পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

48y জানেন যে, জমিহীন এই মজুরদের আর্থিক সচ্ছলতা নেহাৎ "म नग्न । শুধু জমির মজুরীই ষে তার করে এরূপ নয়, কোন অঞ্চলে বর্ষাকালে তার নৌকা চালায়, মাছ ধরে, কোথাও পান্ধী বক্স, মাটি কাটে। দুধ, হাস, মোরগ, ডিম ইত্যাদি বিক্রী করেও কিছু রোজগার করে। মেয়েরাও স্বতা কেটে, ধান ভেনে, চিড়া কুটে পারিবারিক আয় বাড়ায়। চাষী গৃহস্থের জমি চাষের জন্য যখন মজুরের প্রয়োজন, তখন এক শ্রেণীর লোক সে কাজের জন্য ত থাকবেই। কলকারখানার মজুরদের চেয়ে তারা অধিক স্বাধীন ও আনন্দের জীবন যাপন করে . প্রতিবাসী কোন প্রবাসীর জমি যদি সে ভাগে চাষ করে বা নির্দিষ্ট হার ভাগে বা ভাগের মূল্যে চাষ করে, তবে উক্ত প্রবাসী প্রতিবাসীর চাষশ্বৰ তাহাকে অপর্ণ করে সমাজের কোন কল্যাণ সাধিত হ’ল ? জমিহীন মজুর, যার নিজের হাল-গল্প নেই, সে অন্যের হাল-গরু দিন-হিসাবে খরিদ করে প্রতিবাসীর জমি ভাগে চাষ করে। কোন ক্ষেত্রে জমির স্বত্বাধিকারী হালের ও বীজের মূল্য দিয়ে থাকেন। কোথাও হাল-গরুর মালিক কৃষক বীজ ও হাল নিজ হতে দিয়ে প্রবাসী প্রতিবাসীর জমি ভাগে বা ভাগের নির্দিষ্ট হারে বা তন্মুল্যে,--আগরি (অগ্রিম) বা পাছরি (পশ্চাৎ) —চাষ ক'রে থাকে। এসব ক্ষেত্রে ভাগদারকে জমির স্বত্ব দেওয়ার কোন প্রয়োজনীয়তা দেখা যায় না। উভয় পক্ষের স্ববিধা হেতুই এ প্রণালীতে জমির চাষ বহুকাল ধরে চলে আসছে। কিন্তু আমাদের বর্তমান প্রজাস্বত্ব আইনে এরূপ ব্যবস্থার স্থান নেই। এরূপ কোন বন্দোবস্ত করলে প্রজাকে তার দখলীস্বত্ব হারাতে হবে এবং বর্গাদার অধস্তন-রায়ত হিসাবে সে স্বত্ব লাভ করবে। গ্রামের প্রতি প্রবাসীর স্বার্থের সম্পর্ক ও প্রীতির আকর্ষণ ছেদন করে পল্লীগৃহ থেকে তাকে দূর করে আমাদের জাইনের বিধান সমাজের কোন হিতসাধন করবে ? - * . মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ও হেনরী ফোর্ড সমাজের এই সমস্যাটিকে মানুয়ের বৃহত্তর কল্যাণের দিক থেকে ভেবে তাদের চিন্তাধারা প্রকাশ করেছেন। কলের বিরুদ্ধে গান্ধীজীর ও রবীন্দ্রনাথের ষে অভিযোগ তাহা কারখানার কবলে মানবতার ষে বিনটি ঘটে থাকে, তারই কারণে। কারখানার SOBO মূলেই তো বর্তমান সভ্যতার প্রতিষ্ঠা। পৃথিবী তার ধ্বংস চায় না,—চায় শ্রেয় ও কল্যাণের পথে তার পরিচালনা। কারখানার সহাঁয়েই বর্তমানের বড় বড় শহর গড়ে উঠেছে। চাই পল্লীর প্রাণের সঙ্গে শহরের প্রাণের একটা মিলনস্থত্র আবিষ্কার করা। ভারতের পল্লীই এখনও তার প্রধান অঙ্গ। বড় কারখানার নাগরিক মজুরদের পল্লীর সঙ্গে যোগ রক্ষার ব্যবস্থা করা সমীচীন হবে। আর ছোট ছোট কলকারখানা তৈল বা ইলেকটি সিটির সাহায্যে পল্লীর এবং ছোট শহরের কোলে বসাতে হবে । এই আদর্শ অনুসারেই গান্ধীজী আফ্রিকায় ফিনিক্সের পল্লীপ্রাস্তরে তার ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা করেন। ছাপাখানা ও কৃষিকাজ একসঙ্গে সেখানে পরিচালনা করেন । । অল্প জমির স্বত্ববান যে চাষী শহরের কারখানায় মজুরী করে, তাকে জমির অধিকার থেকে বঞ্চিত করার যে আন্দোলন চলছে, এবং আমাদের প্রজাস্বত্ব আইনের গতিও যে ও পথে, সে কথা উল্লেখ করেছি। এ সম্বন্ধে হেনরী ফোর্ডের মত অন্তরূপ — “এই ঋতু অনুযায়ী কাজের বিষয় ভেবে দেখুন। বছর-ভরা কাজের প্রণালীতে কতই না ক্ষতি । কৃষক যদি চাষ, আবাদ ও দানির (harvesting) সময় তাঁর খামারের কাজের জন্ত কারখানা থেকে ছুটি পায়, তাতে তার কত সুবিধা হয়, এবং জীবনযাত্রাও কত সহজ হয়ে পড়ে। কৃষকেরও মন্দার সময় আছে। সে সময়ে কৃষক কারখানার কাজে এসে তার কৃষিকাজের জন্ম প্রয়োজনীয় জিনিষ প্রস্তুতিতে সহায়তা করতে পারে। কারখানারও মন্দার সময় আছে। সে সময় কারখানার মজুর জমির কাজে গিয়ে শস্তাদি উৎপাদনের কাজে লাগতে পারে। এইভাবে আমরা মন্দাকে কাজের ভিতর থেকে বাতিল করে দিয়ে কুক্ৰিমত ও স্বাভাবিকতার মধ্যে সমম্বয় সাধন করতে পারি। এই ভাবে জীবনযাত্রার মধ্যে অধিকতর সামঞ্জস্ত পাওয়া কম লাভের কথা নয় —হেনরি ফোর্ড প্রণীত, আমার জীবন ও কর্ণ। জীবনের সফলতা অর্থে লোকের সাধারণ ধারণা এই ষে, কোন বিশেষ পথে যিনি চরম উৎকৰ্ষ লাভ করলেন, কৃতকাৰ্য্যতা তারই সাধিত হ’ল। কিন্তু সফলতা ও সার্থকতা ভিন্ন জিনিষ। কোনদিকে বৈশিষ্ট্য লাভ না করেও মানুষ তার জীবনকে প্রতি দলে বিকশিত করে মানস্থতার শ্রেয়ত্ব ও সার্থকতা লাভ করতে পারে। কলের মজুর তার কলেই নিমগ্ন থেকে কলের কাজে হয় তো বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে, কিন্তু তার জীবনের একটা বড় দিকই তাতে পছু থেকে যাবে। তার বৃহত্তর সার্থকতা সেপাবে, জীবনকে অদ্যদিকেও বিকশিত