পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

y: ग्र१५m ] . . . মেধ-মল্লার ७२* পূর্ণিমার রাতে মেঘমল্লার নিখুঁতভাবে আলাপ করলে সরস্বতী দেবী স্বয়ং গায়কের কাছে আবিভূর্ত হন। এসংবাদ এদেশে কেউ জানে না । আষাঢ় শ্রাবণ ভাদ্র এই তিন মাসের তিন পূর্ণিমায় প্রতিবার যদি তাকে আনতে পারা যায় তবে তার বরে গায়ক সঙ্গীতে সিদ্ধ হয়। র্তার বরে সঙ্গীত-সংক্রাস্ত কোনো বিষয় তখন গায়কের কাছে অজ্ঞাত থাকে না। তবে একটা কথা আছে যে গায়ক বর প্রার্থনা করবে সে অবিবাহিত হওয়া চাই । তা আমি বলছিলাম সামুনের পূর্ণিমায় তুমি আর আমি এই বিষয়টা চেষ্টা করে দেখব । তুমি কি বল ?” স্বরদাসের কথা শুনে প্রদ্যুম্ন অবাক হ’য়ে গেল। তা কি করে’ হয় ? আচাৰ্য্য বস্বত্রত কলাবিদ্যা সম্বন্ধে উপদেশ দিতে দিতে অনেক বার যে বলেছেন কলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর যে মুক্তি হিন্দুর কল্পনা করেন, সেটা নিছক কল্পনাই তার সঙ্গে বাস্তবের কোনো সম্পর্ক নেই । সত্য সত্য তাকে দেখতে পাওয়া-একি সম্ভব ? প্রছন্ন চুপ করে রইল । স্বরদাস একটু ব্যগ্রভাবে জিজ্ঞাসা করলেন, “এতে কি তোমার অমত আছে ?” প্রদ্যুম্ন বললে, “সে জন্তে না । কিন্তু আমি ভাবছিলাম এটা কি করে সম্ভব যে—“ স্বরদাস বললেন, “সে-বিষয়ে তুমি নিশ্চিস্ত থাকো । এর সত্যতা তুমি নিজের চোখে দেখে । তোমার অমত না থাকুলে আমি সামনের পূর্ণিমায় সব ব্যবস্থা করে' রাখি ।” স্বরদাসের কথার পর থেকেই প্রদ্ধ্যম অত্যন্ত বিস্ময় ও কৌতুহলে কেমন একরকম হ’য়ে গিয়েছিল। সে ঘাড় নেড়ে বললে, “আচ্ছা রাখবেন, আমি আসব।” স্বরদাস বললেন, “বেশ, বড় আনন্দিত হলাম। তুমি মাঝে মাঝে একবার করে’ এখানে এস, তোমাকেও তৈরী হতে হ’লে দু-একটা কাজ করতে হবে, সে বলে’ দেব ।” প্রদ্ধায় আর-একবার সম্মতি-স্বচক ঘাড় নীড় বার পর স্থরদাসের কাছে বিদায় চাইলে । তার পর সে চিস্তিতভাবে বিহারের পথ ধরলে । তার মনে হচ্ছিল—দেবী সরস্বতী স্বয়ং। শ্বেতপদ্মের মত নাকি রংটি র্তার, না জানি কত স্বন্দর তার মুখশ্ৰী । আচাৰ্য্য বস্বত্রত বলেন বটে... (*) ভদ্রাবতী নদীর ধারের শাল-পিয়াল-নক্তমাল বনে সে-বার ঘনঘোর বর্ষ নামূল। সারা আকাশ জুড়ে: কোন বিরহিণী পুরস্কন্দরীর অযত্নবিন্যস্ত মেঘ-বরণ চুলের রাস এলিয়ে দেওয়া, প্রাবৃঢ়-রজনীর ঘনাদ্ধকার, তার প্রিয়হীন প্রাণের নিবিড় নির্জনতা, দূর বনের ঝোড়ে হাওয়ায় তার আকুল দীর্ঘশ্বাস, তারই প্রতীক্ষাপ্রাস্ত আঁখিদুটির অশ্রুভারে ঝরঝর অবিশ্রান্ত বারি-বর্ষণ, মেঘমেছর আকাশের বুকে বিদ্যুৎ চমক, তার হতাশ প্রাণে ক্ষণিক আশার মেঘদূত ! আষাঢ়ী পূর্ণিমার রাতে প্রছন্ন স্বরদাসের সঙ্গে नौग्न মাঠে গেল। তারা যখন সেখানে পৌছল, তখন মেঘ নেমে সমস্ত আকাশ ছেয়ে ফেলেছে, চারিদিকৃ তরল অন্ধকারে অস্পষ্ট দেখাচ্ছে । - প্রদ্যুম্ন স্বরদাসের কথামত নদী থেকে স্নান করে এসে বস্ত্রপরিবর্তন করলে। সঙ্গীর ক্রিয়াকলাপে প্রদ্ধাম বুঝতে পারলে তিনি একজন তান্ত্রিক। তাদের বিহারে একজন ভিক্ষু ছিলেন, তিনি যোগাচাৰ্য্য পদ্মসম্ভবের শিষ্য। সেই ভিক্ষুর কাছে তান্ত্রিক ক্রিয়াকলাপের কথা কিছু কিছু সে শুনেছিল । স্বরদাস অনেকগুলো রক্তজবার মালা সঙ্গে করে’ এনেছিলেন তার মধ্যে, কতকগুলো তিনি নিজে পৰ্বলেন, কতকগুলো প্ৰদ্যুম্নকে পৰ্বতে বললেন। ছোট মড়ার মাথার খুলিতে তেল সলতে দিয়ে প্রদীপ জাললেন। র্তার পূজার আয়োজনে সাহায্য করতে করতে প্রদ্ধাম স্থাপিয়ে পড়ল। ব্যাপারটার শেষ পৰ্যন্ত কি দাড়ায় দেখবার জন্তে তার মনে এত কৌতুহল হচ্ছিল ধে অন্ধকার রাতে একজন প্রায় অপরিচিত তান্ত্রিকের সঙ্গে এক থাকৃবার ভয়ের দিকূট তার একেবারেই চোখে পড়ল না। অনেক রাত্রে হোম শেষ হ’ল । স্বরদাস বললেন, “প্রদ্যুম্ন, তুমি এবার তোমার কাজ আরম্ভ করে, অামার কাজ শেষ হয়েছে। খুব সাবধান, তোমার কৃতিত্বের উপর এর সাফল্য নির্ভর কবুছে * ,