পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় পথ্য৷ ] মনুসংহিতায় এই জাতির উল্লেখ আছে। ঝল্ল-মল্ল-ভিন্ন প্রভৃতি প্রাচীন জাতিবাচক নাম সংস্কৃত সাহিত্যে পাওয়৷ যায়। বনবিষ্ণুপুরের মল্ল রাজগণ ক্ষত্রিয় বলিয়া পরিচয় দিতেন। গণ-কমু লক্ষ্য করিয়া প্রাচীন স্মৃতিকারগণ বহু অনার্য জাতিকে ত্রার্ত্য ক্ষত্রিয় গণনা করিয়াছিলেন। কিম্বদন্তীও এই বিষ্ণুপুরের রাজারা আদিতে বাগদী ছিলেন। এখানে শনিতেছি, তাহার মেট্যা জাতি ছিলেন, এবং বাঁকুড়ার মৎস্যজীবী মেট্যা জাতি আপনাদিগকে মল্লভূমির মেট্যা বলে । অন্তএ মেট্যা জাতি বাগদীর এক শ্রেণী বলিয়া গণ্য। বাগদীও মাছ ধরে, শিবায়নগ্রন্থে বাগ দীনীকে মাছ ধরিতে দেখি । মেদিনীপুরের বগড়ী পরগণায় বাগদীর বাহুল্য আছে। বোধ হয়, বকদ্বীপ শব্দের বিকারে ব-গ-ড়ী, অর্থাৎ যেখানে বক বিচরণ করিত। পূর্বকালে এই অঞ্চল জলাভূমিT ছিল। এখনও বহু স্থলে জলা ভূমি আছে। বোধ হয় ব-ক-দ্বী-পী (অর্থাৎ বকদ্বীপবাসী) হইতে ব-গ-দী—বাগদী শব্দের উৎপত্তি হইয়াছে। এদিকে দেখি, মা-টি-য় শব্দের ংক্ষেপে মে-ট্যা নাম । মৃত্তিজ, মাটি-জাত = মাটিয়া ; এইরূপ, ভূমি-জাত-ভূমিজ বা ভূঞা। মৃত্তিজ, ভূমিজ শব্দের অর্থ আদিম অধিবাসী (indigenous) আমাদের ভাষার ‘রাড়-বাগদী’, ‘রাড়-চোয়াড়ি', শব্দ দুইটি সকলেই জানে। প্রথমে মনে হয়, রা-ড় শব্দ রা-ঢ় শব্দের বিকার। তখন অর্থ হয়, রাঢ়ের বাগদী, রাঢ়ের চোয়াড়ি। কিন্তু, এই অর্থ ঠিক মনে হয় না। কারণ ব্যাকরণে বাধে । তা ছাড়া, রাঢ়ের সর্বত্র কিংবা অধিক স্থানে বাগদী ও চোয়াড় নাই। পরস্তু, রাঢ়ের তুল্য শ্রেষ্ঠ দেশও পূর্বকালে বিরল ছিল । এ কারণ মনে হয়, উভয় শব্দ দ্বন্ধ-সমাস-নিম্পন্ন সহচর শব্দ, যেমন বন-জঙ্গল, থালা-বাট ইত্যাদি। কবিকঙ্কণে । এই অল্পমানের স্পষ্ট প্রমাণ আছে। সেখানে ব্যাধ বলিতেছে, “আমি গো চোয়াড় রাড়।” অতএব চোয়াড়, যেমন এক জাতির দুর্ণাম ঘোষণা করিতেছে, রাড়ও তেমনঅপর এক জাতির নিন্দাবাচক নাম । সে কোন জাতি, কে জানে। হেমচন্দ্র কোষে স” রা-টি শব্দ আছে, অর্থ যুদ্ধ, কলহ, দ্বন্ধ। অতএব রাড়জাতি দ্বন্দ্ৰপ্রিয় ছিল । বাঁকুড়া সারস্বত সমাজের উদবোধন পত্র AMMAMAMMiAJAMAJJJSJJA AMSMMAMAMAMASJJS ২৩৫ চোয়াড় শবের অর্থেও প্রায় তাই বুঝায়। দস্যকে চুয়াড় বলিত। চুরি -আড়-চুরি-আড়—চুআড় (র লুপ্ত ) ৷ খেলায় দক্ষ যে, সে যেমন খেল আড়, খেলাড় ; চুরিতে দক্ষ যে, সে তেমন চুয়াড় ( দক্ষ, রত অর্থে বা আড় প্রত্যয় )। ভূমিজ জাতিব প্রতি চুয়াড় নাম প্রযুক্ত হইত। এই জাতি বাকুড়া, মানভূমি, ময়ুরভঞ্জ, কেঙঝর প্রভৃতি স্থানে অনেক আছে- ইহাদের বতর্মান প্রতাপ ও অল্প নয়। ভূমিজ জাতি রক্তের টাকা না দিলে কেঙ ঝরে রাজার অভিষেক সম্পন্ন হয় না । মানভূমির বিপিন ভূঞার শৌর্য শুনিলে চমৎকৃত হইতে হয়। ভূমিজ ব্যতীত মৃত্তিজ জাতি থাকে। এই জাতিই কি পূর্বে রাড় নামে খ্যাত ছিল ? মল্ল শব্দের এক অর্থ, বলিষ্ঠ, বাহযোদ্ধ। পূর্বকালে বাগদী জাতি সৈনিক হইত। মেলেরিয়া রোগের আক্রমণেব পূর্বে ইহারা লাঠীআল, ডাকাইত, দরোয়ান, দিগার (দিকৃপাল ) প্রভৃতি হইত। এহেন দেশে বিষ্ণুপুরের রাজবংশেব উদয় । ইয়াছিল। কবিকঙ্কণ কালকেতুর রাজ্যস্থাপন বর্ণন কবিয়াছেন । সেকালে সেরূপ রাজ্যের অভাব ছিল না। তথাপি বিষ্ণুপুরের প্রসিদ্ধি হেতু মনে হয়, কবিকঙ্কণ এই রাজ্য লক্ষ্য করিয়াছিলেন । বনবিষ্ণুপুরের পূর্বনাম কি ছিল, কে জানে। রাজার বৈষ্ণব ধৰ্ম্মে অনুরাগী হইবার পরে রাজধানীর নাম বিষ্ণুপুর হইয় থাকিবে। বাঁকুড়া জেলায় দশ লক্ষ লোকের মধ্যে বাগদী প্রায় এক লক্ষ । বাউর লক্ষাধিক । আচারে ব্যবহারে বাউরী আরও নীচ । বোধ হয়, স” ব-ব-র হইতে বাবরী, বাউরী নামের উৎপত্তি। বাঁকুড়ায় সাওতালও প্রায় এক লক্ষ । এই তিন জাতি মিলিয়। বাঁকুড়ার" প্রায পাচ আন। অধিবাসী । আশ্চর্য এক্ট, বাকুড়ায এক লক্ষ ব্রাহ্মণের বাস আছে । এই অসভ্য বর্বর দেশে ইহঁদের আদিপুর ষ কেন আসিয়াছিলেন, কে জানে। প্রাচীন কলিঙ্গের মধ্যে বাকুড়া পড়ে, এবং কলিঙ্গের পরেই উৎকলিঙ্গ, বতর্মান উৎকল । এই হেতু বাকুড়ায় উৎকলীয় ব্রাহ্মণের বাস বুঝিতে পারি। কিন্ত কি স্বত্রে কণৌজ