পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ) সামাজিক স্বাচ্ছন্দ্যের মাপকাঠির ব্যবহার ও স্বাচ্ছন্দ্যবৃদ্ধির কয়েকটি উপায় ৩৬১ আমাদের দেশে ভবিষ্যৎ জাতির স্বাচ্ছন্দ্যের উপর দৃকপাত না করে', অজ্ঞান ও নিৰ্ব্বোধের মতই লোকে বংশবিস্তার করে থাকে। আমেরিকার অনেক স্থলে чSJs ifsäta (idiots ), Satu ( lunatics) s **I*R5 offs to ("habitual criminals ) oroবিস্তারে অসমর্থ করে দেওয়া আইনসঙ্গত করা হয়েছে । কোন কোন দেশে বিবাহের অনুমতিপত্র পাবার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষণ করাতে সকলে বাধ্য হয়। তার কারণ বংশগত ব্যাধি ( Hereditary disease ) কারুর থাকূলে তাকে বংশ বিস্তার করতে না দেবার চেষ্টা । বংশগত ব্যাধি কি কি এবং রোগ-বিশেষ বংশগত কি না, তা এখানে আলোচ্য নয় । কথাটা এই যে যে-সব ব্যাধি পিতামাতার থাকৃলে সন্তানের হয় বা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশী, সেইসকল রোগগ্ৰস্ত বংশের বিস্তার হওয়া সামাজিক স্বাচ্ছন্দ্যের দিক্‌ থেকে বাঞ্ছনীয় নয় । যাদের রোগ থাকে, তাদেরও স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব হয় এবং সমাজে রোগাক্রান্ত লোকের সংখ্যা বেশী থাকৃলে স্বস্থ লোকদেরও মানসিক অস্বাচ্ছন্দ্য হয়। রোগ বলাতে শারীরিক ব্যাধি বোঝায় না, মানসিক ব্যাধিও তার মধ্যে ধরা হয় ( বংশগত অত্যয়বুদ্ধিত, উন্মাদ অবস্থা, অস্বাভাবিক বৃত্তি ইত্যাদি ) । শরীর ও মন যে-সব বংশের লোকদের জন্মগতরুপে ব্যাধিগ্রস্ত, সেইসকল ংশের লোক ভবিষ্যৎ জাতিতে যত কম থাকবে, ভবিষ্যৎ জাতির সামাজিক স্বাচ্ছন্দ্য ততই বাড়বে। অবশ্ব কোন কোন শারীরিক ও মানসিক ব্যাধি বংশানুক্রমিক ত৷ বলা শক্ত, তবে কতকগুলি সম্বন্ধে সন্দেহ নেই এবং সেইগুলি সম্বন্ধে আইন থাকা উচিত। কেউ বলতে পারেন, যে ব্যাধিগ্রস্ত বংশে কি অতিমানব (super-man or genius) Sato al f *s, জন্মায় কখন কখন, কিন্তু তার চেয়ে হাজার গুণ বেশী জন্মায় রোগগ্ৰস্ত সাধারণ মানব । এই হাজার হাজার রোগী সমাজে না জন্মালে সমাজের যে পরিমাণ স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি হবে, দুই একটি অতিমানব জন্মালেও তার শতাংশের এক অংশ স্বাচ্ছন্দ্যও বাড়বে না। কবে এক অতি-মানবের আবির্ভাব হবে এই আশায় হাজার হাজার লোককে জীবন্মত করে সমাজের দুঃখ বাড়তে হবে কি ? তা ছাড়া এইরকম বংশের বিস্তারে দুঃখ সে বাড়বে এটা নিশ্চিত এবং অতি-মানব আসবে কি না তা এখনও অনিশ্চিত ; কেবল সম্ভাবনা অাছে মাত্র। এবং ব্যাধিগ্রস্ত বংশে হস্থ বংশাপেক্ষা অধিক অতিমালয় জন্মায় একথা কেহ প্রমাণ করেনি । বরং স্থস্থবংশেই অতিমানবের সংখ্যা অধিক । সুতরাং অতিমানব পেতে হ’লে রোগবিস্তার বন্ধ করে স্বাস্থ্যবিস্তার চেষ্টাই অধিক স্ববুদ্ধির লক্ষণ । কোন দিকে নজর দিয়ে কাজ করব আমরা ? অবশ্য এসব বিষয়ে আইন-প্রণয়নে অনেক ব্যাঘাত আছে। কোন পিতা-মাতার রোগ জন্মগত এবং কার রোগ স্বোপর্জিত, কোন রোগ রংশ - মুত্রমিক এবং কোনটি নয়, এসব ঠিক করা শক্ত এবং বিজ্ঞান এখনও এসব দিকে বেশী অগ্রসর হয়নি। তবে আইনের সাহায্য ছাড়াও ব্যক্তি যদি সামাজিক কৰ্ত্তবাবোধে চারিদিক দেখে তবে বিবাহ করেন এবং সন্দেহস্থলে সন্তান উৎপাদন সম্বন্ধে পাবধান হন, তা হ’লেও অনেকটা কাজ হয় । মোট কথা, সামাজিক স্বাচ্ছল্যের জন্য জাতির উৎকর্ষসাধন প্রয়োজন এবং তার একটা উপায়, বংশ বাছাই করে ভবিষ্যৎ জাতির উন্নতি-সাধন । কোনো একটা সমাজের লোকেরা শরীর ও মনের দিকৃ দিয়ে গুণবান বা নিগুৰ্ণ হয় দুটি কারণে। প্রথমতঃ জন্মগত কারণে এবং দ্বিতীয়তঃ পারিপাশ্বিক অবস্থায় গুণে বা দোষে । প্রথমটি নিয়ে অনেক-কিছু বলা হয়েছে। পারিপার্থিক অবস্থা বলতে ব্যক্তির বাইরে যে-কোন তথা সমুদয় কারণ বা অবস্থাকেই ধরা যায়। জন্মস্থানের স্বাস্থ্য, খাদ্য, জীবনযাত্রার প্রণালী, শিক্ষা, প্রাকৃতিক দৃশু, সামাজিক রীতি-নীতি, পারিবারিক আচার-ব্যবহার, বন্ধুবান্ধব, রাষ্ট্রীয় অবস্থা ইত্যাদি সব কিছুই পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে পড়ে । শিশু যতদিন মাতৃগর্ভে বাস করে, ততদিনও যে সে পারিপার্থিক অবস্থার হাত থেকে মুক্ত থাকে তা নয়। মা যদি মদ খায়, তা হ’লে শিশুর অপকার হয়। মা যদি না খায়, অখাদ্য খায়, বা অতিরিক্ত খায়, তাতেও শিশুর অপকার হয়। মায়ের ভিতর দিয়ে হ’লেও পারিপার্থিক অবস্থা তার ছাপ জন্মের আগেও