পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ শুঙ্খল ფ· ფ·6: করে। তোমার উচিত তাকে আবার ধরে আনতে চেষ্টা করা ।” স্ন ভদ্র বলে, “ওসব জোর-জবরদস্তিতে আমি বিশ্বাস করি না, তা ত জানোই ।” বিমান বলে, “কোথায় আর জানি । তোমার বিবেচনায় একমাত্র ঘুসির জোর ছাড়া আর কোনোরকমের জোরকে কেউ কাজে লাগবে না। ক্লাবের কন্‌ষ্টিটুশিনটা বদলে কুস্তির আগ ড্রা করে নাও, সহজেই সব গোল মিটে যাবে।” সুতরাং গোলট। আপাততঃ থাকিয়াই যায়। বীণা বাড়ী ছাড়িয়া এই ক'দিন বাহির হয় নাই বটে, কিন্তু বাড়ীতে সে বসিয়া নাই। বীণ। চুপচাপ বসিয়া আছে, এই অভাবনীয় দৃশ্য চোখে দেখিবার লোভে সময়ে-অসময়ে স্থলত আসিয়া হাজির হন, কিন্তু তাহার অভীষ্ট সিদ্ধ হয় না। সম্প্রতি দুতিনদিন দুই সখীতে অজয়ের ঠিকান খুজিয়া বাহির করিবার নানাপ্রকার সম্ভব-অসম্ভব প্ল্যান লইয়| আলোচনা চলিতেছে। স্থলতা মাঝেমাঝে বলেন, “ক্লাবে তুই কি সত্যিই আর যাবি না ঠিক করেছিস্ ?” বীণ বলে, “তোমার কৰ্ত্তার ব্যবহারে আমি একেবারে মৰ্ম্মাহত হয়ে গিয়েছি, মুলতাদি। ক্লাব আর না। পুরুষ জাতের কাছ থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই ভালে ।” স্থলত হাসিয়া বলেন, “তারিরই ব্যবস্থা করছিস্ বটে।” ব্যবস্থা আরও অনেক কিছুরই সে করে। অজয়ের তিরোধানের পর হইতেই সে স্থির করিয়াছিল, আশেপাশের কতকগুলি বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত জীবনের মধ্যে একটু গ্রন্থি বাধিয়া দিতে চেষ্টা করিবে । প্রিয়গোপালের কাছে হার মানিয়াছে। বাড়ীতে ব্রিজের আডড জমাইয় তাহার মনকে গৃহাভিমুখী করিবে ভাবিয়াছিল ; তিনি এখন রাত্রিতে বাড়ী থাকেন বটে, কিন্তু এমন ভাবে ব্রিজে ডুবিয়া থাকেন যে সে না থাকারই সামিল। হেমবালার সঙ্গে ঐন্দ্রিলার সম্পর্কের গলদ কোনখানে তাহ ঠিক ধরিতে পারে না বলিয় সেদিকে বিশেষ কিছু করিতে পারে না কিন্তু আদরে যত্নে আপ্যায়নে পিসীমার মনোহরণ করিবার চেষ্টা বিধিমতে করে। তাহার নিকট যতখানি সমাদর পাওয়া উচিত ছিল তাহা এতদিন একেবারেই তিনি পান নাই, ইহা উপলব্ধি করিয়া সে লজ্জিত হয়। ঐন্দ্রিলাকে বীণাই বিপথে লইয়া যাইতেছে

  • চাপিয়া গিয়াছে ।

এই ধারণ এতদিন হেমবালার মনে ছিল। বীণ ক্লাবে যাওয়া বন্ধ করিবার পর ক্রমে সেটা কাটিয়া গিয়া ভ্রাতুষ্পত্রী সম্বন্ধে তাহার স্বাভাবিক প্রসন্নতা ফিরিয়া আসিতেছে। ঐন্দ্রিলাকে ডাকিয়া বীণা একবার বলিয়াছিল, “ক্লাব ভোর ভালো লাগে না বেশ বুঝতে পারি, শুধু শুধু একটা মানুষকে চটিয়ে যে কি মুখ পাস তা তুষ্ট-ই জানিস্ ।” অভিনয়ে ঐন্দ্রিলা পার্ট লইতে চাঙ্কিলৈ হেমবালার পক্ষ হইয়া বীণাও তাঁহাকে বিধিমতে বীপা দিয়াছিল। কিন্তু দেখা গেল ঐন্দ্রিলার আরও বেশী রোপ অগত্যা বীণ ভাবিতেছে, কে জানে বাপু, হয়ত সুভদ্ৰ-ঐন্দ্রিলার মধ্যেও লুকানো মনের সম্পর্ক কিছু একটা সত্যিই আছে। যদি নিশ্চয় করিয়া জানিতে পায়, না-হয় তাহাদের মধ্যেকার আড়াল ঘুচাইতে প্রাণপণ করে। এমন যে পুটি এবং ভবতোম তাহাদেরও ইতিমধ্যে দুই দুইবার সে ডাকিয় চা গাওয়াইয়াছে । পুটি তাঙ্গার পর হুষ্টতে বীণার আর পিছন ছাড়ে না। বীণার কাছে সে সেলাই শিখিতেছে । বীণা বলিয়াছে, “তোমার হষ্টেলের রাস্ত দিয়ে আর ঠাটবে না যদি কথা দেয়, ত তোমার রেশম পশম স্থতে সমস্ত জোগাবার ভার ওকে দিই।” আর সকলেরই কথা বীণা ভাবে, কেবল কি-কারণে বলা যায় না, বিমান সঙ্গন্ধে সে নিষ্ঠুর। বিমানের মন বলিয়৷ যে কিছু আছে তাহ বোঝা যায় ম৷ বলিয়া কি ? স্থলভা ইহাই লইয়। তাহাকে একবার তিরস্কার করিলে সে বলিয়াছিল, “কি জানি বাপু, সত্যি ওর ওপরে আমার কিছু রাগ নেই। : তবে ওকে জব করতে পারলে আমার লাগে ভালো । একটা বা ঝালো কথা বলে এই মনে ক'রে তৃপ্তি পাওয় যায়, যে অন্ততঃ মানে বুঝতে গোল করবে না।” বীণা কি অবশেষে সুভদ্রের ক্লাবের সমস্যারও একটা সমাধান করে ? একটির পর একটি করিয়া সুভদ্রের ক্লাবের খসিয়-পড়া মানুষগুলিকে সে কাছে টানে । বাড়ীতে ডাকে, ন ডাকিতেও অনেকে আসে, সেই যাহারা সুযোগ পাইলেই বীণাকে ঘিরিয়া গোল হইয়া ভিড় করিত ; মেয়ে পুরুষ দুয়েরাই। একদিন রিহাসালের পর ঐন্দ্রিলাকে পৌছাইতে ; আসিয়া সুভদ্ৰ দেখিয়া গেল, সেখানে পুরাদস্তুর ক্লাব বসিয়াছে। সে যেমনটি চাহিতেছিল, তাহাই । এখানে এখন আর স্ত্রী-পুরুষ দুই দলে বিভক্ত হইয়া বসে নাই। একটি অপরূপ ਬੀਬਣੇ।