পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] উমাসহায়ং পরমেশ্বরং প্রভুং ত্রিলোচনং নীলকণ্ঠং প্রশাস্তম্। ধ্যাতৃ মুনিগচ্ছতি ভূতযোনিং সমস্তসাক্ষিং তমস: পরস্তাৎ ॥৭ এখানে শিবকে " উমী-সহায় বলা হইল। তৈত্তিরীয় আরণ্যকের নবম ও অষ্টাদশ অনুবাকে দুর্গ ও অম্বিকী বা উমাব উল্লেখ পাওয়া যায়। দুর্গ অগ্নির সহিত অভিন্ন ; উtহার কালী, করালী, মনোজবা হলোহিতা, কুধুম্ৰবৰ্ণ, স্ফুলিঙ্গিনী, শুচিস্মিতা নামে সপ্তজিহা (গৃহসংগ্ৰহ ১।৩।১৪ ; মুণ্ডকোপনিষৎ ১২৪ ) । • পাণিনির ব্যাকরণে ( ৪।১।৪১,৪৯ ) ইন্দ্রাণী, বরুণনী, শর্বাণী, রুদ্রাণী, মুড়াণী, পদ পাওয়া যায়। এই-সকলের মধ্যে ইন্দ্রাণী ও বরুণানী শব্দ ঋগ্বেদে পাওয়া যায়। মহাভারতের বিরাটুপর্বে কথিত আছে রাজা যুধিষ্ঠির দুর্গার স্তব করিয়াছিলেন। মহাভারতের ভীষ্মপর্বে কথিত আছে অর্জুন দুর্গার স্তব করিয়াছিলেন । ঋগ্বেদরচনাকালে ও ঐতরেয়-ব্রাহ্মণ-রচনাব{লে দেবপত্নীগণ দেবগণের সহিত যজ্ঞভাগ প্রাপ্ত হইতেন । উম হৈমবতী ব্রহ্মবিদ্যাকেই বলিত, কিন্তু অম্বিক রুদ্রের ভগিনী বলিয়া পরিচিত ছিলেন। ক্রমশঃ পরব্রহ্মের শক্তির অস্তিত্ব স্বীকৃত হইল এবং উমা মহেশ্বরের পত্নী ও মায়াশক্তি স্বরূপে উপাসিত হইলেন । সাংখ্যমতাবলম্বী ও অদ্বৈতবাদীগণও পরব্রহ্মের এই শক্তি স্বীকার করিলেন। মহাভারত-রচনাকালে ভারতবর্ষের প্রধান প্রধান নগরীতে দুর্গার মন্দির স্থাপিত হইয় তাহার পূজা হইত। এইরূপ নগরে দেবমন্দির প্রতিষ্ঠা অবস্থ্যকৰ্ত্তব্য বলিয়া অগ্নিপুরাণে ১-৬ অধ্যায়ে উক্ত হইয়াছে। “কারণ দেবালয়খুষ্ঠ নগর গ্রাম দুর্গ ও গৃহাদি পিশাচাদি কর্তৃক ভুক্ত ও রোগাদি দ্বারা অভিভূত হইতে পারে”। ১৬-১৭ মহাভারতেও দুর্গাকে ব্রহ্মবিদ্যা বল। হইয়ছে। উত্তরকালে পরিচিত অনেক নামও মহাভারতে পাওয়া যায় । যোগবশিষ্ঠ রামায়ণ রচনার সময়ে শক্তিরূপিণ দুর্গাদেবীর পুজা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। শিবের ভিন্ন ভিন্ন নাম ও পত্নীর কল্পনা যে পাণিনির পূর্ববৰ্ত্তী তাহাও পাইলাম । ধাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা ১।২৯০-২৯১— বিনায়কস্ত জননীমুপতিঠেৎ ততোহুম্বিকম্। দুর্বসর্ষপপুষ্পাণাং দত্ত্বাধ্যং পূর্ণমঞ্জলিম্ ॥ রূপং দেহি যশে দেহি ভাগ্যং ভগবতি দেহি মে । পুত্রন দেহি ধনং দেহি সর্বন কামাংশ্চ দেহি মে। অনন্তর বিনায়কজননী অম্বিককে দূর্ব সর্ষপ-পুপ দ্বারা অর্ঘ্য ও পূর্ণাঞ্জলি প্রদান করিয়া মূলের কথিত মস্ত্রের দ্বারা প্রার্থনা কয়িবে। কাতায়ন-সংহিতার প্রথম অধ্যায়ে মাতৃগণকে যত্বপূর্বক পূজা করিবার বিষয় উল্লেখ আছে। বিষ্ণু-সংহিতার ষটুপঞ্চাশং অধ্যায়ে দুর্গাসাবিত্রীর দ্বারা পুত হইবার উল্লেখ আছে। এই দুর্গাসাবিত্রী তৈত্তিীয়-ব্রাহ্মণে উল্লিখিত হইয়াছে। । কাতায়স্যৈ বিদ্মহে কন্যাকুমারী ধীমহি তন্নে৷ দুর্গি প্রচোদয়াৎ )—তৈত্তিরীয় আরণ্যক নবম অনুবাক । নারায়ণোপনিষৎমতেও এইরূপ । ললিতবিস্তরের চতুবিংশ অধ্যায় পাঠ করিলে চারিদিকে চারি শ্রেণীর অষ্ট শক্তির উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। গরুড়-পুরাণের পুর্ব খণ্ডে (অষ্টক্রিংশ অধ্যায়ে ) দুর্গাদেবী অষ্টাবিংশতিভুজা, অষ্টাদশভূজা, স্বাদশভূজা, অষ্টভুজ এবং চতুভূজ রূপে পূজিত হইবার উল্লেখ আছে। নবম্যাদি তিথিতে তাহার পূজা করিতে হইবে। ব্ৰহ্মাণী, মহেশ্বরী, কৌমারী, বৈষ্ণবী, বীরাহী, ইস্রাণী, চামুণ্ড ও চণ্ডিক এই অষ্টশক্তি এবং উহাদের অসিতাঙ্গাদি ভৈরবের পূজাবিধানও আছে (চতুবিংশ অধ্যায়) । কুঞ্জিকা-পূজারও বিধান কষ্টিপাথর-রামায়ণ-যুগের যন্ত্র-বিজ্ঞান ২১৩ আছে ( ষড়বিংশ অধ্যায় )। ত্রিপুরা ও জ্বালামুখীর পূজাবিধান আছে ( २०४ थश्वाम्नि) । অগ্নিপুরাণে ( অষ্টনবতিতম অধ্যায়ে ) গৌরী দেবীর প্রতিষ্ঠার প্রকার বর্ণিত হইয়াছে। এবং উমাপুজার বিবরণ ৩২৬ অধ্যায়ে উক্ত হইয়াছে । সঙ্কট হইতে তাঁরণ করেন বলিয়া দুর্গ নাম হইয়াছে (৩২৩ অধ্যায় । তিনি বেদগৰ্ভ, অম্বিক, ভদ্রকালী, ভদ্রা, ক্ষেমঙ্করী, বহুভুজ। নমে প্রসিদ্ধ ( ১২ অধ্যায় ) । আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে দেৰী গৌরীর পূজা করিবে। ইহার নাম গৌরীনবমী ব্ৰত। আশ্বিন মাসের শুরুপক্ষীয় অষ্টমীতে কস্তাতে সুর্য ও চন্দ্র মূলা-নক্ষত্রে সংক্রম হইলে তাহার নাম অঘাৰ্দ্দন নবমী। তৎকালে চও, প্রচণ্ডী, রুদ্রচণ্ড, চণ্ডেীগ্রা, চণ্ডনায়িকা, চওবর্তী, চগুরূপ, আতচণ্ডিকা, উগ্ৰচণ্ড ও মহিষমৰ্দ্দিনীর পুজা করিবে ; ইত্যাদি ( ১৮৫ অধ্যায় ) ৷ জয়ার্থী হইয়৷ আশ্বিন মাসের শুক্লাষ্টমীতে পটে ভদ্রকালীর মূৰ্ত্তি লিখিয়া এবং আয়ুধকৰ্ম্ম কাদিশস্ত্র ও ধ্বজ ছত্ৰচামরাদি যাবতীয় রাজচিহ্ন স্থাপন করিয়া যথাবিধি পুজা করিবে । রাত্রিতে জাগরিত থাকিয়া বলি-প্রদান করিয়া পরদিবস পুনরায় পূৰ্ব্ববৎ পূজা করিয়া প্রার্থনা করিবে—হে ভদ্রকালি ! মহাকালি ! দুর্গে ! দুৰ্গতিহারিণি ত্ৰৈলোক্যবিজয়ে । চঙি মাতঃ ! প্রসন্ন হইয়া আমার শাস্তি ও যশোবিধান করুন । ( २७ध्” एष१]iग्न ) ।। (মাধবী, আশ্বিন ) শ্ৰী মনীষিনাথ বসু সরস্বতী রামায়ণ-যুগের যন্ত্র-বিজ্ঞান রামায়ণের নানাস্থানে যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রশালার উল্লেখ আছে। যন্ত্রবিজ্ঞানে আর্য্যভারতের সভ্যতার কেন্দ্রভূমি অযোধ্যা জুপেক্ষা অনার্য্য-সভ্যতার কেন্দ্রস্থল লঙ্কাই অধিক উন্নত ছিল । মানবী জ্ঞান অপেক্ষ দানবী জ্ঞানে বৈচিত্র্যের পরিচয় অধিক প্রদত্ত হইয়াছে। ( লঙ্ক ৩ ) । অযোধ্য ও লঙ্কা—উভয় স্থানের বর্ণনাতেই দুর্গাদির ও যন্ত্রাদির উল্লেখ আছে । উভয় স্থানের দুর্গশীর্ষেই লৌহনিৰ্ম্মিত শত শত শতন্ত্রী নামক যন্ত্র রক্ষিত হইত। রামায়ণেব টীকাকার রামানুজ শতন্ত্রীকে নালিক আগ্নেয়াস্ত্র বলিয়া লিথিয়াছেন, রামায়ণে আগ্নেয়াস্ত্র ও নালিক অস্ত্রের বহুল উল্লেখ দুষ্ট হয় ; সুতরাং শতঘ্নীকে আধুনিক কামান-তুল্য আগ্নেয়-অস্ত্র বলিরা মনে করা যাইতে পারে। কুশধ্বজের সংকস্তা রাজধানীতেও প্রাকারোপরি যন্ত্রফলকসমূহের উল্লেখ আছে । ( র) ৭১ ) লঙ্কায় রাবণের শয্যা-গৃহে যন্ত্র-চালিত পাখ ছিল । হনুমান নিশাযোগে সেই কক্ষে যাইয়া কৃত্রিমবালহন্তে বীজামান পাখা বিস্ময়ে অবাক্ হইয়া দেখিয়ছিলেন। “বালব্যঞ্জনহস্তাভিকাঙ্গ্যমানং সমস্তুতঃ ” ৫৷৫১ • লঙ্কায় দানব শিল্পী বিশ্বকৰ্ম্ম-রচিত শূন্তগামী “পুষ্পক” নামক একটি যান বা বিমান ছিল । পুষ্পক ছিল হংসচালিত মহাবেগশালী বিমান। লঙ্কাকাও ১২৫ সর্গ ১ শ্লোক । উহা আরোহীর ইচ্ছানুসারে, ইচ্ছামুরূপ স্থানে অপ্রতিহত গমনে বিচরণ করিত । আকাশের উৰ্দ্ধদেশে উঠিয়া সেই স্থান হইতে নিয়স্থিত জনপ্রাণী, ঘরবাড়ীর আকৃতি কিরূপ দেখা যায়, কিষ্কিন্ধ্যা কাণ্ডের ৬২ সর্গে তাহার বর্ণনা আছে । এগুলি পরীক্ষিত সত্য বলিয়াই মনে হয় । সাগরে সেতুবন্ধনে কোন উচ্চ বৈজ্ঞানিক রীতি আচরিত হইয়াছিল