পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ψου কোনপ্রকারে কষ্টেস্বষ্টে সেখান হইতে বাহির হইয়া গলি-পথের মধ্যে আবার আসিয়া य1 cश्ॉक সভ্য-অঞ্চলের স্বন্দর সোজ। পড়িলাম। এইসকল বীথি-পথে বড় বড় অনল-শিখা এক-প্রকার দোলনগতি সহকারে ইতস্ততঃ বিচরণ করিতেছে,— দেখা যায়। এই দোলন-গতি উহাদিগকে অবিরত উস্কাইয়া দেয়। পথচল্‌তি লোকেরা, ভারতের প্রাচীন রীতি অনুসারে, এইসকল আলো জ্বালাইয়া থাকে, প্রজ্জ্বলিত ডালপালার গুচ্ছ হাতে লইয়া চলিতে চলিতে, লম্বাভাবে দোলাইতে থাকে ; ঐ দোলনে নিবো-নিবো আগুন আবার জ্বলিয় উঠে। এই আগুনের দীপ্তিচ্ছটা সব দিকেই ছড়াইয় পড়ে ; এবং উহাদের পশ্চাতে একটা সুগন্ধি ধুম রাখিয়া যায় । নদীর উপর আমার নৈশ ভ্রমণের জন্ত প্রতিদিন সায়হ্নে আমার ডিঙ্গি নদীর মুখে আসিয়া থাকে। আসিতে এখনো অস্তত: ঘণ্টাথানেক বিলম্ব আছে । আমার আর-কিছুই করিবার নাই। আমার বাচ্চা পাগুদিগের প্রাপ্য টাকা চুকাইয়া দিয়াছি—উহাদিগকে আর আমার দরকার নাই। কিন্তু উহার শেষ পৰ্য্যস্ত আমার নিকটে থাকিতে চাহিতেছে -নিঃশ্বাৰ্থভাবে, কেবল তালবাসার টানে । একটা বৃহৎ চতুস্কভূমি আবিষ্কার করা গিয়াছে ; তাহার মাঝখানে একট। গির্জা । এইখানকার একটা গাছের তলায় একটা পাথরের বেঞ্চি আছে । একটা অসাধারণ ব্যাপার এই যে,—এই গাছটা তালগাছ লছে, কিন্তু রাত্রিকালে এই গাছটা আমাদের ফানসের সুন্দর ওক-গাছের মতো দেখিতে । এইখানে ডিঙ্গীর অপেক্ষীয় আমি বসিয়া রহিলাম। আমার পাশে আমার বাচ্চ সঙ্গীর । আরো অম্লান্ত গাছ কালে পর্দার মতে এই চাতালের চারিদিক যিরিয়া আছে। ছোটখাটো জিনিষ কিছুই দেখিতে পাওয়া যাইতেছে না। এই জায়গাটার কোন একটা স্বম্পষ্ট নির্দেশ পাওয়া যাইতেছে না। নক্ষত্র-খচিত নভোমণ্ডলের নীচে, গির্জাট খাড়া হইয়া উঠিয়াছে— কেমন ধবধবে সাদা, কেমন প্রশাস্ত! আমার শৈশবে কোনএকটা গ্রামে যখন গ্রীষ্মকাল যাপন করিতাম, উহা সেই গ্রামটিকে স্মরণ করাইয়া দিতেছে । এই দুটি বাচ্চ যাহার। আমার কাছে রহিয়াছে ইহারা আমাঙ্গর ভাষায় আমার নিকট গল্প বলিতেছে। আমাদের চাষার ছেলেরা উহাদের মতে এমন ভাল করিয়া মনের ভাব ব্যক্ত করিতে পারে না । তৃণপুঞ্জ হইতে বেশ একটা সুগন্ধ বাহির হইয়াছে, ঝিল্লীরব শুনা যাইতেছে ; আমাদের জুন রাত্রির দীপ্তমহিমার মধ্যে যেরূপ দেখা যায় সেইরূপ...আহা ! সেই সুন্দর তারাময়ী রাত্রি, সেই প্রশান্ত রাত্রি, সেই মধুর আলোকোজ্জ্বল রাত্রি, সেই অতি চমৎকার রাত্রি !...আর এই পাথরের বেঞ্চি, যাহার উপর এই স্বমধুর শাস্তির মধ্যে আমি বিশ্রাম করিতেছি, ইহা একটা দূরদেশে অবস্থিত—যে দেশে ঘটনাচক্রে আমি একদিনের জন্ম জাসিয়াছি, এবং যে দেশে আমি আর কখনো ফিরিয়া আসিব না, তথাপি এ-বড় অদ্ভুত, ইহার মতো আর একটা ৰেঞ্চিতে, বহুদিন পূৰ্ব্বে, সুন্দর তারকাময়ী রজনীতে আমি বসিয়াছিলাম। অন্ধকারের মধ্যে এই বিশ্রাম, এই কবোঞ্চ বাধু, এই ঘাসের মুগন্ধ, “ এইসমস্ত স্পষ্টরূপে আমাকে স্মরণ করাইয় দেয়, আমার জীবনের সেইসব প্রথম গ্রীষ্মরজনী, বনভুমির নিকটস্থ সেইসব মাঠ ময়দান ।...আমাদের সম্মুখের রাস্ত দিয়া লোকের ঘাস যে সিয়া চলিয়াছে। আমরা উহাদিগকে স্পষ্ট দেখিতে পাইতেছি না ; উহাদের পরিচ্ছদও নির্ণয় করিতে পারিতেছি না, কিন্তু আমাদের উদ্দেস্যে প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩০ AAAAS SAAAAAMAM MAMAAA SAAAAASA SAAAAA AAAA AAAAM AAASASASS [ ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড AASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAAS উচ্চারিত উহাদের "শুভরাত্রি” অভিবাদন শুনিতে পাইতেছি । গরুর গাড়ীও চলিয়াছে। গাড়োয়ানরা পদব্রজে চলিয়া গরুদিগকে ইকাইতেছে । এই উদ্ভট-ধরণের শকট, এই লম্বামুখে বিদেশী পশুবৃন্দ ; বড় বড় চোখ, কাণে কাণ-বালা এইসব গুমাঙ্গ ভারতবাসী---এইসমস্ত ছাড়া আর-কিছুই দেখা যায় না। আমাদের দেশে মাঠময়দান হইতে যে সব শকট ফিরিয়া আসে, উহাদের সহিত এই শকটের সাদৃষ্ঠ আছে । আরও এইরূপ বল। যাইতে পারে, আঙ্গুরের ফসল ও শস্তের ফসল কাটিয়া আমাদের দেশে যে-সব শকট ফিরিয়া আসে ইহা কতকটা সেই ধরণের.এই বিদেশী গাছ-তলায় বসিয়া— ইহাই যেন আমার জন্মভূমির সেই ওক-গছ) আমি একটু একটু করিয়া ক্রমশঃ স্বদেদেশের স্বল্প-কল্পনার মধ্যে ডুবিয়া পড়িতেছি –আমার মাথার উপরে কালে ডালপালার ভিতর দিয়া, কতকগুলা ছোট ছোট জিনিষ ঝিকৃমিক্‌ করিতেছে—উহা কতকগুলা তারা । কত পুরাতন কথা আমার স্মৃতির মধ্যে জমা হইয়াছে,—বহু দূর হইতে আমার প্রথম শৈশবের সেইসব গ্রীষ্মকালের স্মৃতি আমার নিকট সনিৰ্ব্বন্ধভাবে পুনঃ পুনঃ অসিতেছে । এই সময়ে, ইহা খুবই নিশ্চিত,-আমাদের দেশের গ্রীষ্মকালগুল স্নানাভ ছিল না, ক্ষণস্থায়ী ছিল না। উহ। অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত স্থায়ী হইত, উহাদের একটা প্রশান্ত দীপ্তি ছিল,—যাহা এক্ষণে উহার হারাইয়াছে । আমার বেশ মনে পড়ে, জুনের গোধূলিগুলার একটা কবোঞ্চ মদtলসভাব ছিল— এবং রাত্রির একটা স্বচ্ছতা ছিল ---অন্ধকারের মধ্যে যেন একপ্রকার রহস্যময় কিরণচ্ছটা ছড়াইয় পড়িত—আজিকার এই রাত্রির মতো ...আমি ভুলিয়া গিয়াছিলাম এইসব কথা ; কিন্তু আবার আমার চারিদিকে ঐসমস্ত দেখিতে পাইতেছি । —চিনিতে পারিতেছি।...কেবল, আমার জন্মভূমির জোনাকী পোকার ঘাসপালার মধ্যে চুপ করিয়া থাকিত ; কিন্তু এখানে উহার উন্মত্তভাবে উড়িয়া বেড়াইতেছে ; উহাদের ( Phosphorus ) ভাস্বরবাম্পের ছোট ছোট স্ফুলিঙ্গগুলিতে আকাশ ভরপুর ; এই পার্থক্যটাই যাহা ধরিতে পারা যায়–অবশিষ্ট আর সমস্তই একই-ব্লকমের ; কিন্তু সেকালের এইসব সুন্দর গ্রীষ্মকাল কে নিভাইয় দিতে সমর্থ হইল ? এবং বর্ষাকালের সঙ্গে সঙ্গে, পূৰ্ব্বে যাহা অামাকে মুগ্ধ করিত, সেইসব জিনিষের মোহনীয়ত আমি কি করিয়া ভুলিয়া গেলাম ? অামার মাথার ভিতর যtহ সমস্তই প্রায় মুছিয়া গিয়াছে, তাহার রেখা অতিকষ্টে সময়ে সময়ে আবার ফুটিয়া উঠে...আজিকার মানাভ, স্বল্পস্থায়ী গ্রীষ্মরাত্রি-আর পূৰ্ব্বে যে গ্রীষ্মরাত্রি আমাকে মাতাইয়া তুলিত এই উভয়ের মধ্যে কতটা প্রভেদ.. অতি দূরে, ঢাক-বাদ্যের মত কি যেন একটা শব্দ শুনিতে পাইতেছি ; তাহার একটু পরেই, কর্কশ কণ্ঠের গান, এক-প্রকার দ্রুতধরণের “কোরসূ” সঙ্গীত। পরিশেষে, হঠাৎ তরুরীজির কালে পর্দার ভিতর একটা বড় রাস্ত উদঘাটিত হইল, উহার পশ্চাদভাগটা জ্বলন্তু মশালের আলোয় আলোকিত : মশালগুলা মানব-বাহুর দ্বারা আন্দোলিত হইতেছে। গান ক্রমেই নিকটবৰ্ত্তী হইল। এক-দল লোক আসিয়া পৌঁছিল। এক্ষণে, বীথির সমস্ত খিলান-মওপট দেখা যাইতেছে—একট। তাল গাছের খিলান-মণ্ডপ । এইসব লোক চলিতে চলিতে যাহা মাড়াইতেছে সেইসব অগ্নিশিখার স্বারা তরুমগুপের তলদেশটা আলোকিত । আমার সেই বাচ্চার বলিল, “মেসিএ, এটা একটা বিবাহ উৎসব-আমাদের ধর্মের একটা বিবাহ-উৎসব, “মেসিএ, Tissএর বিবাহ-উৎসব, ওখালে গিয়ে আমরা দেখতে পারি ?”