পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫১২ তাহার পর হিন্দু কলেজ স্থাপিত হইল। হিন্দু কলেজ হইতে সিনিয়র ডিপ্লোমা এমন কি জুনিয়র ডিপ্লোমা পাইলেও অমনি তৈয়ারী চাকরি। তারপর ১৮৫৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বষ্টি হইল, এমন কি সঙ্গে সঙ্গে আইন বিভাগও খোলা হইল। কিছুকাল পাস করা ছেলেদের চাহিদা বাড়িয়া গেল, কারণ কোম্পানীর রাজত্বের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে নানা বিভাগও খুলিতে আরম্ভ হইল। সরকারী দপ্তরখানার কলেবর বৃদ্ধি ও কৃষি, পুলিস, অরণ্য ইত্যাদি বিভাগেরও স্বষ্টি হইয়া এই সমস্ত পাসকর ছেলেদের দ্বার। পরিপূর্ণ হইতে লাগিল। আদালতে আবার পাৰ্শীভাষা স্থলে ইংরেজী ভাষা প্রবর্তিত হঠল। বাংলা দেশে সৰ্ব্বাপেক্ষ ইংরেজী ভাষার বহুল প্রচার। এই সময় বিহার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল পশ্চাৎপদ ছিল । কাজেই যখন বাংলা দেশ এইসব মসীজীবী দ্বারা ছাইয়া গেল, তখন ঐ সব প্রদেশ হইতে ইহাদের ডাক পড়িল । ঝুড়ি ঝুড়ি উপাধিধারী বাঙালী আবার সেইদিকে উৰ্দ্ধশ্বাসে ছুটিল। লর্ড ডালহৌসীর সময়ে অযোধ্য, ঝাসী, পঞ্জাব প্রভৃতি অধিকৃত হইলে শিক্ষিত বাঙালী পঙ্গপালের ন্যায় সেই দিকে ধাবিত হইল, এবং এ সমস্ত যখন কানায় কানায় পূরিয়া গেল তখন ১৮৮৫ খৃষ্টাব্দে ব্ৰহ্মদেশ জয় করা হইলে শিক্ষিত বাঙালীর আবার সেইদিকেও গমন করিল। এই নূতন অধিকৃত ব্ৰহ্মদেশেও বাংলা দেশের ন্যায় নূতন দপ্তরখানা, আইন আদালত ইত্যাদির স্বষ্টি হইল। এই সময় ব্রহ্মদেশবাসিগণ ইংরেজী লেখাপড়ার ধার ধারিত না, কাজেই অপর প্রদেশের লোকেরা প্রায় সমস্ত চাকরি একচেটিয়া করিয়া বসিল । বাঙালী তখন বুঝিল না, এর পরিণাম কি ভীষণ। এখন এক উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে পাচ-ছয়টা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইয়াছে। তাহ ছাড়া দিল্লী, পঞ্জাব ও ব্রহ্মদেশেও বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাহার অন্তভুক্ত অনেক স্কুল ও কলেজের স্বষ্টি হইয়াছে। এই সব বিশ্ববিদ্যালয় এখন বাংলার সহিত পাল্লা দিয়া গ্রাজুয়েট উদগীরণ করিতেছে, কাজেই বাঙালীর প্রতি বিদ্বেষবহ্নিও প্রজ্জ্বলিত হইয়াছে। তাহারা তারস্বরে বলে বিহার প্রদেশ বিহারীদের জন্ত, পঞ্জাব পঞ্জাবীদের জন্ত, ব্ৰহ্মদেশ ব্ৰক্ষ্মীদের

  • छछ, देख्ञांनि ।

SOBC ১৯১১ সালে যখন বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদ রহি হইল তখন রাজধানী কলিকাতা হইতে দিল্লীে স্থানান্তরিত হইল। কাজেই ভারত সরকারের দপ্তরখানা বড় বড় কৰ্ম্মচারিগণ দিল্পী ও সিমলায় আসি হাজির হইলেন । এখন আর দুর্দশার সীমা নাই । সম্প্রীি আমার নয়াদিল্লীতে যাইবার প্রয়োজন হইয়াছিল। সেখান কার প্রবাসী বাঙালীগণ ( যাহার মধ্যে শতকরা ৯৯ জু কেরাণী শ্রেণীভুক্ত ) বাঙালী স্কুলের প্রাঙ্গণে আমাকে এক অভিনন্দন-পত্র প্রদান করিয়াছিলেন। আবাল-বৃদ্ধ-বনিত সংখ্যায় প্রায় আড়াই হাজার তিন হাজার সেখানে সমবেত হইয়াছিল। আমি বক্তৃতাপ্রসঙ্গে বলিলাম যে, এই সকল নব যুবকের উপায় কি হইবে ? - এখন বুঝা যায় যে, র্যাহার একবার কলেজে পড়িয়াছেন তাহাদের দফা রফ। প্রায়ই দেখা যায় র্তাহারা আঠার-কুড়ি পচিশ টাকায় শহরে থাকিয়া সামার কেরাণীগিরি দ্বারা জীবিক নিৰ্ব্বাহ করেন। কিন্তু কিছুতে পাড়াগায়ে বাইতে চাহেন না । আমি জিজ্ঞাসা করি যে-স কলেজের ছাত্রের এই প্রকার রাজপুরীর মত হোষ্টেৰে বাস করে তাহদের মধ্যে কয়জনের দেশে ঐরুপ বাসভব আছে ? পাড়াগায়ে ধাইতে চাহে না তাহার কারণ এi যে, অধিকাংশ স্থলে তাহদের বাপ-খুড়োরা এখনও বেশ সাদাসিধা ভাবে নিজ নিজ ব্যবসা চালাইয়া বেশ ভূ-পয়স রোজগার করিয়া থাকেন । যশোহর এবং খুলনার দৌলত পুর ও বাগেরহাট অঞ্চলে এখন অনেক বারুজীব আছেন যাহারা পানের ব্যবসা করিয়া বেশ সঙ্গতিপঃ হইয়াছেন। এমন কি, এই শ্রেণীর দশ-বার জন পৈতৃৰ ব্যবসা অবলম্বন করিয়া নিজ বুদ্ধিবলে জমিদারাও করিয় গিয়াছেন। কিন্তু এখন দেখা যায়, কলেজের ধাপ মাড়ান কেন, উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় অথব তৃতীয় শ্রেণী পৰ্য্যন্ত পড়িলে তাহদের মাথা বিগড়াইয়া যায় এবং তাহারা ঘাড়ের গোবরে পরিণত হয়। কেহ কে: আমাকে বলিয়া থাকেন, আপনি কলেজের ছেলেদের উপর এত দোষারোপ করেন কেন ? কলেজে মাত্র না-হয় পচিশ ত্রিশ হাজার ছাত্র অধ্যয়ন করে, কিন্তু বাংলা দেশে আরও ষে লক্ষ লক্ষ ছেলে আছে তাহারা ত ব্যবসা-বাণিজ্য