পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ur 6\, স্ফটিকের পাত্র ভরে স্বাগু, স্বস্বাছ, সুরভিত, স্বশীতল স্বরা আমার হাতে এনে দাও, আর আমার কানে কানে অবিশ্রাপ্ত বঙ্গ, এ স্বরা, স্বর, স্বর ” অজয়কে স্বীকার করিতে হইল, কবিতাটি তাহার পরিচিত নছে। অর্থটাও হঠাৎ বোধগম্য হইল না, বলিল, “খেতে দেওয়াই কি যথেষ্ট নয় ? কানে কানে বলতে হবে কেন ?” বিমান কহিল, “কবি হয়েও বুঝলে না 7 চোখ দিয়ে দেখে, জিরোয় আস্বাদ গ্রহণ করে, নিঃশ্বাসে সৌরভ নিয়ে, হাতের ম্পর্শে কাছে পেয়েও মন তৃপ্ত হয় না, এমনি সে জিনিষ । কান দিয়েও তাকে শুনতে ইচ্ছে করে।” অক্ষয় একেবারে চমৎকৃত হইয়া গেল। বহুক্ষণ ধরিয়া ফিরিয়া ফিরিয়া কবিতাটির উচ্ছ্বলিত প্রশংসা করিল। এরূপ কুন্দর কবিতা হাফিজের দেশ ছাড়া আর কোথাও লেখাই হইতে পারে না, বলিল। বিমানকে বারবার করিয়া অনুরোধ করিল, কবিটির কি নাম, এবং কোথায় কবিতাটি সে পড়িতে পাইতে পারে, বিমান যেন নিশ্চয় সে খবর তাহাকে দেয়। বিমান জ্ব কুঞ্চিত করিয়া শুনিতেছিল, হঠাৎ কহিল, “বল aws, she sells sea-shells on the sea-shore ?” wum of...", “she sells sea-shells on the seashore। কিন্তু হঠাৎ ওকথা ধে ?” •বিমান বলিল, “কিছু না। এইবার বল তোমার কথা। • স্থির হয়ে বসে যা আমাকে শোনাতে চাইছিলে। হঠাৎ এ অঘটন কেন ঘটল, দুঃখে তোমার অরুচি ধরে গেল।” এবারে গভীর আবেগের ভাষায় অজয় তাহার বক্তব্যটিকে ব্যক্ত করিল। কহিল, “একথাটা আমার বরাবর মনে হত যে আলাদা করে আমাদের দেশের বহুমুখী সমস্তাগুলিকে মেটাতে চেষ্টা করলে কোনদিন মিটবে না। সেগুলিকে একসঙ্গে করে একটিমাত্র বৃহত্তর সমস্তার মধ্যে ধরে যেদিন দেখতে পাৰ, সেইদিন তাদের সমাধান সম্ভব হবে। সেই সাধনাই ছিল এতদিন আমার জীবনে, যে জন্তে কোনো দুঃখকে আমি দুঃখ মনে করি নি, কোনো আত্মনিধাতন আমার কঠিন মনে হয় নি। সে সাধনার পথে সিদ্ধিলাভ আমার ঘটেছে । আমি বুঝতে পেরেছি আমাদের সমস্ত দুর্ভাগ্যের গোড়া কোনখানে । অতীতের কোনো এক সময়ে, আমাদের সভ্যতা আমাদের विषिकहरू, छ्थक नचांन कब्ररङ, छिकवृखिटक धर्रादाब्र SOBO আসনে বসাতে, এবং স্বর্থী হবার মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তিটাকে গায়ের জোরে লবঙ্গ করতে। আমি ভারতবর্ষের বাইরে কখনও যাই নি, তবু আমার মনে হয়, আর কোনো দেশের মানুষ দুঃখকে ঠিক এমন করে এতখানি বড় করেনি। জীবনকে প্রতিপদে প্রত্যাখ্যান, বৈরাগ্য দিয়ে তাকে অপমান, সেই অপমানের প্রতিদান দেশব্যাপী লাঞ্ছনার মধ্য দিয়ে আমরা পাচ্ছি। মনুষ্য-জীবন অনিত্য বলে প্রতিবেশী মানুষকে পৰ্য্যস্ত আমরা শ্রদ্ধা করতে ভুলে যাচ্ছি। এ জাতি দুঃখ পাবে না ত পাবে কে ? দুঃখভোগে আমাদের লজ্জা নেই। চরমতম অমৰ্য্যাদায় আমাদের লজ্জা নেই।... কেবল লজ্জা নেই ? তাই নিয়ে গৰ্ব্ব করতে চাইলেই আমরা করতে পারি। সেই গৌরবেরই ইমারত এত যুগ ধরে আমরা তৈরি করেছি। আমাদের বহুসহস্ৰ বৎসরের ইতিহাস দুৰ্গতির চরম তলায় তলিয়ে যাবার সাধনার ইতিহাস ।” বিমান ঠোঁট টিপিয়া একটু হাসিল । অজয় কহিল, “হাসছ যে ?” বিমান কহিল, “তোমার সত্যিই ধারণা, এইটেই আমাদের দেশের একমাত্র সমস্ত ? তা তোমার বেশী দোষ নেই। আমি তোমাকে এমন আরো দশটা সমস্তার কথা এই মুহূৰ্ত্তে বলতে পারি যার, যে কোনো একটার থেকেই একটা দেশের ভারতবর্ষের সমান দুৰ্গতি হতে পারে। কোনটাকে ফেলে কোনটাকে দেখবে ? তুমি যা বলছ, তার মানে এই দাড়ায় যে আমাদের দেশের সমস্ত দুর্ভাগ্যের স্বত্রপাত সেইদিন, যেদিন আমরা দেশের মনকে অন্তস্ফুর্থী হতে ডাক দিয়েছি। ছুদিক সামলান যায় না। ভারতবর্ষের আত্মিকতা তার পার্থিব স্বর্থ-সুবিধার বিরোধী। এক নিলে আর ছাড়তে হয়। আমরা খুব স্পিরিচুয়াল জাত বলে গৰ্ব্বও করব, আবার যারা ঘোর বস্তুবাদী তাদের সঙ্গে বস্তুর বখরা নিয়ে কাড়াকড়ি করব এ হয় না। আত্মাকেই ভারতবর্ষ যদি কামনা করে থাকে, তবে কায়মনোবাক্যে তাকে ত্যাগী হতে হবে। সে ত্যাগ, ত্যাগের বিলাস নয়, সে ত্যাগের মূৰ্ত্তি বিকট। সে ভাগ দুর্তিক্ষে, মহামারীতে, অজ্ঞানে, অম্বাস্থ্যে, পরাধীনতায়। আর পাখিৰ প্রতিযোগিতার আসরে নামবার ইচ্ছা যদি মনে থাকে, তাহলে আজ্জিৰীতার, অতীজিয়ের, জীবনাতীতের দোহাই পাড়া চলবে না ।