পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] 邻 মুক্তিপ্লাবন 8Ne(t মুক্তিপ্লাবন ওমরের খুব নাম-ডাক শুনে গ্রীসের রাজা তার বার্তা নিতে সভা হতে দূত পাঠিয়েছেন। ওমরের সন্ধানে দূত এসে হাজির , রাজ প্রাসাদ নেই, শাস্ত্রী নেই, পুরজনের কলরব নেই ; আছে কেবল বিধবাবেশে অসীমপ্রসারিণী মরুস্থলী ও তার মাঝে মাঝে থোৰ্ম-গাছ। রাজসদনের চিহ্নই যখন চোখে পড়ল না, তখন বাৰ্ত্তাহর একজন পথের মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ওগো বাছা, ওমর খলিফার ভবন কোথা?” মেয়েটি বলল, “তিনি তো মাঠে ঐ খোর্শ্বতলায় শুয়ে রয়েছেন।” কথা শুনে দূত তো কিছুই ঠাওর করতে পারলেন না, ভাবলেন, মেয়েটি বুঝিব। ঠাট্টা কবুল। যা হোক তিনি ঐ গাছটির দিকেই চললেন। খানিকদুর যেতেই দেখেন, গাছতলাতে চেটাইয়ের উপর কে যেন শুয়ে আছে ; গায়ে তার ছেড়া তালি-দেওয়া কাপড়— ফকীরের বেশ ; কিছুতেই তার মনে নিচ্ছে না যে ঐ দরবেশই ওমর খলিফ। তখনও ওমর ঘুমিয়ে আছেন, মূৰ্ত্তির সে দীনতা ভেদ করে কি এক অসামান্য তেজ ফুটে বা’র হচ্ছিল, তাতে র্তার মত বড় বড় রাজসভাচারী দুতরাজকেও অভিভূত করে ফেলল। এমন সময়ে ঘুম থেকে উঠে ওমর নিজ পরিচয় দিলে তার সন্দেহ অপনোদন হ’ল ; সামান্তক্ষণ আলাপেই দূত বুঝতে পারলেন কেন সেই দীনতার অবতার সৰ্ব্বসাধারণের হৃদয়জয়ে সক্ষম হয়েছিলেন । দরিদ্ৰাদপি দরিদ্র প্রজার সাথে সমান জীবন কাটিয়ে ভগবানের চরণে ব্যক্তিগত পার্থিব বাসনা সঁপে দিয়ে ইস্লামমণি ওমর খলিফ ভ্রাতৃত্ব ও সাম্যের মস্ত্রে গণতন্ত্রের জীবন্ত মহান আদর্শ রেখে গিয়েছেন । পৃথিবীর আর-এক ধারে আর-এক সময়ে এই-রকম জার-একজন মহাপুরুষের আবির্ভাব হয়েছিল। এক দুপুর রাতে গণতন্ত্রের অগ্রদূত আমেরিকার যুক্তরাজ্যের স্বসন্তান এব্রাহাম লিন্‌কলন প্রেসিডেন্টের ঘরে নিদ্ৰিত ; এক বুদ্ধা সে রাতে বিপদে পড়েছে, সে সেই অসময়ে আবেদন নিয়ে প্রেসিডেন্টের ঘরে এসে হাজির। তিনি তখনই উঠে বৃদ্ধর বিপদুদ্ধারের ব্যবস্থা করে দিলেন। লিনকলন বড় পদ পেয়েও আত্মবিস্মৃত হননি ; তিনি র্তার কাজ ও চরিত্রের দ্বারা রাজকীয় ক্ষমতার বর্শ্ব ভেদ করে আমেরিকার আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার আপনার জন হয়েছিলেন ; যিনি আমেরিকার বিশাল যুক্তরাজ্যের সভাপতি বা কর্ণধার হয়েও নিজেকে জনসাধারণেরই একজন, আর কাজে চিন্তায় ও কথায় নিজেকে সাধারণের সামান্য ভূত্য জ্ঞান করে গৌরব অনুভব করতেন, সেই নরদেবতার চরিত্রগরিমায় ক্ষমতার সিংহাসনে আরূঢ় পশুবলদৃপ্ত কোন মানুষের না উচ্চশির স্বতঃই নত হয় ? সমাজজীবনেই বা কি, ব্যক্তির জীবনেই বা কি, আত্মা যতক্ষণ নিজেই নিজের প্রভু হতে না পারছে, ততক্ষণ তার শান্তি কোথায় ? গণতন্ত্র বা Democracy জাতির ও সমাজের সর্বাঙ্গে মুক্তি দেওয়ার একটা আশা ও আকাঙ্ক্ষামূলক প্রয়াস ; সঙ্ঘের মধ্য দিয়ে প্রণালীবদ্ধভাবে একটা অধ্যাত্ম আদশের দিকে সমাজকে চালানর প্রয়াস মানবইতিহাসে সেদিন মুরু হয়েছে মাত্র। গণতন্ত্রই যে সমাজের সকল রোগের ঔষধ, সকল-দুঃখ-অপহারী, এটা আশা করা অন্ততঃ এর বর্তমান অবস্থাতে অন্যায় ; গণতন্ত্রের মহান উদ্দেশ্য এখনও সকল জায়গায় সফল হয় নি ; তাই বলে’ যে এর ভবিষ্যৎ চিত্র আঁধারময় তা বলা বাতুলতামাত্র ; সফলতা-বিফলতার মধ্য দিয়েই শেষ বিজয় খুবই সম্ভব ইহারই । প্রাচীন আথেনীয় ( গ্ৰীক ) বা আজ পর্য্যস্ত স্বইজারল্যাণ্ডে (ribso jox (Direct Democracy) হ’তে আরম্ভ করে’ ( Executive ) শাসনপরিষদের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত ও খৰ্ব্ব করতে নিত্য-উপায়-উদ্ভাবনশীল নব প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্র বা Democracy ( যার আদর্শ হ'ল ব্রিটিশ রাষ্ট্রতন্ত্র ) পৰ্য্যস্ত সবই সেই প্রয়াসের ইতিহাস । প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্রের উপর অধুনা সাধারণের আস্থা কমে আসছে ; কারণ প্রতিনিধিরা জাতির সাধারণ Representative ইচ্ছাকে কাৰ্য্যে ঠিক পরিণত করতে পারেন না ; অনেক