চাহি মোরা হাসিমুখে আজিকার এ দুদিনে দীন কামনায় উদ্বেল সাগরবক্ষে ক্ষুদ্র জীর্ণ নায় দুঃসাহসে দিছি পাড়ি ; কোথা এর শেষ ; কোথায় নিশ্চিহ্ন হবে কে দিবে উদ্দেশ ? আমি ধরিত্রীর পুত্র, মোরে দেছে ধরা আপন স্বরূপে তার মাতা বস্কন্ধর স্থদুর অতীতে ; হায় সেদিন কে জানে,— এত বড় সৌভাগ্যের দুরূহ সম্মানে সহ্য করা কি কঠোর ! কত বড় দাবি স্নেহের পশ্চাতে রহে । আজ তাই ভাবি, সেদিন পড়ে নি কেন এ-কথাটি মনে ? আজ শ্রাস্ত জীর্ণ তনু শিথিল যৌবনে ; বক্ষে আশা আছে কিন্তু দেহে নাই বল ; মধ্য দিনে মধ্য পথে বিকল বিহবল ; SనOBO লক্ষকোটি লাঞ্ছিতের তপ্ত দীর্ঘশ্বাসে অতীতের স্থখ-স্বপ্ন মান হয়ে আসে ; ক্ষুদ্র স্বার্থ সসঙ্কোচে পাতালে লুকায়। আজিকে শীতের বনে যে ফুল শুকায় আমি তার সহযাত্রী, সহোদর ভ্রাত ; তার ভরে যেই শয্যা পাতিয়াছে মাতা তারি প্রাস্তে তারি মত মোর ঠাই হবে। যাহারা নিফল হ’ল যুগে যুগে ভবে,-- পরম প্রয়াসে গেল দুটি দণ্ড দিয়৷ অক্ষুট স্বরভি, লোকে মুহূৰ্ত্তে শুধিম৷ তাদের দানের ঋণ ক্ষণিক প্রীতিতে যেমন ফেলিয়। দেছে চির বিস্মৃতিতে--- তেমনি আমার ভাগ্যে আছে তাহ জানি . সংসারের বিস্মরণে ধরণী কল্যাণী শুধু মোরে ভুলিবে না, এই গৰ্ব্ব মম। সংসারে যে যত তুচ্ছ তত প্রিয়তম সেই যে মায়ের কাছে,—যে যত আহত মা তাহারে করপদ্ম বুলাইয়া তত মধুর সাম্ভন দেয় ; যে যত নিখল মা তত মুছায়ে দেয় তার আঁখিজল । যে নেছে আপন করি মার অপমান মা তারে আপন হাতে দানিবে সম্মান ; শ্রাস্ত দেহে সন্ধ্যাবেল ঘুমে যদি ঢুলে মা তাহারে ভালবেসে বক্ষে লবে তুলে । এই মোর অহঙ্কার আমি যদি মরি রব তবে জননীর সর্ব চিত্ত ভরি – রাত্রির আঁধারে তার দিনের আলোকে । মনুষ্য যদ্যপি কেহ ভালবেসে ওকে পূজা দেয়, কানে কানে দিব তারে কহি “মার চোখে অশ্রুবিন্দু আজও গেছে রহি, এখন উৎসব মিথ্যা প্রণয় দুরাশা ৷” এই মোর শেষ কাজ, এই মোর আশ ॥