পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ সময় বিষম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমেরিকায় আইন করিয়া তুলার ওজন ও শ্রেণী যেমন ঠিক করিয়া দেওয়া হইয়াছে সেইরূপ কোন আইন বাংলার পাট সম্বন্ধে তাহারা করিতে বলেন। ক্রেতা ও বিক্রেতায় কোন বিরোধ হইলে আইনে গঠিত সালিসী সমিতি ডাহার নিপত্তি করিবে । কৃষি-মাল বেচিবার মুনিয়ন্ত্রিত কোন বন্দোবস্ত না থাকায় দুনিয়ার বাজারে কিরূপে ভারতবর্ষ হুটিয়া যাইতেছে, ভারতবর্ষ কৃষি-প্রধান মহাদেশ হইলেও বেচিবার বিধিবদ্ধ ব্যবস্থার অভাবে পৃথিবীর বাজারে আমাদের কৃষি-পণ্যের স্থান কেন পিছাইয় পড়িতেছে, মিষ্টার মাকডুগাল তাহার মন্তব্যে এই বিষয়টি ভাল করিয়া আলোচনা করিয়াছেন। মাল ভাল দামে ভাল বাজারে বেচিতে না পারিলে কেবল উৎপন্ন করিয়াই কেহু সম্পদশালী হইতে পারে না। ভারতবর্ষও পৃথিবীর বাজারে প্রতিষ্ঠালাভ করিতে না পারিলে চিরদিনই দরিদ্র হইয়৷ থাকিবে। তিনি আরও বলেন,—ভারতবর্ষের সর্বাপেক্ষ বড় সমস্ত তাহার ক্লষকের অবস্থার উন্নতি করা । ইহা করিতে পারিলে দেশের দারিদ্র্যও ঘুচিবে সঙ্গে সঙ্গে সমাজজীবনও উন্নতি লাভ করিবে। ইহা করিবার মাত্র দুইটি পথ আছে : একটি সমবায়—ব্যাপক অর্থে ; অন্তটি কৃষিজাত পণ্য বেচিবার জন্য স্বনিয়ন্ত্রিত বাজার। পাট বেচিবার স্বব্যবস্থার জন্য ম্যাকডুগাল সাহেব যে বিশদ প্রস্তাব করিয়াছেন তাঁহাতে সমবায় নীতির বিশিষ্ট স্থান আছে। বিক্রয়ের স্বব্যবস্থার সঙ্গে মাল চলাচলের ভাল বন্দোবস্ত, যানবাহন ও পথঘাটের সুবিধ, রেলের মাশুল হ্রাস, আইনদ্বারা নিয়মিত বাজার ও হাট প্রতিষ্ঠা, সৰ্ব্বত্র এক ওজনের প্রচলন, কৃষিজাত পণ্যের শ্রেণী বিভাগ করিয়া উংকৃষ্ট মাল বাজারে পাঠাইবার ব্যবস্থা, ভেজাল নিবারণ, সমবায়ু বিক্রয় সমিতির প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত। কৃষি-কমিশন ও বিভিন্ন প্রাদেশিক ব্যাঙ্কিং তদন্তু কমিটি এ সকল বিষয়ে যে-সব প্রস্তাব করিয়াছেন ভারতীয় ব্যাঙ্কিং কমিটি তাহার অনেকগুলি সমর্থন করিয়াছেন। রোমে আন্তর্জাতিক কৃষি প্রতিষ্ঠান (International Institute of Agriculture) নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। এই প্রতিষ্ঠান ১৯২৯-৩৪ সালে বিভিন্ন দেশের কৃষির অবস্থা সম্বন্ধে এক পুস্তক সম্প্রতি প্রকাশ বাংলার পাটচাৰায় সমস্তা ৫২৫ করিয়াছেন। আটাশটি উন্নত জাতির কুধি-বাবস্থার কথা এই পুস্তকে বর্ণিত হইয়াছে। রুষি ও কৃষকের উন্নতির জন্য এই সকল দেশে যাহ করা হইয়াছে তাহার বর্ণনার পরে গ্রন্থে এই এই কথা লেখা হইয়াছে যে, বিভিন্ন দেশে অধুনা কৃষির উন্নতির জন্য যে নীতি অবলম্বন করা হইয়াছে তাহার মূল স্বত্র কৃষিজাত পণ্যের বিক্রমের স্ববন্দোবস্ত করা । বিক্রয়ের ভাল ব্যবস্থার উপরে রুষির উন্নতি কতটা নির্ভর করে, ইহা হইতেই প্রমাণিত হয়। অন্য দেশ সম্বন্ধে ইছা যেমন সত্য বল বাহুল্য ভারতবর্ষ সম্বন্ধেও ইহ৷ সেইরূপ সত্য। পাট বিক্রয়ের সুব্যবস্থা সরকারী চেষ্টা ও যত্ন ছাড়া সম্ভবপর নহে। পাশ্চাত্য বড় বড় দেশেও অনেক স্থলেই প্রধানতঃ সরকারের চেষ্ট ও সাহাযেই রুষি পণ্য বিক্রন্থের ভাল ব্যবস্থা করা সম্ভব হইয়াছে। 象 কৃষি-মাল ও কৃষিজাত খাদ্যদ্রব্যাদি ক্রয়-বিক্রন্থের জন্য আমেরিকার যুক্ত রাজ্যে এক বিশদ আইন প্রস্তুত হইয়াছে। ১৯২৯ সালের ক্লযিপণ্য বিক্রয় সম্বন্ধীয় আইনের উদ্দেশু • (১) হঠাৎ দামের উঠা-নাম যতটা কম হয় তাহার চেষ্ট৷ করা, ( ২ ) মাল সরবরাহের ভাল ব্যবস্থার দ্বারা অপচয় নিবারণ করা, (৩) সমবায় সমিতি গঠনে রুষকদিগকে উৎসাহ দেওয়া, ( ৪ ) কোন রুষিজাত দ্রব্য যাহাতে চাহিদার অতিরিক্ত উৎপন্ন না হয় এবং উৎপন্ন হইলেও ক্রয়-বিক্রয় যাহাতে বিধিভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় তাহার ব্যবস্থা কর, ইত্যাদি। এই আইনে নিম্নলিখিত বিষয়ের জন্য সমবায় সমিতিকে ঋণদানের ব্যবস্থা আছে :-( ১ ) মালবিক্রয়ের সুব্যবস্থা, ( ২ ) কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণের জন্য গোল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা, (৩) বড় বড় যৌথকারবারীদের মধ্যে মাল লেনদেনের জন্য যেমন ক্লিয়ারিং হাউসের ( clearing house ) ব্যবস্থা আছে কৃষিজাত দ্রব্যের জন্যও সেইরূপ সমিতি প্রতিষ্ঠা, ( ৪ ) সমবায় সমিতির সভ্য বাড়াইবার জন্য প্রচারকার্য্য, ( e ) মাল জমা দিবার সময়ে সভ্যগণকে অগ্রিম দাদনের ব্যবস্থা, ইত্যাদি। সমবায় সমিতিসমূহকে বার্ষিক শতকরা চার টাকার বেণী স্বদ দিতে হয় না। সমবায় সমিতিগুলিও বিচ্ছিন্নভাবে কৃষিজাত পণ্য বিক্রয়ের সক ব্যবস্থা করিতে পারে না। তাহদেরও সহযোগ বা সংহতির প্রয়োজন। এই আইনে সে ব্যবস্থা করা হইয়াছে। এই আইন কার্যকরী হইতে হইলে এক বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ও বহু