পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8bb শক্ত ছেলে—ভয় পেলে না, উঠল হেসে ! আহলদে হাত বুলিয়ে দিলাম মাথায় কেশে । বুকে তুলে দুই গালে তার দিলাম চুমা, গানের স্বরে কইমু কানে—‘এবার ঘুমা’ । “অমনি করে গুনগুনিয়ে গাও ন মাগো— ঘুম এসেছে, চক্ষে যে আর দেখছি না গে৷ ” চুমু খেলাম-কান্না তখন চাপ তে হ’ল, বাছ আমার ঘুমিয়ে প’ল ঘুমিয়ে প’ল ! সেই শ্মশানে নদীর কূলে ছিলাম শুয়ে,— ছেলে মেয়ে এক বুকেতে ঘুমায় দু’য়ে । ঘুমিয়েছিলাম—হঠাৎ জেগে ভয় যেন পাই, আর-দুটিরে ঘুম থেকে আর জাগাই নি তাই ! কচি ছেলের কান্ন। শুনি অন্ধকারে— বোল ফোটেনি, চি চি করে ডাক্‌ছে কারে ? ও যে আমার কোলের ছেলে—থেfকার গলা— নেহাৎ কচি-বেtল ফোটেনি—হায় অবলা ! কেউ দেখে না, নেয় না তীরে—বfছ। আমার ! মায়ের বুকের দুধ না পেয়ে বঁচে না আর ! ঘরে গেলাম তাড়াতাড়ি খিলটি খুলে, দেখি খোকন শুকিয়ে গেছে—নিলাম তুলে, কত করে থামল বাছাবু ফুপিযে-ওঠ, মুখে দিলাম হাড় বেরোনে বুকের বোট । প্রবাসী -মাঘ, ১৩৩০ { ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড সেই রাঙা-চাদ দিচ্ছে উকি আকাশ থেকে— পাংশু হ’ল আমার চাদের সে-মুখ দেখে ! চুমায় চুমায় কান্না আমার চাপতে হ’ল, খোকন তখন ঘুমিয়ে প’ল ঘুমিয়ে প’ল ! ঘুমিয়ে প’ল, নেতিয়ে প'ল'-অার সাড়া নেই, শুইয়ে দিলাম মেঝের উপর অন্ধকারেই ! হাত-পা’গুলি সমান করে? দিলাম রেখে, গায়ের উপর দোলাইখানি দিলাম ঢেকে । ছুটে দেখি আর-এক ঘরে—স্বামীর পাশে সতীন ঘুমায়—তারই কেবল ঘুম না আসে । দেখেই আমার চিনলে, তবু লাগল ধাধী, সেই আঁধারে মুখ যে আমার দেখায় শাদ ! চোখে-চোথে যেমন চাওয়া—কী চীৎকার! জানি তখন, ঘুম হবে না আর যে তার ! চুপে—চুপে ফিরে এলাম সেই শ্মশানে, খানিক পরেই থোকায় তার সেথায় আনে । বড় দু’জন দুই পাশেতে-কাছে কাছে – খোকন আমার বুকের দু: ঘুমিয়ে আছে। আমরা সবাই ঘুমাই জলের কলম্বনে, ঘুম হবে না এক সে জনার এই জীবনে ৷” শ্ৰী মোহিতলাল মজুমদার

  • একটি ইংরেজী কবিতার অনুকরণে।

চালপড়া চালপড়ার নাম অনেকেই বোধ হয় শুনিয়াছেন । পাঠশালে যখন পড়িতাম তখন বার কয়েক চলিপড়া খাইবার সৌভাগ্যও আমার হইয়াছে। কোন বালকের পুস্তকাদি অপহৃত হইলেই, আমাদের বিজ্ঞ গুরুমহাশয়টি এই চালপড়ার হাঙ্গামা করিয়া বসিতেন । কোন জিনিষ চুরি হইলে, পল্লীগ্রামে এখনও চালপড়া খাওয়াইবার ভয় দেখান হয়। যে চুরি করিয়াছে, চালপড় খাওয়াইলে নাকি তাহার মুখ দিয়া রক্ত উঠে এবং আসল চোর ধরা পড়ে। চালপড়ার প্রবাদটি আমাদের দেশে সৰ্ব্বত্র প্রচলিত, কিন্তু ওই জিনিষটা খাওয়াইয়া চোর ধরিতে কেহ স্বচক্ষে দেখেন নাই, বোধ হয় । তা ছাড়া এই চালপড়া জিনিষট। কি ? ইহার মূলে কোন সত্য আছে, না গল্প মাত্র ? কত শিক্ষিত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতকে জিজ্ঞাসা করিয়াছি, র্তfহার বলেন, “ও একটা ভয় দেখাইবার ফন্দি।” প্রাচীনকালে ভারতে শাস্ত্রাঙ্গুমোদিত পরীক্ষার দ্বারা দোষী নির্দোষী স্থির করা হইত। শাস্ত্রগ্রন্থে এইরূপ নয়