পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

鸟●凯 রমেশ স্থা করিয়া রহিল। মহীতোষ বলিল, “জারে নে নে, অত ন্যাক সাজতে হবে না। বৌদিকে বল এক পেয়াল চা দিতে।” রমেশ তাহার পাশে জাসিয়া বসিয়া ভীতভাবে ফিস্ ফিস্ করিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “সত্যি গিয়েছিলি নাকি চুরি করতে?” মহীতোষ বিরক্তভাবে উঠিয় দাড়াইয়া বলিল, "চুরি করতে যাৰ কেন ? কোন প্রয়োজনে ? তবে ট্রেস্পাস প্রবাসী ; SOBO (অনধিকারপ্রবেশ ) করেছি বলতে পারিস। খগেনের কথা খাট সত্যি রে । বাঙালীর মেয়ে ঘরে চোর ঢুকলে প্রেম করতে বসে না মোটেই ।” রমেশ ভৗতু মানুষ, বলিল, “মাথার এই ঘা নিয়ে রাস্তায় বেরস্ নে। দিনকতক ঘরেই থাকৃ।" মহীতোষ বলিল, “দুত্তোর। আমার কথা স্বপ্নেও কারও মাথায় আসবে ভেবেছিস । আমি সেফ.(নিরাপদ ) আছি ।” সবরমতী শ্ৰীঅক্ষয়কুমার রায় মহাত্মা গান্ধীর পত্র পাইয়া ২৯এ মার্চ শান্তিনিকেতন হইতে সবরমতী রওনা হইলাম। আগ্রা হইয়া রাজপুতানার মরুভূমির ভিতর দিয়া গাড়ী চলিতে লাগিল ; ভরতপুর, জয়পুর, আজমীর হইয়া এক দিন এক রাত্রির পর দিন দুপুরবেলা আমেদাবাদ পৌছিলাম। গরম ছিল খুব, গাড়ীর কাঠগুলি পৰ্য্যন্ত যেন আগুনে তাতিয়া উঠিয়াছে, সমস্ত দিনটা কেবল নেড় পাহাড়, দিগন্তব্যাপী ধৃ ধু বালুভরা মাঠ, মাঝে মাঝে বাবলা ও কাটগাছ ছাড়া আর বিশেষ কিছু চোখে পড়িল না। দুরে দূরে সব ষ্টেশন। ট্রেনের সঙ্গে একটি জলের গাড়ী ছিল । সেই জলই প্রতি ষ্টেশনে যাত্রীদের সরবরাহ করিতে -হইত। সদ্ধার পূৰ্ব্বে দেখি, এক দল লোক উটের পিঠে মরুভূমির উপর দিয়া চলিয়াছে। ঠিক যেন ছবির মত মনে হইল। শেষরাত্রে আবার বেশ ঠাও পড়িতে লাগিল । আমেদাবাদের আগের ক্টেশনই সবরমতী । সব গাড়ী সেখানে ধরে না বলিয়া, অল্প পরে ভিন্ন গাড়ীতে আসিয়া সবরমতীতে নামিলাম। আশ্রম সেখান হইতে প্রায় দেড় মাইল হুইবে ; পথে সবরমতী জেল পড়ে। যেমন দারুণ রৌদ্র, তেমনি গরম হালকা হাওয়ার, মনে হইল এই দেড় মাইল রাস্ত যেন আর শেষ হয় না। এই অবস্থায় আশ্রমে পৌছিয়া দেখি, আশ্রম যেন জনমানবশূন্ত । বাহিরে এমন কোন লোক দেখি না যাকে জিজ্ঞাসা করি কোথায় উঠি । অল্প প.র একটা বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্র ঘর হইতে একটি ভদ্রমহিলা আসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কাকে চাই ?” আমি বলিলাম, “মহাদেব দেশাই কোথায় আছেন ?” তিনি মহাদেব দেশাই মহাশয়ের বাড়িটা দেখাইয়া দিলেন । মহাদেব দেশাই তখন গরমের জন্য ঘরের চুয়ার জানালা বন্ধ করিয়া কাজ করিতেছিলেন । নেপালচক্র রায় মহাশয়ের পত্ৰখানা ছাতে দেওয়া মাত্র আমাকে বসিতে বলিলেন । ঘরের এক কোণ জোড়া গালিচা পাতা, আশেপাশে দেশবিদেশের সব খবরের কাগজ ছড়াইয়া আছে। দুইটি আলমারীভরা বই, দেয়ালে ভারতবর্ষ ও গুজরাটের বড় বড় মানচিত্র ঝুলিতেছে। দেয়ালে ঠেস দিয়া সামনে একটি ছোট ডেস্ক লইয়৷ ইয়ং ইণ্ডিয়ার জন্য প্রবন্ধ লিখিতেছেন । শান্তিনিকেতনের অনেকের কথাই খুব আগ্রহ সহকারে জিজ্ঞাসা করিলেন। আমার শরীরের অবস্থা দেখিয়া বলিলেন, “এখন আপনি স্নান আহার করিয়া বিশ্রাম করুন, পরে সব কথা হবে”—বলিয়া গুজরাটীতে কি লিখিয়া জামাকে জাপিসে পঠাইয়া দিলেন। মহাদেব দেশাই লাচওড়া গৌরবান্তি প্রিয়দর্শন স্বপূৰ্ব্বৰ। মুখে প্রশান্তভাব, জিঙ্ক হাসি লাগিয়াই রহিয়াছে। বাংলা বেশ বোঝেন, অল্প অল্প বলিতেও পারেন । - - -