পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬১২ • তিরোকুডড পেত বহু পূৰ্ব্বে-প্রায় ১২ কল্প পূৰ্ব্বে কাশিপুরী নামে একটি নগর ছিল। তাহার রাজার নাম ছিল জয়সেন এবং রাণীর নাম ছিল শিরিমা। এই রাণীর গর্ভে বোধিসত্ত্ব ফুস নামে এক সস্তান হয়। পুত্রটি সম্মাসম্বোধি অর্থাৎ সত্য সম্বন্ধে পূর্ণ জ্ঞান অর্জনের দ্বারা বুদ্ধত্ব লাভ করিয়াছিলেন । তিনি তাহার পুত্রের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল ছিলেন এবং তাহাকে সৰ্ব্বদাই বলিতে শোনা যাইত যে “বুদ্ধ, ধৰ্ম্ম, সঙ্ঘ, এ-সমস্তই আমার। ভিক্ষুর প্রয়োজনীয় বস্ত্র খাদ্য শয্যা এবং ঔষধ এই চারিটি বস্তুর দানের অনুমতি আমি আর কাহাকেও প্রদান করিব না।” স্বতরাং রাজার অন্যান্য পুত্রের বুদ্ধকে অর্ঘ্য দান করিবার কোনো স্বযোগই পাইত না। অবশেষে এই ব্যাপারে রাজার অনুমতি লাভের জন্য তাহার একটি কৌশলের আবিষ্কার করিল। সীমান্তের অধিবাসীদিগকে তাহার বিদ্রোহের জন্য উত্তেজিত করিতে লাগিল। এই-সব লোকেরা যখন বিদ্রোহী হইয়া উঠিল তখন তাহারাই আবার প্রেরিত হইল তাহাদিগকে দমন করিবার জন্য। যুদ্ধে জয়লাভ করিয়া ফিরিয়া আসার পরে রাজা যখন তাহাদিগকে পুরস্কার প্রদান করিতে উদ্যত হইলেন তখন বুদ্ধ এবং তাহার ভক্তবৃন্দের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য প্রদানের অধিকার চাওয়া ছাড়া তাহারা আর কোনো পুরস্কার প্রার্থনা করিল না। রাজা অত্যন্ত অনিচ্ছার সহিত তাহাদিগকে তিন মাসের জন্য অধিকার প্রদান কবিলেন । প্রয়োজনীয় বিধি-ব্যবস্থা শেষ করিয়া তাহারা বুদ্ধকে তাহাদের নবনিৰ্ম্মিত বিহারে লইয়া গেল এবং তাহাকে যথাবিহিত পাদ্য অর্ঘ্য প্রদান করিল । ইহাদের ভিতরেও আবার কেহ কেহ সময়ের অল্প তার জন্য নিজেদের নামে বুদ্ধকে উপহার প্রদান করিতে না পারিয়া অসন্তুষ্ট হইয়া উঠিল । এই অসন্তুষ্ট লোকের অবশেষে ভ্রাতাদের দান-ধ্যানের ব্যাপারে বাধা জন্মাইতে স্বরু করিয়া দিল । কখনো বা তাহারা অর্ঘ্যদ্রব্য ভক্ষণ করিয়া ফেলিত, কখনো সেগুলিকে নষ্ট করিয়া ফেলিয়া দিত । অবশেষে তাহারা এতদূর পর্য্যন্ত অগ্রসর হইল প্রবাসী-ফাঙ্কন, ১৩৩৯ ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড حممی“میہ۔ یحیی سمیرم میرسی میی যে একদিন দরিদ্রাশ্রমে অগ্নি সংযোগ করিতেও ইতস্তত: করিল না । এই-সমস্ত অসন্তুষ্ট লোকেরাই তাহদের দুস্কৃতির জন্য নরকে প্রথমে জন্মগ্রহণ করে এবং তাহার পর কসসপ বুদ্ধের সময় তাহারা আবার প্রেত-যোনি প্রাপ্ত হয়। তাহাদের আত্মীয়-স্বজনেরাও তাহাদিগকে কখনো কোনো উপহার প্রদান করিত না। অবশেষে একদিন কস্সপ বুদ্ধের নিকটে গিয়া তাহারা আত্মীয়স্বজনের এই অবহেলার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে তিনি উত্তর দিলেন—গৌতম বুদ্ধের সময় রাজা বিম্বিসারের রাজত্বকালে তাহীদের নামে বলির অর্ঘ্য অপিত হইবে, আর এই বিম্বিসার পূৰ্ব্বজন্মে তাহাদেরই আত্মীয় ছিল । স্বতরাং রাজা বিম্বিসার যখন বেলুবন-বিহারটি বুদ্ধকে এবং তাহার শিষ্যগণকে উপহার দেন, এই প্রেতেরা মনে করিয়াছিল, বিম্বিসারের অর্জিত পুণ্যের কিয়দংশ তাহাদেরও ভাগে পড়িবে। কিন্তু তাহাদের সে আশা সম্পূর্ণরূপেই ব্যর্থ হইয়াছিল। এইরূপে নিরাশ হইয়া তাহারা রাত্রিতে এরূপ ভীষণ কোলাহলের স্বষ্টি করিয়াছিল যে ভীত বিম্বিসার বুদ্ধের নিকট গিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন— “এই কোলাহলের অর্থ কি ?” বুদ্ধ তাহাকে উত্তর দিলেন—“তোমার পূৰ্ব্বজন্মের জনকত আত্মীয় প্ৰেতযোনি প্রাপ্ত হইয়াছে । তাহারাই আশা করিতেছিল তুমি যে পুণ্য অর্জন করিয়াছ তাহার ভাগ এই-সব প্রেতদিগকেও বণ্টন করিয়া দেওয়া হইবে এবং তাহারা তাহারই বলে দুঃখ-দুৰ্দ্দশার হাত হইতে মুক্তি লাভ করিবে। কিন্তু তুমি তাহা দাও নাই। সুতরাং তাহারা হতাশ হইয়৷ এই কোলাহলের স্বষ্টি করিয়াছে।” ইহার পর বুদ্ধের দ্বারা উপদিষ্ট হইয়া নৃপতি বিম্বিসার সমস্ত সজঘকে এক বিরাটু ভোজ প্রদান করিয়াছিলেন এবং এই সৎকাজের পুণ্য তিনি প্রেতগণকেই অর্পণ করিয়াছিলেন। রাজার এই পুণ্যকাৰ্য্যকে সমর্থন করিতে গিয়া বুদ্ধদেব তিরোকুড়স্বত্তম সম্বন্ধে বক্তৃতা দিয়াছিলেন। তাহার সারমর্শ এই যে, মানুষ আত্মীয়-স্বজনের নিকট হইতে যে উপকার এবং অনুগ্রহ লাভ করিয়াছে তাহারই কথা স্মরণ . করিয়া তাহীদের মৃত আত্মার তৃপ্তির জন্য তৰ্পণ করিয়া «itt« 1 ( Petavatthu Commentary, pp. 19-81.)