পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6:8V. বর্ণন করেন। “বিগত ফাল্গুন মাসে হিন্দু সভ্যতার কেন্দ্রস্থল বারাণসী নগরীতে কবীন্দ্র রবীন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে এই সাহিত্য-সম্মিলনের জন্ম হয়। প্রবাসী বাঙ্গালীদিগের মধ্যে ভাব-বিনিময় খাব পরস্পরের উন্নতিসাধন এবং প্রবাসী বাঙ্গালীব সঠিত বাঙ্গালার ভাববার। অক্ষুণ্ণ রাখাই এই সম্মিললের উদ্দেশ্য ।” তাহার মতে “প্রধানত চাকুরিই বাঙ্গালীকে বঙ্গের বাহিরে অঞ্চষ্ট করিয়াছে। রাজশক্তির সঙ্গদয়ত ও সাহায্য ব্যতীত চাকুরিজীবীর আর্থিক সামাজিক বা পরমার্থিক উৎকর্ষসাধন বর্তমান যুগে সম্ভবপর নহে। সভঘবদ্ধ না হইয়া বিংশ শতাব্দীতে সভ্যজগতের কোথাও কোন সম্প্রদায় জন্মগত অধিকারও লাভ করিতে পারে নাই । সম্প্রদায়বিশেষের অভাব-অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কর্ণগোচর করিতে হইলে সম্মিলিত স্বরে আন্দোলন করা ইদানীং একটা প্রথা হইয়া উঠিয়াছে । এই-সকল কথার সত্যতা উপলব্ধিব জন্য বিস্তারিত আলোচনা অনাবশ্যক। স্থানীয় ব্যবস্থাপক সভায় স্বল্পসংখ্যক বিদেশী বণিকুদিগেরও প্রতিনিধি প্রেরণ করিবার ব্যবস্থা রহিয়াছে । কিন্তু সম্প্রদায় বা জাতির হিসাবে অগ্রণী ও অসংখ্য হইলেও এ-সকল প্রদেশে প্রবাসী বাঙ্গালীর সে অধিকার নাই। পক্ষান্তরে বাঙ্গাল দেশে কেবল ইংরেজদিগের নহে, অবাঙ্গালী মাড়োয়ারী প্রভৃতি সম্প্রদায়-বিশেষেরও তত্ৰত্য ব্যবস্থাপক সভায় প্রতিনিধি প্রেরণের ব্যবস্থা আছে। কোনরূপ সৰ্ব্বজনস্বীকৃত বাঙ্গালী-সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠা ছিল না বলিয়া এবং বাঙ্গালীর জন্মগত উদ্যমশীলতার অভাব-বশতঃই প্রবাসী বাঙ্গালীকে এই অধিকার হইতে বঞ্চিত হইতে হইয়াছে । সত্যবদ্ধ ন হইলে সামাজিক সুখ সুবিধা হইতেও প্রবাসীকে বিশেষ ভাবে বঞ্চিত হইতে হয়। ধর্মীদের কথা স্বতন্ত্র ; কিন্তু মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র প্রবাসী বাঙ্গালীর পক্ষে পুত্র-কন্যার বিবাহ এক বিষম সমস্তার বিষয় হইয়া উঠিয়াছে। ভাষা ও সাহিত্যের দিকু দিয়াও প্রবাসী বাঙ্গালীর ভাবিবার সময় উপস্থিত হইয়াছে। প্রবাসে একমাত্র রাজার জাতিই নিজ মাতৃভাষীর প্রচলন রক্ষণ করিয়া চলিতে পারে। ক্রয় বিক্রয় বিদ্যালয় ও কাৰ্য্যস্থল সৰ্ব্বত্রই প্রবাসী বাঙ্গালীকে হয় প্রাদেশিক ভাষা নয় রাজভাষা ইংরেজী প্রবাসী—মাঘ, రిరితి SSASA AAA AAAA AAAA AMS MAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAAJJJASAMAMJAJMMMMMAeMAM [ ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড SAASAASAAAS ব্যবহার করিতে হয়। জীবনযাত্রা-নিৰ্ব্বাহের কোথাও যখন বাঙ্গালা ভাষার প্রযোজন হইতেছে না তখন অপরিহার্য্যভাবে প্রাদেশিক ভাষাই প্রবাসী বাঙ্গালী সস্তানের মাতৃভাষা-স্বরূপ হইয়া পড়িতেছে। প্রবাসী বাঙ্গালী যদি এরূপে মাতৃভাষা বিস্মৃত হইয়া যায় তাহা হইলে বাঙ্গালার সহিত তাহদের ভাবধার স্থিৰ থাকিতে পারে না, কেননা ভাষা-বিজ্ঞান প্রমাণ করিয়াছে, ভাষার ভিতর দিয়াই লোক ভাবিতে শিখে । এ-সকল সমস্তাব মীমাংসা করিতে হইলে প্রবাসীর প্রতিনিধিগণকে একত্র হইয়া ভাবিতে হইবে। অদ্যাবধি প্রবাসী বাঙ্গালীর কোনরূপ সন্মিলন-ক্ষেত্র ছিল ন ; এই অচিরপ্রস্থত সাহিত্য-সম্মিলনকে পরিপোষণ করিতে পারিলে প্রবাসী বাঙ্গালীর সে অভাব দূরীভূত হইতে পারে।” ইহার পর কার্য্যাধ্যক্ষ মহাশয় দুঃখের সহিত জ্ঞাপন করেন যে অস্বস্থতাবশত: নির্বাচিত সভাপতি শ্রযুক্ত রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় অনুপস্থিত এবং প্রস্তাব করেন যে মহামহোপাধ্যায়ু পণ্ডিত শ্ৰীযুক্ত প্রমথনাথ তর্কভূষণ মহাশয় সভাপতির আসন গ্রহণ করেন । অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত ললিতমোহন কর ও ডাক্তার শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়দ্বয়ের সমর্থনে এই প্রস্তাব স্বীকৃত হয়। অতঃপর তর্কভূষণ মহাশয় নির্বাচিত সভাপতির অনুপস্থিতিতে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করিয়া স্বীয় অভিভাষণ পাঠ করেন। এলাহাবাদস্থ অশোকস্তম্ভের ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত জ্ঞাপন করিয়া তিনি বলেন যে খৃষ্টপূৰ্ব্ব চতুর্থ শতাব্দীর পূর্ব হইতে এ-সকল প্রদেশের সহিত বাঙ্গালার সম্বন্ধ আরম্ভ হইয়াছিল। বৃন্দাবন প্রভৃতি তীর্থ ও বাঙ্গালী ধৰ্ম্মপ্রচারক শ্রীচৈতন্যাদির লীলাক্ষেত্র । বাঙ্গালীর অক্ষয় কীৰ্ত্তি এ-সকল প্রদেশের অপরাপর স্থানেও আছে । এজন্ত অহঙ্কার করা উচিত নহে ; গৌরব বোধ করা স্বাভাবিক । এ-সকল-প্রদেশবাসীর সহিত বিচ্ছেদ না ঘটাইয়া যাহাতে বাঙ্গালী নিজের বাঙ্গালীত্ব রক্ষা করিয়া চলিতে পারে, সে উপদেশই তিনি সকলকে দিতে চাহেন। অতঃপর শ্ৰীযুক্ত রামানন্দ চট্টোপাধ্যাম মহাশয়ের ‘নিবেদন' নামক অভিভাষণ শ্ৰীযুক্ত দেবনারায়ণ