পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰাব বাংলায় পাটচাষীর সমস্তা ৫২৭ ধাহীদের স্বাখ এই ব্যাপারে নানাভাবে জড়িত র্তাহাদের সকলের এক হইয়৷ এই অর্থ কষ্ট দূর করিবার প্রকৃষ্ট পন্থা উদ্ভাবনের এই হইল স্বযোগ। পাট বিক্রমের স্বব্যবস্থার জন্য তিন রকমের প্রস্তাব হইয়াছে। প্রথমত, সরকারী কর্তৃত্বে পাট সংক্রান্ত সকল ব্যাপার পরিচালিত করা। দ্বিতীয়ত, মিষ্টার ম্যাকডুগাল যেমন বলিয়াছেন পট বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করিবার জন্য সেরূপ এক সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা । তৃতীয়ত, সমবায় পাট বিক্রয় সমিতি গঠন করিয়া পাট বিক্রয়ের স্বব্যবস্থা করা। বৰ্ত্তমান অবস্থায় পাটবিক্রমের সম্পূর্ণ ও সকল ব্যবস্থা যদি সরকার নিজের কর্তৃত্বাধীনে আনেন তাহা হইলে তাহার ব্যয় সঙ্কুলান কর। কঠিন হইবে। তাহার উপর চামীর। নিরক্ষর। সরকারী বিধিনিষেধের মৰ্ম্ম তাহারা নিজের পড়িয়া বুঝিতে পারিবে না বলিয়া নিম্নশ্রেণীর কৰ্ম্মচারীদের দ্বারা বে-আইনী জবরদস্তি যে কোথাও হইবে না, এ কথাও বলা যায় না। ম্যাকডুগাল সাহেব যেরূপ সমিতির প্রস্তাব করিয়াছেন তাহতে চাযীদের দুঃখ ঘুচিবে না, হয়ত বাড়িয়াই যাইবে। এইরূপ সমিতির র্যাহার কৰ্ত্ত হইবেন তাহারা ধনী, সঙ্ঘবদ্ধ ব্যবসায়ী কিম্ব উচ্চপদস্থ রাজকৰ্ম্মচারী । চাষীদের স্বার্থ তাহার দেখিবেন এরূপ কল্পনা করা বুথ । অন্তপক্ষে নিজেরা সম্পদশালী ও সঙ্গাবদ্ধ বলিয় তাহদের স্বাৰ্থ সম্পূর্ণ বজায় রাখিতে পারিবেন। এই জন্য পাট বিক্রয় সম্বন্ধে দ্বিতীয় প্রস্তাবও সমর্থন করা যায় না। পাট-ব্যবসায়ীরা স্বভাবতঃ চায় যত কম দামে পারে চাষীদের নিকট হইতে পাট কিনিতে ও যত বেশী দামে পারে বেচিতে। ম্যাকডুগাল সাহেবের হিসাবমত প্রায় দশ লক্ষ লোক নিজেরা পাট চাষ করে। যাহাতে বাংলার এত পাট-চাষী মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ীর কবলে গিয়া না পড়ে তাহার ব্যবস্থা সরকারকেই করিতে হইবে। কেবলমাত্র সমবায় পাট-বিক্রয় সমিতি গঠন করিয়াই সরকার তাহা করিচে পারিবেন। বাংলায় ষে কয়টি পাট-বিক্রয় সমিতি গঠন করা হইয়াছিল তাহার। অকৃতকাৰ্য্য হওয়ায় সমবায়নীতিতে এই সমস্তার সমাধান সম্ভব নয় অনেকে ইহা মনে করেন। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। সমবায় পাট-সমিতি সফল হয় নাই পরিচালনার দোষে, সমবায় নীতির দোষে নয়। গঠনের ষে ক্রটি পূৰ্ব্বকার সমিতিতে ছিল তাহ সংশোধন করিয়া এবং পূর্বের স্কুলের পুনরাবৃত্তি যাহাতে না হয় তাহার ব্যবস্থা করিয়া সমিতি গঠন করিলে তাহা বিফল হইবে কেন ? ভুল সব ক্ষেত্রেই হয় ব৷ হইতে পারে। প্রথম বারের ভুল আমরা অভিজ্ঞতার দ্বারা দ্বিতীয় বারেসংশোধন করিয়া লই । সকল প্রগতির এই নিয়ম। গঠনের দোষে সমবায়ু পাট-সমিতি একবার সফল হয় নাই বলিয়া নুতন ভাবে তাহার পুনর্গঠনের চেষ্টা করিব না, একথা মোটেই সমীচীন নহে। সমবায় নীতিতে গঠিত কৃষি-পণ্য বিক্রয় সমিতি যে বাংলায় সৰ্ব্বক্ষেত্রেই বিফল হইয়াছে, একথাও বলা যায় না। খুব বড় না হইলেও ছোট দুই ক্ষেত্রে এরূপ সমিতি সফল হইয়াছে ও ভাল কাজ করিতেছে। ২৪-পরগণার গোসাবা সমিতিসমূহের কথা ও রাজস্থালী জেলার নওগ। গাজা বিক্রয় সমতির কথা বলিতেছি । গোসাবা মৃন্দরবনের নিকটে অবস্থিত । এই স্থানের প্রধান কৃষি ধান। স্থানায় সমস্ত ধান সমবায় সমিতির হাত দিয়া বিক্রম হয় । তাহার ফলে র্যাহার চাষ করেন র্তাহার প্রভূত উপক্লত হইয়াছেন। নওগাতে গাঁজার চাষ ও বিক্রয় দুই-ই সমবায় সমিতির সাহায্যে হয় । অন্য কৃষিপণ্যের সঙ্গে গাজার অবশ্য তুলনা হয় না। ইহা সরকারের আবগারী বিভাগের অন্তর্গত। ইহার চাষ বা বিক্রয়ের অধিকার সাধারণের নাই । সমবায় প্রণালীতে নওগায় গাঁজার চাষ বা বিক্রমের ব্যবস্থার পূৰ্ব্বে চাষীদের অবস্থা অতি শোচনীয় ছিল। দালালদের অত্যাচারে এমন অবস্থা হয় যে, গীজ চাষ করিবার জন্য কেহু আর লাইসেন্স লইতে বা অনুমতি চাহিতে আসে না। সমবায় বিভাগ তখন চাষীদের সমবায় সমিতি গঠন করিয়া দালালের মধ্যবৰ্ত্তিতা ছাড়া গাজার চাষ ও বিক্রমের ব্যবস্থা করেন। গাজার চাষ বা বিক্রী যে-কেহ করিতে পারে না। এই কারণে নওগায় সমবায় সমিতি গঠন করা ও উহাকে কার্যকরী করিয়া তোলা অনেকটা সহজ হইয়াছে, ইহা সত্য। কিন্তু সমবায় ছাড়া চাষীরা অন্য যে স্ববিধা পাইয়াছে তাহা পূৰ্ব্বে তাহারা পায় নাই। চাষীরা এখন জানে যে, হায্য দাম, তাহারা পাইবে। পূর্বের মত উৎপন্ন গাজী বৎসরের মধ্যে বিক্রয় না হইলে এখন আর আইন অনুযায়ী নষ্ট করিয়া ফেলিতে হয় না, কেননা, এখন যতটা উৎপন্ন হয় সমস্তই সমবান্ধ সমিতি কিনি লয়। সব কাজই এখন স্বশৃঙ্খল বিধি