পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাব \ు 9 শান্তিনিকেতন হইতে রওনা হইয়। ১৯৩৮ সনের ৩রা এপ্রিল সবরমতী পৌছিলাম। আপিসে নারায়ণ দাস গান্ধী মহাশয়কে মহাদেব দেশাইয়ের পত্ৰখানা দেওয়া মাত্র তিনি আমাকে আপ্যায়ন সহকারে বসিতে বলিলেন। আপিসঘরটি জুড়িয়া মাদুর পাতা ছিল । তাহাতে টেবিল চেয়ার কিছুই নাই। দেয়ালে ঠেস দিয়া সাম্নে ডেস্ক লইয়া তিনটি মহিলা কাজ করিতেছিলেন - চিঠিপত্রের জবাব, হিসাবপত্র, ইত্যাদি। মাঝে মাঝে নারায়ণ দাস গান্ধী মহাশয় গুজরাটীতে র্তাদের কাজকৰ্ম্ম সম্বন্ধে কি বলিতেছিলেন । ইতিমধ্যে একটি ভদ্রমহিলা আসিলেন । র্তাহার উপর আশ্রম-অতিথিদের দেখাশুনার ভার। র্তাহার কাপড় পরিধানের ধরণ দেখিয়া মনে হইল তিনি মঙ্গরাষ্ট্রীয় । নারায়ণ দাস গান্ধী তাহার সঙ্গে আমাকে যাক্টতে বলিলেন। তিনি আমাকে একটা ঘর খলিম। দিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন আপনি কি থাবেন ?” অসময়ে অতিথিদের জন্য কি খাওয়ার ব্যবস্থা আছে তাহা জানি না বলিয়া বলিলাম, “খাওয়া যা-কিছু হলেষ্ট হবে। এখন স্নান বিশ্রামেরই বেশী দরকার ।" শৌচ ও স্বানের জায়গা দেখাইয়া তিনি চলিয়া গেলেন। তৃপ্তি সহকারে স্নানটি সারিয়া ঘরে আসিয়া দেখি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে ঘরটি বাট দেওয়া। নৃতন মাটির কলসীতে জল ভরা। আমার কম্বল কাপড়গুলি বেশ গুছান । থালায় ঢাকা খাবার আছে। এক বাট ঘোল, কয়েক টুকরা পাউরুটি, কয়েকটি পাকা টমেটে । তৃপ্তি সহকারে সেগুলি খাইয় গুইয়া পড়িলাম। নীরব আশ্রমের বিশ্রামকক্ষটি বড়ই আরামদায়ক বোধ হইতে লাগিল। পথে এই কয়ট রাত্রি দিন কানের মধ্যে যে একটা বিকট শৰ লাগিয়াছিল তাহ দূর হইয় গেল। একটু বিশ্রাম করিবার পর গুনিলাম আমার পাশের ঘরে এক ভদ্রলোক চরকা চালাইতে চালাইতে গান করিতেছেন। গান ও গলা শুনিয়া মনে হুইল বিদেশী কেহ হইবেন । পরে শুনিলাম তিনি মিঃ রেজিনাল্ড রেণল্ডস্ । বৈকাল ছয়টায় রাত্রির আহারের ঘন্টা পড়িল, কুমারী প্রেম বেন আসিয়া বলিয়া গেলেন; “খাবারের ঘন্টা পড়েছে। আপনি খেতে চলুম।” নারায়ণ দাস গান্ধী আমার অপেক্ষায় দাড়াইয় ছিলেন। তাহার সঙ্গেই খাবার ঘরে চলিলাম। পরদিন ৪ঠা এপ্রিল মহাদেব দেশষ্ট রণছোড় শেঠের সঙ্গে আমার ডাণ্ডি যাওয়ার সব বন্দোবস্ত করিয়া দিলেন। দশ দিন পর আবার আশ্রমে ফিরিয়া আসিলাম । আশ্রমে যাহা দেখিয়াছি ও বুঝিমাছি সংক্ষেপে তাহাই প্রাগনার স্থান বলিবার চেষ্টা করিব । ইহাতে ভুলভ্রাপ্তিও যে ঘাকিতে পারে না এমন কথাও বলিতে পারি না । সবরমতী- নদীর একেবারে উপরেষ্ট আশ্রম, নাম অনুসারে আশ্রমের নাম হইয়াছে সবরমতী আশ্রম। মহাত্মা গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকার কাজ শেষ করিয়া যখন ভারতবর্ষে ফিরিলেন, তখনও ভারতবর্গের রাজনীতিতে তিনি সাক্ষাৎভাবে জড়িত হন নাই। সেই সময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের নিজের আদর্শ অনুযায়ী শিক্ষা প্রবর্তন দেখিয়া সীক জনকয়েক ছাত্র লইয়। তিনি কিছু কাল শাস্তিনিকেতনে ছিলেন । পরে তিনি, স্বতন্ত্রভাবে সবরমর্তীতে শিখর স্থান প্রতিষ্ঠা করিলেন । সেই অবধি শাস্তিনিকেতনের উপর মহাত্মাঞ্জীর একটা আক্ষরিক টান আছে । তাহার কৰ্ম্মময় জীবনে যখনই সময় পাষ্টয়াছেন, তিনি শাস্তিনিকেতনে কাটাষ্টয়া গিয়াছেন । নদীটি পাহাড়ো নদী। অর্থ মাইলের উপর চওড়া। কেবল বালুর স্তর, তিন চার হাত জুড়িয় থর শ্ৰোত বহিয়া চলিয়াছে। কোথাও কোমর-জল, কোথাও গলা-জল, বর্ধার সময় কখনও ফুল ছাপাইয়া জল চলি যায়। নদীতে অসংখ্য মাছ, नौग्न