পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8S98 আমার উদ্দেশ্য নয় । মেনেই নেওয়া গেল যে, আমাদের কাৰ্য্যক্ষেত্র অনেকটা সঙ্কীর্ণ এবং তার উপর আমাদের কোন হাত নেই এবং যে পরিমাণে আমাদের রাস্তা খোলস হয়েছে, সেই পরিমাণে আমরা নানাদিকে অগ্রসর হতেও পেরেছি। আমার কথাটা হচ্ছে এই যে আমরা যে পথ ধরে' চলি সে পথেও অনেক সময় লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে নিজেদের অনর্থক সাফল্য থেকে বঞ্চিত করি ;–এটা যে জাতিহিসাবে আমাদের কত বড় একটা লোক্সান, তা বুঝাবার চেষ্টা করাই আমার উদ্দেশু । ওকালতি, ডাক্তারি, প্রভৃতি অল্প কয়েকটি অর্থকরী বিদ্যাই মাত্র আমাদের আয়ত্ত—এটা স্বীকার করলেও আমরা কি দেখতে পাই ? বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপ নিয়ে আমরা যখন স্ব স্ব জীবিকা অর্জনের পথে বাহির হই, তখন গোড়া থেকেই আমাদের আক্ষেপ হয় কেন আমাদের পসার জমে উঠল না । ‘শ তমারী ভবেং বৈদ্য' এ কথাটির মূলে যে সত্যটি আছে, দীর্ঘকালের অভিজ্ঞতা ব্যতীত যে নিপুণ ভিষকু বা আর কিছু হওয়া যায় না, সেটা আমরা ভুলে যাই । যতদিন পসার জমে না উঠে, ততদিন নিজ নিজ অধীত বিষয়ে নব নব তথ্য, নূতনতর অবিক্রিয় গুলির সঙ্গে যোগ সাধনের চেষ্টা করলে ভবিষ্যতে যে কাজ দেখতে পারে, জ্ঞানবিজ্ঞানের মূল স্বত্রগুলি ভাল করে আয়ত্ত করবার প্রয়াস পেয়ে বিফলমনোরথ হলেও যে অনেকদূর এগিয়ে যাওয়া যায়, এ কথাগুলি কদাচিৎ আমাদের মনে স্থান পায় । অধীতবিদ্যার উৎকর্ষ সাধনত দুরের কথা, সারস্বত মন্দিরের বাইরে এসে পুস্তকস্থ যে বিদ্যার বলে ব্যবসায়-ক্ষেত্রে প্রবেশ লাভের অধিকার পেয়েছি, তাই ভুলে যেতে স্বরু করি এবং তাস পিটিয়ে বড়ের চাল দিয়ে ‘হেসে নাও দুদিন বৈ ত নয়’ নীতির অনুসরণ করে’, সুদীর্ঘ অবসরটাকে জগদল পাথরের মত বুকে চেপে বসতে না দিয়ে, লঘু স্বচ্ছ শারদীয় অভ্রের মত নীলাকাশের গায় উড়ে যেতে পাবুলে আমরা পরম আরাম উপভোগ করি, একথা অধিকাংশ শিক্ষিত যুবকের পক্ষেই খাটে । অনেকে বলতে পারেন, পেটে খেলে পিঠে সয়, বুভুক্ষিতঃ কিং ন করে।তি পাপং ; যতদিন দারুণ বুভুক্ষ প্রবাসী-মাঘ, లిలిe [ २०* ऊांशृं, २घ्न १७ ..خحیے জঠরকে পীড়া দিতে থাকে, ততদিন একনিষ্ঠ জ্ঞানচর্চা পোষায় না। কিন্তু যদি বুৰ তাম যে ‘হা অর্থ যে অর্থ করে কেবল হা-হুতাশ করতে থাকলে, কিম্বা খেলে বেড়িয়ে গল্পগুজব করে সময়টাকে কাটিয়ে দিলে, আমদের ভাগ্যে সেই অমরবাঞ্ছিত রৌপ্যচক্র-লাভ ঘটবে, তাহলে কোন কথাই ছিল না। বরঞ্চ এইটাই সত্য যে, যদি আমাদের দৈন্যের অবকাশে কঠোর শ্রমশীলতা দ্বারা আমরা অধীতবিদ্যার উৎকর্ষসাধনে তৎপর হই, তাহলে আমাদের আয়াস-ও-অমুশীলন-লব্ধ বিশিষ্টতা বেশী দিন চাপ থাকবে না, এবং তার উপযুক্ত মজুরী না মিললেও আর্থিক হিসাবেও সেটা কোন দিন লাভজনক হয়ে ” দাড়াবে । সেই শুভ মুহূৰ্ত্তের জন্য অলসভাবে প্রতীক্ষা করতে থাকুলে তার আগমন স্বদুরপরাহত হবে । তার জন্ত কঠোর সাধন দ্বারা প্রস্তুত হতে হবে, দীর্ঘ অভিসারসাজে সজ্জিত হতে হবে । সময়ের এরূপ সদ্ব্যবহার থেকে . নিজের উপর শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস বেড়ে যাবে, মনের স্বায়ুগুলি সতেজ ও দৃঢ় হবে ; বাইবেলের ভাষায় বলতে গেলে, ভগবদ-দত্ত যে talentটি, যে পুজিটি, নিয়ে আমরা ংসার-ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছিলাম, তাকে স্বদে খাটিয়ে বাড়াতে পেরেছি বলে’ একটা অনিৰ্ব্বচনীয় আত্মপ্রসাদ লাভ করব । প্রতি মাস-কাবারে নির্দিষ্ট বেতন পেয়ে দৈনিক উপার্জনের চিস্তা থেকে মুক্ত হতে পারা যে কত বড় মুক্তি, সেটা আমি বিলক্ষণ জানি। কিন্তু সেই অর্থচিন্তা-রূপ বাহ দাসত্ব থেকে মুক্তি যদি আমাদের আলস্ত বাড়ায়, মানসিক জড়তা বেশী করে’ এনে দেয়, তা হলে সে মুক্তিটাই একটা ভীষণ বন্ধনে পরিণত হয়। যদি এই জড়তাই চাকুরি-জীবনের বিশেষত্ব হয়, তবে সে বন্ধনের শৃঙ্খল দ্বারা আপনাদের অধিকাংশের কর কলঙ্কিত হয় নি বলে আক্ষেপ করবার কোন কারণ দেখতে পাই না। বস্তুত: দারিদ্র্য কথাটাই হচ্ছে আপেক্ষিক স্বল্পে সন্তুষ্ট হওয়া বা না হওয়া কারও প্রকৃতিগত, কারও নয়। বাণীর শ্রেষ্ঠ সেবকগণ-যাদের নাম জগতে অমর হয়ে আছে—আর্থিক হিসাবে প্রায় কেউই বড়লোক ছিলেন না । কবি হেমচন্দ্রই সে কথা বলে গিয়েছেন –