পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७९२ র্তার চোখের কেমন-একটা ক্ষুধিত দৃষ্টি যেন প্রদায়ের ভাল লাগল না। তার পর সে বলে একমনে বাণীতে মেঘমল্লার আলাপ আরম্ভ করলে। তখন আকাশ বাতাস নীরব । অন্ধকারে সামনের মাঠটায় কিছু দেখবার উপায় নেই। শাল-বনের ডালপালায় বাতাস লেগে একরকম অস্পষ্ট শক্য হচ্ছে । বড় মাঠের পারে শাল বনের কাছে দিকৃচক্রবালের ধারে নৈশ প্রকৃতি পৃথিবীর বুকের অন্ধকার-শল্পশয্যায় তার অঞ্চল বিছিয়েছে।—শুধু বিশ্রাম ছিল না ভস্রাবতীর, সে কোন অনন্তের সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে দেবার আকুল আগ্রহে একটানা বয়ে চলেছে, মৃছ গুঞ্জনে আনন্দ-সঙ্গীত গাইতে গাইতে, কুলে তাল দিতে দিতে । হঠাৎ সামনের মাঠটা থেকে সমস্ত অন্ধকার কেটে গিয়ে সারা মাঠটা তরল আলোকে প্লাবিত হ’য়ে গেল । প্রন্থায় সবিস্ময়ে দেখলে মাঠের মাঝখানে শত পূর্ণিমার জ্যোৎজার মত অপরূপ আলোর মগুলে কে এক জ্যোৎস্নাবরণী অনিন্দ্যস্কুন্দরী মহিমাময়ী তরুণী ! তার নিবিড় কৃষ্ণ কেশরাজি অযত্নবিন্যস্ত-ভাবে তার অপূৰ্ব্ব গ্রীবাদেশের পাশ দিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে, তার আয়ত নয়নের দীর্ঘ কৃষ্ণপক্ষ কোন স্বৰ্গীয় শিল্পীর তুলি দিয়ে জাক, তার তুষারধৰল বাহুবল্লী দিব্য পুষ্পাভরণমণ্ডিত, র্তার ক্ষীণ কটি নীল বসনের মধ্যে অৰ্দ্ধ-লুকায়িত মণি-মেখলায় দীঞ্চিমান, তার রক্তকমলের মত পা ছুটিকে বুক পেতে নেবার জন্তে মাটিতে বাসস্তী পুষ্পের দল ফুটে উঠেছে.ই এই তো দেবী বাণী ! এর ৰীণার মঙ্গল ঝঙ্কারে দেশে দেশে শিল্পীদের সৌন্দৰ্য্যকৃষ্ণ স্থটি-মুখী হ’য়ে উঠছে, এর আশীৰ্ব্বাদে দিকে দিকে সত্যের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হচ্ছে, এরই প্রাণের ভাণ্ডারে ৰিশ্বের সৌন্দৰ্য্য-সম্ভার নিত্য অফুরন্ত রয়েছে, শাশ্বত এর মহিমা, অক্ষয় এর দান, চিরনূতন এর বাণী ! গ্রন্থায় চেয়ে থাকৃতে থাকতে দেবীর মুক্তি অল্পে জয়ে মিলিয়ে গেল। জ্যোৎস্ন! আবার মান হ’য়ে পড়ল, বাতাস আৰার নিস্তেজ হ’য়ে বইতে লাগল। অনেকক্ষণ গ্রন্থামের কেমন-একটা মোহের তাব ধুর হ’ল না। সে যা দেখলে এ স্বপ্ন না সত্য । অবশেষে প্রবাসী—ধগঙ্কন, ১৩৩০ 1 २७+ छां★, २घ्र १8 স্বরদীসের কথায় তার চমক ভাঙল। স্বরদাস বললে, “আমার এখনও কাজ আছে, তুমি ইচ্ছা করলে যেতে পার—কেমন আমার কথা মিথ্যা নয় দেখলে ত?” স্থরদাসের কথা কেমন অসংলগ্ন হ’তে লাগল, ত্বার মুখের দিকে চেয়ে প্রছাম দেখলে তার চোখ ོ་ ༽ অৰ্দ্ধ-অন্ধকারের মধ্যে জল জল করছে। র্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সে যখন বিহারের দিকে রওনা হ’ল, পূর্ণিমার চাদকে তখন মেঘে প্রায় ঢেকে ফেলেছে। একটু একটু জ্যোৎস্ন! যা আছে তা কেমন হলদে রংএর ; গ্রহণের সময় জ্যোৎস্নার এরকম রং সে কয়েকবার দেখেছে । মাঠ খুব বড়, পার হ’তে অনেকটা সময় লাগল। তার পর মাঠ ছাড়িয়ে বড় বনটা আরম্ভ হ’ল । খুব ঘন বন, শাল দেবদারু গাছের ডালপালা, নিবিড় হ’য়ে জড়াজড়ি করে আছে, মধ্যে অন্ধকারও খুব। পাছে রাত ভোর হ’য়ে যায়, এই ভয়ে সে খুব দ্রুত পদে যাচ্ছিল । যেতে যেতে তার চোখে পড়ল বনের মধ্যে একস্থান দিয়ে যেন খানিকট আলো বেরুচ্ছে। প্রথমে সে ভাব লে, গাছের পাতার ফীক দিয়ে জ্যোৎস্না এসে পড়ে থাকৃবে, কিন্তু ভাল করে লক্ষ্য করে দেখে সে বুঝলে যে সে আলো জ্যোৎস্নার আলোর মতন নয় বরং ...কৌতুহল অত্যন্ত হওয়াতে পথ ছেড়ে সে বনের মধ্যে ঢুকে পড়ল । যে পিপ্পল-গাছের সারির ফণক দিয়ে আলো আসছিল, তার কাছে গিয়ে গাছের গুড়ির ফাক দিয়ে উকি মেরে প্রদ্যুম্ন অবাকু হ’য়ে দাড়িয়ে রইল। একি ! একেই ত সে এইমাত্র মাঠের মধ্যে দেখেছে, এই সেই অপরূপ স্বন্দরী নারী ত । অদ্ভুত । সে দেখলে যাকে এইমাত্র মাঠের মধ্যে দেখেছে সেই অপরূপদুতিশালিনী নারী বলের মধ্যে চারিধারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, জোনাকীপোকার হল থেকে যেমন আলো বার হয়, তার সমস্ত অঙ্গ দিয়ে তেমনি একরকম মিথোজল আলো বেরুচ্ছে, অনেকদুর পর্য্যন্ত বন সে আলোয় উজ্জল হ’য়ে উঠেছে, আর-একটু নিকটে গিয়ে সে লক্ষ্য করলে তার আয়ত চক্ষু দুটি অৰ্দ্ধ-নিমীলিত, যেন কেমন নেশার ঘোরে তিনি চারিপাশে হাত ড়ে পার হবার