পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

இiri Φάε, शृंचंशै। দোকানী বলিল, “কাছেই কি আপনার বাড়ী?” অঙ্গয় স্থাপাইয় উঠতেছিল, সংক্ষেপে কহিল, “ন, দূরে।” দোকানী বলিল, “যতক্ষণ দরকার জিরিয়ে একটা গাড়ী ড়েকে চলে যান।” তারপর নিজের কাজে মন দিল । বসিয়া বসিয়া অজয় ক্লান্ত অলস দৃষ্টিতে চতুৰ্দ্দিকুটাকে দেখিতে লাগিল।--পুরান বইয়ের দোকান। ইংরেজী, বাংলা, সংস্কৃত, হিন্দী, ওড়িয়া, গুজরাট, সকল ভাষার বই। দশবৎসরের পুরাতন ডায়েরী, অকেজো রেলওয়ে টাইম-টেবল, অপ্রচলিত আইনের কেতাব, ডজন ডজন রহিয়াছে। অবশু সেই সঙ্গে কাজের বইয়েরও অভাব নাই। অজয় বসিয়া থাকিতে থাকিতেই একটি কলেজের ছেলে গোট ছয়-সাত বই রাগিয়া তিনটি টাকা লইয়া গেল। অজয়ের সহসা মনে হইল, তাহার চতুদিক হইতে কালে অন্ধকারের স্তুপগুলি যেন টলিতে টলিতে সরিয়া গেল। একটা কালে কঠিন লোহার সিন্দুকের গায়ে মাথা খুঁড়িতেছিল, হঠাৎ দেখা গেল তাহার কুলুপে চাবি দেওয়া নাই। বিনা বাক্যব্যয়ে টুল ছাড়িয়া উঠিয় সে বাড়ীর পথ ধরিল। সন্ধ্যায় একপয়সার একটা শিঙাড়া চাহিয়া লইয়া খাইবার কথা যাহার মনে হইয়াছিল, রাত্রিতে এক সঙ্গে পাচপাচটা টাক পাইয়াও যে সে খুব বেশী খুসি হইল তাহা নহে । অস্তভ খুসি যতটা হইল, ঠিক ততটাই অকুতাপ তাহার সঙ্গে মিশিয়া রহিল।...তাহার এত আদরের বইগুলি ! লোকে পেটের দায়ে কোলের ছেলেকেও বিক্রয় করে গুনিয়াছিল, কথাটার অর্থ আজ হৃদয়ঙ্গম করিল। তাহাছাড়া, যদিও টাকার মূল্যে বইগুলির মূল্য হয় না, তবু এতগুলি বই, পাঁচটা মোটে টাকা ! এত যে দুর্বল বোধ করিতেছিল, মাখন-সহযোগে দুইটুকরা প্লট এবং একটি অমূলেট পেটে পড়িতেই সে দৌৰ্ব্বল্য এবং ক্লান্তি কোথায় মিলাইয় গেল। তিনদিন উপবাসী ছিল, ইচ্ছা করিলেই সেকথা এখন আর সে মনে না আনিতে পারে। কিন্তু তাহার এত আদরের বইগুলিকে রাত্রির অন্ধকারে সন্তপণে চোরাই মালের মত বহন করিয়া সে যে বিক্রয় করিয়া আসিয়াছে, সে কথাই কি মনে করিয়া রাখিবার ? পৃথিবীতে এমন কি কথাই বা আছে যাহা মনে করিয়া স্বাধিতে পারিলে সে খুলি হয় ? এতদিন ভবিষ্যৎ জীবনের Պe-38 স্বপ্ন লইয়া কাটিত, আজ গোলদীঘির পুরান-বইয়ের দোকানট ছাড়াইয়া আর বেশীদূর অবধি নিজের ভবিষ্যৎকে চেষ্টা করিয়াও ত সে ভাবিতে পারিতেছে না। মনে পড়িল, দু-মাসের উপর হইতে চলিল তাহার পিত। তাহার খবর লন নাই। আর্থিক সম্বন্ধে শেষ হইবার পর সেও যে বুদ্ধ পিতার সঙ্গে কোনও সম্বন্ধ রাখে নাই, তাহ ভাবিল না। কলিকাতার বন্ধুদের ইচ্ছা করিয়াই নিজে সে কিছু করিতে দেয় নাই, তবু তাহাদিগকে লইয়াও তাহার মনে অভিমানের শেষ নাই । আজ সকলকে সমস্ত-কিছুকে সে ভুলিয়া যাইতে চায় । চতুৰ্দ্দিকৃ হইতে খণ্ডিত তাহার এই অতিক্ষুদ্র জীবনকে লইয়া অকারণে এত বেশী আড়ম্বর আর সে করিতে চাহে না । কোথাও তাহার জন্য কিছুমাত্র বেদন জাগিতেছে না, তাহার অনাহারের দুঃখ কাহারও মুখের অন্নপানীয়কে বিস্বাদ করিতেছে না, এ স্বীকৃতি তাহার সমস্ত জীবনকে জুড়িয়া থাকুক। তাহার অতীত নাই, তাহার ভবিষ্যৎও নাই। পুরাতন অজয়, ঐন্দ্রিলাকে যে ভালবাসিত, দিনান্তে বীণাকে দেখিতে পাইলে যে খুসি হইত, তাহার যেন মৃত্যু হইয়াছে । এখনকার অজয়ের কোনও স্মৃতি নাই, সেস্মৃতির আনন্দ-বেদনাও নাই । উপবাসে যেমন মানি কাটিয়া গিয়া শরীরের মধ্যে একটি নিৰ্ম্মল প্রসন্নতা আসে, তাহার এই বৈরাগ্যও তেমনই তাহার মনের মধ্যে একটি গুচি শুভ্র প্রসন্নত আনিয়। দিল । কোনও কিছু লইয়ু ক্ষুব্ধ হইবার, পীড়িত হইবার, অল্পশোচনা করিবার তাহার আর কোনও প্রয়োজন রহিল না । বিমান অভিনয়ে যোগ দেওয়াতে হয়ত অন্তদের লইয় গোল হইবে, স্বভদ্র এরূপ আশঙ্কা করিয়াছিল, দেপ গেল তাহার আশঙ্ক অমূলক। অত্যন্ত বেশী থুংখুঁতে স্বভাব যাহাদের তাহারাও শেষ অবধি ইহা লইয়৷ কিছুমাত্র উচ্চবাচা করিল না। বীণা বলিল, “গোল যদি কবুত তাহলে ত বীচতাম। এদেশের লোকে কাউকে নিয়ে গোল করছে দেখলেও বুঝতাম মানুষকে তার প্রাপ্য মূল্য তারা দিতে শিখেছে।” কিন্তু দেখা গেল, নিতান্ত রিহাসলি দিবার জন্ত জোর করিয়া যাহাঁদের ধরিয়া আনা হয়, তাহারা ভিন্ন অপর কেন্থ