পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ छबिम्न खञवेिकांज्ञ 686. এখনও প্রধানত পল্লীসমাজ । সেখানে ধনী ও নিধনের ধো একটা অস্ট্রিীয়তা এখনও অনেক স্থলে জেগে আছে । উংসবে, পূজাপাৰ্ব্বণে, সামাজিক দানে ও কৰ্ম্মে ধনী তার ঐশ্বধ্য প্রকাশ করেন । পাশ্চাত্য সভ্যতায় ধনের দেয়াল মানুষের সহজ সম্বন্ধকে দূর করে মানব-প্রকৃতির মধ্যে একটা বিপৰ্য্যয় ঘটিয়েছে। তাই রবীন্দ্রনাথের ভাষায়,— "জাজ, তীরে অগ্নিগিরি উৎপাত বাধিয়েচে বলে সমুদ্রকেই একমাত্র ন্ধে বলে এই ঘোষণা। তারহীন সমুঞ্জের রীতিমত পরিচয় যখন পাওয়া Iাবে তখন কুলে ওঠবার জন্য আবার আকুপাকু করতে হবে।” মধ্যবিত্তশ্রেণী মূলতঃ একটা স্বপ্রতিষ্ঠ ও স্বতন্ত্র শ্রেণী নয়। এক দিকে যেমন কোন বদ্ধিষ্ণু কৃষক ও মজুর পরিবার শিক্ষায় বিত্তে ও কৰ্ম্মে মধ্যবিত্তশ্রেণীতে উন্নীত হয়, অন্যদিকে তেমনি এক পুরুষের খুব ধনী ও জমিদার পরিবার পরবর্তী পুরুষে মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে গণ্য হতে পারেন । তাই উভয় কুলের প্রতিই মধ্যবিত্তদের দরদ থাকার কথা। এরিষ্টটল হতে ইদানিং স্তর জন সাইমন পৰ্য্যন্ত অনেক মনীষীই এই মধ্যবিত্তশ্রেণীর উপর তাদের আস্থা প্রকাশ করেছেন । এরাই সকল সমাজের ও রাষ্ট্রের মেরুদণ্ডস্বরূপ । “মধ্যবিত্তশ্রেণীর জনসংখ্যা যপন উভয় প্রাস্তের, কিংবা অস্তুত এক প্রাস্তের অনেক বেণী থাকে, তখনই কোন স্থায়ী রাষ্ট্রের সম্ভাবনা ঘটে ।--- সারা জুলিয়ার মধ্যন্থের মতো বিশ্বাসী আর কেহ নাই ; এবং মধ্যবিত্তশ্রণী ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে এই মধ্যন্থের পদ অধিকার করেন - —এরিস্টটলের রাজনীতি । ভারতীয় সমাজের বিশেষত্ব এই যে, তার শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত শ্রণী তথাকথিত সাধারণ শ্রেণীর সঙ্গে অস্তরের যোগ এবং আত্মীয়তা হারায় নি। “ভারতীয় শিক্ষিত সমাজের স্বভাব অপুৰ্ব্ব বলে মনে হয় । এই এক শ্রেণীর লোক র্যায় বিজ্ঞান ও কৰ্ম্মী, প্রায়শঃ ধারা পাশ্চাত্য ভাষায় ভাবেন এবং ঐ শিক্ষার সঙ্গে পাশ্চাত্য সভ্যতা ও রাষ্ট্রের নিয়ম ও সংস্কার সকল গ্রহণ করেন ; অথচ, প্রাচ্যের আদিম সংস্কারে র্যাদের মন আচ্ছন্ন, ভারতের এরূপ জনসাধারণের সঙ্গে তারা ঐকাভিক একত্ব অনুভব করেন ৷”—সাইমন কমিশন রিপোর্ট, প্রথম খণ্ড ।" নূতন কোন বিধিব্যবস্থার প্রবর্তন করার সময় আমাদিগকে একদিকে যেমন বর্তমান জগতের ভাব ও কৰ্ম্মপ্রবাহের প্রেরণা গ্রহণ করতে হবে, অন্যদিকে তেমনি ভারতীয় সমাজের - বৈশিষ্ট্য যথাসম্ভব রক্ষার জন্ত মনোযোগী থাকতে হবে। জাতীয় চিত্তকে বুঝে তার ভাব ও বিকাশের ধারাকে অনুসরণ করে কোন গতিশীল নূতন বিধানকে তার সঙ্গে মিলিয়ে মশিয়ে নূতন আইনকানুন চালাতে হবে। ভারতীয় সমাজ to-30 ব্যবস্থার মূল তত্ত্বটি হচ্ছে, জমিকে কেন্দ্র করে সমষ্টিগত জীবনের বিকাশ এবং জীবনের সকল বিভাগে আধ্যাত্মিক উপলব্ধির প্রয়াস । তার আইন, নীতি ও সংহিতা তাদের প্রীতির প্রদীপ জালিয়ে মানুষের ওই যাত্রাপথ উজ্জল করেছে । আমাদের সমাজ-ব্যবস্থার আদর্শ হবে মানুষের শ্রেয় ও পূর্ণতর জীবন, যা তার আত্মীয়তা ও মানবতা বিকাশের স্বধোগ দান করবে। জমির অধিকার-ব্যবস্থায়ও উক্ত আদর্শ ভুলে গেলে আমরা জাতীয় লক্ষ্য হারিয়ে চলব। জল ও বাতাসের মতই ভূমির উপর সকল মানুষের জন্মগত স্বাভাবিক অধিকার রয়ে গেছে । রাশিয়া সম্বন্ধে র্তার কোন চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন “জমির স্বত্ব স্থায়ত জমিদারের নয় সে চাষীর । কিন্তু চাৰীকে জমির স্বত্ব দিলেই সে-স্বত্ব পর মুহূৰ্বেই মহাজনের হাতে গিয়ে পড়বে তার দুঃখভার বাড়বে বই কমবে না ।” জমির স্বত্ব যে ন্তামৃত জমিদারের নয়, তাহ সত্য ; কিন্তু তা যে চাষীর, তাও শেষ কথা নয়। আর চাষীরই যদি সমগ্র স্বত্ব ন্যায়ত হয়, তবে তাকে চিরন্তন শিশু ভেবে জমিদারকেই তার মুখ-দুঃখের বিধাত ক’রে রাখা সমীচীন কি-না বিবেচ্য। আমাদের প্রজাস্বত্ব আইনে উক্ত ভাবই নিহিত আছে। ভারতের প্রাচীন সামাজিক ব্যবস্থায় জমি ছিল অনেক স্থলে সৰ্ব্বসাধারণের সম্পত্তি । “তস্তাং ভূমে স্বকৰ্ম্মফল তুঙ্গনানাং সৰ্ব্বেষাং প্রাণিনাং সাধারণধন - যে পরিবার বা গোষ্ঠীর যেখানে সুবিধা হয়েছে, সেখানেই সে ভূমি দখল করে ভোগ করেছে। দখলিস্বত্বে (occupation) গ্রামিকগণ পূৰ্ব্বকালে ভূমির মালিক হয়েছে। অর্থনীতির নিয়মে দখলের শ্রমকেই জমির মূল্য হিসাবে ধরা যায়। ব্যবহারের উদ্ধৃত্ত জমি গ্রামিকগণ ভিন্ন গ্রামের মজুরদের চাষ করতে দিয়েছে এবং বিনিময়ে রাজস্ব ছাড়াও কর হিসাবে তাদের কিছু প্রাপ্তি হয়েছে। আবহমানকালের যা রীতি, আজ যারা অর্থের মূল্যে জমি কিনবে, তাদের বেলাও তাই প্রযোজ্য হ’লে সামাজিক সামোর ব্যতিক্রম হয়ে বিপ্লব ঘটবার কোন আশঙ্কা নেই। রাজা উৎপন্ন শস্তের একাংশ ষে কর হিসাবে পেয়েছেন, তা শান্তিরক্ষার মূল্যস্বরূপে বলা যায়,--জমির মালিক বলে কি-নী—এ সম্বন্ধে মতভেদ আছে । সমস্ত জমির মালিক হলেন দেশের রাজ্য—একথা ইংরেজী আইনের গোড়ার কথা। প্রাচীন ভারতের রাজা যে-অধিকার