পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শোধ-বোধ পৌষ মাসের শীতের রাতে একটি শীর্ণ, কদাকার কুকুরছানা সসরাম সহরের পথে অতি কাতর ক্রনীনে পথিকদের জানাচ্ছিল যে সে অতি অসহায় । শীতে তার নড়বার শক্তি ছিল না। পথ দিয়ে অনেকেই গেল, কিন্তু কেউ তার দিকে দৃকপাত ও করলে না। ঝঞ্জনে একটা এক্কা সেই পথে যাচ্ছিল । পথের উপর এমন অনধিকারে বসে থাকার জন্যে ছোকরা একা ওয়ালা কুকুরছানাটিকে এক চাবুক বসিয়ে দিলে । আঘাত করা যার অভ্যাস হয়ে গেছে তার লঘু গুরু জ্ঞান বড় থাকে না । কুকুরছানাটি আঘাতের বেদনায় যখন বুকফাটা আৰ্ত্তনাদ করে উঠল তখন সেই পথের পথিক ছোট একটি বালকের বুকে তার কান্নার আঘাতটা গিয়ে বড় করুণভাবেই লাগল। বালক তখন শিক্ষকের কাছ থেকে পাঠ শেয করে বাসায় ফিরছিল। এমনঃঅত্যাচারটা কোমল-প্রাণ বালকের কাছে বড়ই খারাপ ঠেকুল, কুকুরছানাটিকে সাত্বনা দেবার জন্যে সে তার গায়ে হাত বুলিয়ে দিলে । ছানাটি দরদীর হাতের কোমল স্পর্শ পেয়ে শাস্ত হ’ল । কিন্তু সে শীতে বড়ই কাপ্‌ছিল । বালক নিজের বইবাধা স্বাকৃড়াটা খুলে’ কুকুরের গায়ে ভাল করে জড়িয়ে দিয়ে তাকে পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে সামনের একট। বাড়ীর দালানে একটি কোণে বসিয়ে রেখে দিলে। পরে পুকুরছানাটি যখন কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে পড়ল তখন বালক নিজের বাসায় ফিরে গেল। কিন্তু কুকুরছানাটি বোধ হয় এমন যত্ন কারও কাছে পায়নি। তাই সে বালকটির সঙ্গ ছাড়লে না। বালক যখন আপন মনে পথ চলেছিল তখন কুকুরছানাটি তারই পিছনে পিছনে tাচ্ছিল । যে শীতে এতক্ষণ পথ থেকে নড়তে পারছিল না, সে এখন দয়া ও স্নেহের উত্তাপে বল পেয়ে বালকের পিছনে পিছনে তার বাড়ী পর্য্যন্ত যেতে কিছু কষ্ট অহভব করলে না। বালক বাড়ী ঢুকুতে গিয়ে এই অনাহুত অতিথি কুকুরছানাটিকে দেখতে পেলে । বালকের কোমল প্রাণে দয়াটা শীঘ্রই আসে। সে আহারাদির পর নিজের আহায্যের কিছু ভাগ কুকুরছানাটিকে এনে দিলে—আর একটা ছেড়া চট এনে তাকে ঢাকা দিয়ে দালানের এক কোণে রাতের মত তাকে আশ্রয় দিলে । একটা কদাকার কুকুরছানাকে এতট। প্রশ্রয় দেওয়| বাড়ীর কারও মঞ্জব হ'ল না। পরদিন সকালেই কুকুরছানাটি বাড়ী থেকে বিতাড়িত হ’ল । কিন্তু সে বাড়ীর স্বমুখ ছাড়লে না। বালকটি লুকিয়ে তাকে নিজের আহাঁরের কিছু কিছু ভাগ দিত। পাঁচ মাস পরে গ্রীষ্মের ছুটিতে বালকটি তার বাপ-মার সঙ্গে দেশে গেল , কুকুরটি কিন্তু সেই দোর আগ লে পড়ে রইল। ছুটির পর যখন আবার সকলে ফিরে এল তখন বাড়ী ঢুকুতেই প্রথম দৃশ্ব যা দেখা গেল তা বড়ই ভীষণ ও আশ্চৰ্য্যজনক । উঠানের মাঝখানে একটা ভীষণকায় রক্তাক্ত মানুষ মবে’ পড়ে’ আছে – তার পাশেই কুকুরটিও মৃতপ্রায়—উঠবার বা নড়বার শক্তি নেই। তখনই পুলিশে সংবাদ দেওয়া হ’ল—পুলিশ-তদন্তে জানা গেল যে, মৃত লোকটি এক জেল-ফেরৎ চোর। কুকুরটির জন্যে একটি সোনার “মেডেল" তৈয়ারি হ'য়ে এল । কিন্তু তখন সে ঋণ শোধ দিয়ে পরপারে যাত্র। マーび金びg l আচাৰ্য্য শ্ৰীশুখ্ৰাম ভট্ট