পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

€¢३ করিতে কানাইলাবের আরও কয়েকটা দিন দেরি হইলেই দেখা যাইতেছে ছিল ভাল । না, সত্যিই এটা লক্ষ্মীছাড়া দেশ। এদেশে কাহারও কিছু লেখা উচিত নয়।—কাহারও কিছু করাই উচিত নয়। অজয়ের শরীর কঁাপিতেছে, চলিতে গিয়া পাটলিতেছে। জান্তে আস্তে দু-এক পা করিয়া অগ্রসর হয় আর ভাবে, এখনই মাথা ঘুরিয়া পড়িয়া যাইবে । বুকের মধ্যে কেমন একটা ব্যথার চাপ। হৃৎপিণ্ডের প্রত্যেকটি স্পন্দনকে সে যেন লগুড়াঘাতের মত অনুভব করিতেছে । একটা আলোর থাম ধরিয়া একটু বিশ্রাম করিয়া আবার চলিতে লাগিল। অনেকদিন আগে শোনা বিমানের একটা কথা আজ এতদিন পর অজয়ের মনে লাগিয়াছে। সত্যই একটা লক্ষ্মীছাড়া দেশে জন্মাইয়াছে, ইহা ছাড়া তাহার আর কোনও অপরাধ নাই। মিথ্যামিধ্যি নিজেকে এতদিন সে তিরস্কার করিয়াছে। যদি আর কোনও দেশে জন্মাইত, হয়ত গান গাহিয়াই জীবনকে সর্বপ্রকারে সমৃদ্ধ করিয়া তুলিতে পারিত। অন্ততঃ তাহার এতদিনের এত প্রাণপাত পরিশ্রম আজ এমন করিয়া এত তুচ্ছ কারণে ব্যর্থ হইত না। সে জানে বইটা ভাল হইয়াছে, আজ কানাইলালের ঘরের প্রতিটি মানুষের মুখভাবে, কানাইলালের নিজের প্রতিটি কথায় বারবার সেকথা ধরা পড়িয়াছে, সম্ভবতঃ বাজারে যে-সমস্ত বই সচরাচর চলে এবং প্রশংসা পায় সেগুলির তুলনায় বইটা ভালই হুইয়াছে, তবু ইহা হইতে একবেলার ক্ষুণ্ণিবৃত্তির ব্যবস্থা করাও তাহার সাধ্যে নাই! কিন্তু আজ আর এত কথা ভাবিতে ভাল লাগিতেছে না। লোভ করিবার, রাগ করিবার, অভিমান করিবার মত মনের অবস্থাও আজ তাহার নাই। পথের পাশে একটা খাবারের দোকান। রাশি রাশি কচুরি, শিঙাড়, সন্দেশ, বরফি, পাৰা সুপাকার করিম সাজান রহিয়াছে। ভাবিল, ইহার সমস্তই কি বিক্রয় হইবে ? কতক নিশ্চয়ই ফেলা যাইবে। একটা শিঙাড়া পাইলে খাইয়া আকণ্ঠ-জলপান করিয়া সে কি গভীর তৃপ্তি লাভ করিতে পারে । ५क्वांब्र गङाहे ऋन् श्ल, चकक:ब्र नूकहेब शङ পাতে। কাহারও নিকট একটা পক্ষা চাহিয়া লয়।..নিজের SునDBO চিন্তাতে এত দুঃখেও নিজেরই তাহার হাসি পাইল। সত্যই সে কিছু আর হাত পাতিবে না, কিন্তু যদি পাতেই, একটা পয়সা তাহাকে কে দিবে ? এদেশে ভিখারীকে ভিক্ষা দেওয়ার রেওয়াজ উঠিয়া যাইতেছে, তৎপরিবর্ভে তাহাকে খাটিয়া খাওয়ার স্বপরামর্শ দেওয়া এখন রীতি। খাটিলেই খাইতে পাওয়া যায়, একথা বলিয়া নিজেকে এবং পরকে প্রবঞ্চনা করিতে কাহারও বাধে না । কিছুদূর গিয়া আর চলিতে পারিল না, বুঝিল, দাড়াইয়া থাকাও চলিবে না। পাশে ষে দোকান দেখিল তাহারই খোলা দরজায় ঢুকিয়া পড়িল এবং চৌকাঠ পার হইয়াই সশব্দে মাটিতে পড়িয়া গেল। মনে হইল, পামের নীচে হইতে হঠাৎ কে মাটি সরাইয় লইল। হাটুর নীচে হইতে পা-দুইটা সেইসঙ্গে যেন তাহার নাই। চতুর্দিকের পৃথিবী বন্ধন করিয়া ঘুরিতেছে। অস্পষ্ট করিয়া অনুভব করিল, তাহাকে ঘিরিয়া ছোট ভিড় জমিয়াছে। কে একজন বলিল, “মিবৃগীর ব্যামে...বড়বয়ের ছিল, ও আমি দেখলেই চিনতে পারি।” আর একজন কে পশ্চাৎ হইতে হাক দিয়া কহিল, “মুখটা একবার স্তকে দেখত রে!” তৃতীয় ব্যক্তি মন্তব্য করিল, “না না, সেসব কিছু না, দেখ ছ না কি রকম শাদাটে মুখ। বোধহয় হার্টের অম্লখ। চোখেমুখে একটু জলের ঝাপটা দিতে পারলে উপকার হত।” কিন্তু অজয় কোথাকার কে, তাহার জন্য ক্লেশস্বীকার করিম কেহ আর জল আনিতে গেল না । কেবল একটু পরে অজয় উঠিয়া বসিবার চেষ্টা করিতেছে দেখিয়া শেষোক্ত মানুষটি তাঁহাকে ধরিয়া একটা টুলের উপর বসাইয়া দিল । ভিড় ক্রমে কাটিয়া যাইতেছে। দূর হইতে দোকানী স্বয়ং মোটা গলায় হাক দিয়া কহিল, “কি মশাই, এখন একটু ভালো বোধ করছেন ?” অজয় বলিল, “ভালো। ধন্যবাদ। আর একটুক্ষণ বসতে পারি ?” - দোকানী বলিল, “অবাধে। যতক্ষণ খুসি বসেবান। কি হয়েছিল আপনার ?” অজয় বলিল, “পায়ে পা বেধে পড়ে গেলাম। শরীরটা ভালো ছিল না।” । -