পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ ১৬ صبح سیصح سته اصه » میسمس - তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিলেন, “খবরদার মিত্র, বিমানকে তুমি এবিষয়ে কোনো কথা বোলে না ! এ চিঠির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।” “কেমন করে’ তুমি জানলে যে র্তার সম্পর্ক নেই ?” “এ একজন কোন হরেন্দ্রনাথ সেন লিখেছে—একেবারে অন্য হাতের লেখা। চিঠি নিয়ে তুমি দেখতে পার" বলিয়া জয়ন্তী পত্ৰখানা সুমিত্রার দিকে বাড়াইয়া ধরিলেন । স্থমিত্ৰ হাত সরাইয়া লইয়া কহিল, “চিঠি আমি দেখতে চাই নে, কিন্তু এ চিঠি যে বিমান বাবু লেখান নি তা তুমি কি করে জানলে ?” ব্যস্ত হইয়া জয়ন্তী কহিলেন, “যে-রকম করেই হোক আমি তা জানি।” “তা হলে কে এ চিঠি লিখেছে তাও বোধহয় তুমি জান ?" এই কঠিন প্রশ্নে উভয়-সঙ্কটে পড়িয়া জয়ন্তী বিব্রত হইয়া উঠিলেন। ক্ষণকাল বিমূঢ়ভাবে নিঃশব্দে চাহিয়া ৰাকিয়া সহসা স্থমিত্রার সন্নিকটে উপস্থিত হইয় তাহার হাত চাপিয়া ধরিয়া বিহবলভাবে বলিলেন, “লক্ষ্মীটি স্বমিত্র, এ কথা নিয়ে মিছিমিছি গোল করিস নে ! অামি তোর মা, আমার কথা বিশ্বাস কর, যা হয়েছে ভালই হয়েছে। তুই ছেলেমান্বষ, তাই সব কথা বুঝতে পারছিস্ নে ? o “সত্যি-সত্যিই বুঝতে পারছি নে!” বলিয়া উচ্ছলিত অশ্রু রোধ করিতে করিতে স্থমিত্র ড্রয়িংরূম হইতে বাহির হইয়া গেল। কিন্তু নিজ কক্ষে পদার্পণ করিবামাত্র তাহার এতক্ষণের যত্ন-নিরুদ্ধ দৃঢ়ত তাহাকে একেবারে পরিত্যাগ করিল। তাহার অবসন্ন ক্লিষ্ট দেহ একটা ইজিচেয়ারে বিলুষ্ঠিত হইয়া পড়িল এবং নেক্স হইতে অসংরুদ্ধ তপ্ত অশ নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহে ঝরিতে লাগিল । তাহার ৭র বহু ক্ষণ পরে সে যখন বর্ষাবিধৌত আকাশের মত তাহার দুঃখ-পরিসিক্ত হৃদয়ের মধ্যে অবলোকন করিবার অবকাশ পাইল, দেখিল নিভূত-নিহিত কোন বস্তুর উজ্জল প্রভায় তাহার ধনকৃষ্ণ মেঘের মত দুঃখ ও মানি ৰখন অলক্ষিতে প্রাণী—মাঘ, ১৩৬ [ ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড اسمی. বিচিত্র বর্ণে রঞ্জিত হইয়া উঠিয়াছে ! স্বরেশ্বরকে সে যে-সকল কথা বলিয়াছিল এবং তদুত্তরে স্বরেশ্বর তাহাকে যাহা বলিয়াছিল তাহা সে মনে মনে বারম্বার আলোচনা করিয়া দেখিতে লাগিল, এবং যতই আলোচনা করিয়া দেখিতে লাগিল ততই বুঝিতে পারিল যে বাক্যের সাহায্যে পরস্পরে যতখানি ব্যক্ত করিয়াছে, বাক্যের ফঁাকে ফণকে তদপেক্ষ অনেক অধিক ব্যক্ত হইয়া গিয়াছে এবং ঘটনাস্থলে জয়ন্তী প্রবেশ করায় যতটুকু পরিতাপের কারণ ঘটিয়াছিল জয়ন্তী প্রবেশ না করিয়া সেদিনকার ঘটনা পরিসমাপ্ত হইলেই মোটের উপর অধিকতর পরিতাপের কারণ ঘটিত । সন্ধ্যার পর বিমানবিহারী নিয়মিত বেড়াইতে আসিয়াছিল । ড্রয়িং-রূমে আর সকলেই সমবেত হইয়াছিল, শুধু সুমিত্র আসে নাই। দ্বিপ্রহরে প্রমদাচরণ বেদাস্তভায্যের যে-অংশটুকু পাঠ করিয়াছিলেন তাহা দ্বিতীয়বার আলোচনা করিয়া লইবার উদ্দেশ্যে বিমানবিহারীকে বুঝাইতে বিবিধ প্রকারে চেষ্টা করিতেছিলেন ; কিন্তু বিমানবিহারী সে কুট প্রসঙ্গের মধ্যে মনঃসংযোগ করিবার কিছুমাত্র চেষ্টা না করিয়া অনাগ্ৰহ-ভরে শুধু তাহা শুনিয়া যাইতেছিল এবং মধ্যে মধ্যে দুই-একটা অসংলগ্ন বাক্যের প্রয়োগে কোনো প্রকারে আলোচনায় যোগ রাখিয়া চলিয়াছিল । সমস্ত দিনের পরিশ্রম ও ক্লাস্তির পর প্রমদাচরণের নিকট বেদান্ত-ভায্যের লোভে যে বিমানবিহারী উপস্থিত হয় নাই, এবং প্রমদাচরণ যে তাহার লক্ষ্য নহেন, উপলক্ষ্য, একথা প্রমদাচরণ বুঝিতে ন পারিলেও জয়ন্তীর বুঝিতে বিলম্ব হয় নাই। তাই অদুর-ভবিষ্যতের এই ডেপুটিজামাতার মনোরঞ্জনার্থে জয়ন্তী বিমলাকে বলিলেন, “বিমলা, সুমিত্রা এখনও এলো না কেন ? তাকে ডেকে নিয়ে আয় ত, বিমানকে ছচারখান গান শোনাবে।” এই প্রস্তাবে বিমানবিহারী উৎফুল্ল হইয়া উঠিল -এবং তাহার ক্রমবর্ধনশীল অসহিষ্ণুত হইতে মুক্ত হইয়া বেদাস্তভায্যের আলোচনার প্রতি সহসা এমন মনোযোগী হইয়া উঠিল যে শাস্ত্রাঙ্কুশীলনে জয়ন্তীর এই বিল্পসম্পাদনের জন্ত প্রমদাচরণ মনে মনে ক্ষুব্ধ হইয়া উঠিলেন, এবং ক্ষীণ