পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] ۔--۔-م۔م۔م۔م۔ AASAASAASAASSAAAAAAS AAASASASS প্রতিবাদার্থে মৃদু কণ্ঠে কহিলেন, “অ’ দ না হয় গান থাক, আমরা এই আলোচনাটাই শেষ করি।” জয়ন্তী মাথা নাড়িয়া কহিল, "রক্ষে কর ! তোমার ও নীরস শাস্ত্রচর্চা আজ বন্ধ থাকৃ ! সমস্ত দিন খেটেখুটে এসে বিমানেরই বা এ-সব ভাল লাগবে কেন ?" বিমানবিহারী বিলক্ষণ-রূপেই জানিত ষে প্রতিযোগিতায় জয়ন্তীর সহিত প্রমদাচরণ পারিয়া উঠিবেন না ; যে মুহূৰ্ত্তে সুমিত্রা উপস্থিত হইবে, সেই মুহূৰ্ত্তেই বেদান্তভাষ্য বন্ধ করিতে হইবে। তাই সে জয়ন্তীর কথার উত্তরে স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া এমন কথা বলিল যাহাতে মনে হইল যে বেদাস্তভায্য ভিন্ন সে অপর কিছুই চাহে না, এবং সে সন্ধ্যায় তাহার একমাত্র অভিলাষ ছিল বেদাস্তভাষ্যের চর্চা করা । কিন্তু ক্ষণ পরে বিমলা যখন ফিরিয়া আসিয়া বলিল যে সুমিত্রার মাথা ধরিয়াছে বলিয়া শুইয়া আছে, আসিতে পাব্লিবে না এবং সেই সংবাদে উৎসাহিত হইয়া প্রমদাচরণ সবিস্তারে বেদান্তভাষ্য আলোচনা করিতে উদ্যত হইলেন, তখন বিমানবিহারী সহসা উঠিয়া দাড়াইয়। বিরল কণ্ঠে কহিল, “আজ আমার একটু বিশেষ কাজ আছে ; আজ তা হলে এখন আসি ।” প্রমদাচরণ ব্যগ্র হইয়া বলিলেন, “কিন্তু আমাদের আলোচনাটা ত শেষ হল না, মাঝখানেই রয়ে গেল!” বিমান মৃদু হাসিয়া কহিল, “বাকিটা আর-একদিন শেষ করা যাবে, আজ একটু দরকার অাছে।” ক্ষুন্নমনে প্রমদাচরণ কহিলেন, “আচ্ছ, তাহলে থাকৃ।” বিমান প্রস্থান করিলে জয়ন্তী অদ্যকার ঘটনাটা কতকটা পরিবর্তন, কতকটা পরিবর্জন, এবং কতকটা পরিবর্দ্ধন করিয়া প্রমদাচরণকে জানাইলেন । সমস্ত শুনিয়া প্রমদাচরণ মনের মধ্যে গভীর ভাবে ব্যথিত হইলেন । মস্তকের কেশের মধ্যে দশ-বারো মিনিট দ্রুতবেগে হস্ত সঞ্চালন করিয়া অবশেষে জয়ন্তীর মুখের দিকে চাহিয়া বলিলেন, “তুমি ভুল করেছ, জয়ন্তী । আমরা ত মানুষ নিয়েই চিরকালটা কাটিয়েছি, মানুষ আমরা চিনি। স্বরেশ্বর কখনই তা নয় ।” জয়ন্তী ক্রুদ্ধ হইয়া কহিলেন, “শেষ দশ বৎসর তুমি রাজপথ ¢ »oል SAASAASAASAASAASAASAASAA AAASAASAASAASAASAASAAAS ত সেক্রেটারিয়াটে কেরাণীগিরি করেছ ! তুমি আবার মাতুষ চেন কি ?” এই অভিযোগের পর প্রমদাচরণের আর কোনও কথা বলিতে সাহস হইল না, তিনি নিঃশব্দে বসিয়া রহিলেন। জয়ন্তী ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া বলিলেন, “তুমি মানুষ চিনতে পার ; কিন্তু আমি মেয়েমানুষ চিনি । স্বরেশ্বরের • এবাড়ীতে আসা বন্ধ না করলে তোমার মেয়ের পক্ষে ভাল হত না । যা হয়েছে ভালই হয়েছে।” “ভাল হলেই ভাল।" বলিয়া প্রমদাচরণ আসন ত্যাগ করিয়া আন্দরে প্রবেশ করিলেন । [ ১৮ ] জয়ন্তীর সহিত স্বরেশ্বরের সংঘর্ষের পর তিন চার দিন অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে। বিজয়ী যোদ্ধা যেমন সমর হইতে প্রত্যাবর্তনের পর পরম সস্তোষ ও পুলকের সহিত নিজের অস্ত্রসমূহ নাড়িয়া-চাড়িয়া পৰ্য্যবেক্ষণ করে, সুরেশ্বর ঠিক সেইরূপে এ কয়েক দিন তাহার তাত ও চরকা লইয়া প্রায় সমস্ত সময় কাটাইয়াছে। স্বদেশ-প্রেমকে অবলম্বন করিয়া এতদিন যাহা শ্রদ্ধাই আকর্ষণ করিত, স্বমিষ্ট তরল অনুরাগে সিক্ত হইয়া এখন তাহ। সরস হইয়া উঠিয়াছে ! চরকা ধরিয়। বসিলে স্বরেশ্বরের হাত হইতে আর মোটা স্থত। বাহির হয় না ; কেমন করিয়া প্রাণের আবেগস্টুকু জঙ্গুলীর টিপে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে, টিপ দিলেই তাহা হইতে রাশি রাশি মিহি স্থতা অবলীলাক্রমে বাহির হইতে থাকে আর মনে হয় কোনো একজন বিশেষ ব্যক্তির বস্ত্র বয়নার্থে তাহা সঞ্চিত করিয়া রাখিলে ভাল হয় । যতগুলি তাত নামিতেছে, স্বরেশ্বর প্রত্যেকটিতেই মিহি স্থত চড়াইতেছে এবং সেই শাড়ীগুলির পাড়ের রং ও প্যাটার্ণের জন্য ঢাকার কারিগরের সহিত পরামর্শ ও আলোচনায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়া যাইতেছে। দ্বিপ্রহরে তারাসুন্দরী নিজ কক্ষে বসিয়া মহাভারত পড়িতেছিলেন, এবং স্বরেশ্বর ও মাধবী তাঁহাদের চরকাঘরে বসিয়া চরকা কাটিতেছিল। কথায় কথায় মাধবী বলিল, “দাদা, স্থমিত্র একটা চরকা পাঠিয়ে দিতে বলেছিল, কই দিলে না ত ?”