পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] ঘুমিয়েছিলাম বড় গভীর ঘুমের ঘোরে, শ্মশান-ঘাটে নদীর দিকে শিয়র করে’ । ঘুমিয়েছিলাম মিশিয়ে গিয়ে মাটির সনে, জলের ছলচ্ছলধ্বনির কলম্বনে । দুপুব-রাতে সেই শাড়ী আর সেই সি দুরে জেগে উঠে হঠাৎ শুনি কাল্লা দূরে ! মেয়ে কঁাদে—অীমার নন্দ রাণীর গলা— কী যে করুণ কাতর স্বরে,—যায় না বলা ! “মাগে। অামার, আজকে রাতে অয়ি না মাগো, একলা আছি কেউ কাছে নেই, দেখে যাগো ! কেউ করে না–একটু এসে আদর কর, আর-একটা যে ম| এয়েছে নতুনতর ! অন্ধ কারে একলা শুয়ে ভয় যে করে ! নেই বিছানা—হয় না যে ঘুম মাটির পরে । পেট জলে যে দিনে-রাতে ক্ষুধায় মরি— কেমন করে বলুন মাগো ঘুমিয়ে পড়ি ?” অসাড় অঘোর ঘুমিয়েছিলাম মরণ-ঘুমে— কান্না শুনে ঘুম যে ভাঙে শ্মশান-ভূমে ! নিবিয়েছিল চিতার আগুন নদীর কুলে— ঘুমিয়েছিলাম,—আবার দেখি নয়ন খুলে’ আঁধার ধরা,—চাদের মুখে রক্ত কেন ? তারার চোখে জলের ফোটা—কাদছে যেন! গেলাম হেঁটে শীর্ণ মুখে ঘোমটা তুলে', বাড়ীর ভিতর এলাম শেষে খিড়কী খুলে— ঘরটিতে তার ঘুটঘুটে কী অন্ধকার! তাইতে তবু শাদা দেখায় মুখ আমার ! *ওমা মাগো —এই যে তোমার পেইছি দেখা ! ভয় করে যে মুখের পানে চাইতে একা । মুখে তোমার রক্ত যে নেই, চোখ যে ঘুমায় ।” ভয় গেল তার একটু হাসি একটি চুমায়। 8Ե-Գ মাথায় দিলাম হাত বুলিয়ে, গান শুনিয়ে ছড়ার স্বরে, দিলাম দোলা বক্ষে নিয়ে । “অমনি করে গুনগুনিয়ে গাও না মাগো ! ঘুম এসেছে, চক্ষে যে আর দেখছি না গো !” চুমু খেলাম-কান্না তখন চাপতে হ’ল— বছি আমার ঘুমিয়ে প’ল ঘুমিয়ে প’ল ! সেই শ্মশানে নদীর কুলে ছিলাম শুয়ে, নন্দ আছে বুকের উপর মুখটি পুয়ে ; মুখে তাহার রক্ত যে নাই একটুখানি, তবু কেমন ঘুমিয়ে হাসে নন্দরাণী ! এমন সময় শিশুর করুণ কণ্ঠস্বরে ঘুম ভেঙ্গে যায়, প্রাণের ভিতর কেমন করে ! সে যে আমার ছেলের গলা — অামায় ডাকে— ন্যা ওটা ছেলে পঞ্চু আমার ডাকৃছে কাকে ! “ওর মারে—গায়ে আমার বড়ই ব্যথা— দুষ্ট, বলে গাল দি ওদের—সত্যি কথা ! দেয় না খেতে—ক্ষুধায় জ্বলি দিবস-রাতি— ইচ্ছে করে পালাই কোথা, নেই যে সার্থী !” ঘুমিয়েছিলাম স্বপনবিহীন মরণ-ঘুমে, ভঙল তবু সে ঘুম আমার শ্মশান ভূমে । নিবিয়েছিল চিতার আগুন নদীর কুলে, ঘুমিয়েছিলাম,—আবার দেখি নয়ন খুলে, আঁধার ধরা, চাদের মুখে রক্ত কেন ? তারার চোখে জলের ফোট—কাদছে যেন ! গেলাম চলে’ শীর্ণ মুখে ঘোমটা তুলে— ঘরের ভিতর এলাম শেষে খিলটি খুলে । “ওমা মাগো, এই যে তোমার পেইছি দেখা, ভয় করে না তোমার পানে চাইতে একা ; নাও কোলে নাও, খাও না চুমু গালের পরে— বড় কাহিল, অবশ দেহ ব্যথার ভরে !"