পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা } পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন, কিন্তু তা না পেয়ে পিপ্পল-গাছগুলোর চারিধারে চক্রাকারে ঘুরছেন, তার মুখই অত্যস্ত বিপন্নার মত ! প্রহ্লামের হঠাৎ বড় ভয় হ’ল । সে ভাবলে মাঠে সরস্বতী দেবীর দর্শন থেকে আর এপর্য্যস্ত সমস্ত ঘটনাটা আগাগোড়া ভৌতিক, এই নিশীথ রাত্রে শালের বনে নইলে একি কাণ্ড ? * সে আর সেখানে মোটেই দাঁড়াল না । বন থেকে বার হয়ে দ্রুত হাটুতে হাটুতে যখন সে-বিহারের উদ্যানে এসে পৌছল, স্নান চাদ তখন কুমারশ্রেণীর পাহাড়ের পিছনে অস্ত যাচ্ছে । ভোর রাত্রে শয্যায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সে স্বপ্ন দেখলে, ভদ্রাবতীর গভীর কালো জলের তলায় রাতের অন্ধকারে কে এক দেবী পথ হারিয়ে ফেলেছেন, তিনি যতই উপরে উঠবার চেষ্ট। পাচ্ছেন, জলের ঢেউ তাকে ততই বাধা দিচ্ছে, নদীর জলে র্তার অঙ্গের জ্যোতি ততই নিবে আসছে, অন্ধকার ততই তার চারিপাশে গাঢ় হয়ে আসছে, নদীর মাছগুলো তার কোমল পা দুখানি করে রক্তাক্ত করে দিচ্ছে...ব্যথিতদেহ, বিপন্ন ; বেপথুমতী দেবীর দুঃখ দেখে একটা বড় মাছ দাত বার করে' হিংস্ৰ হাসি হাসছে, মাছটার মুখ গায়ক স্বরদাসের মত । ( 8 ) প্রদ্যুম্ন ভোরে উঠেই আচাৰ্য্য পূর্ণবৰ্দ্ধনের কাছে গিয়ে স্বরদাসের সঙ্গে প্রথম দেখার দিন থেকে গত রাত্রি পৰ্য্যন্ত সমস্ত ব্যাপার খুলে বললে। আচাৰ্য্য পূর্ণবৰ্দ্ধন বৌদ্ধ দর্শনের অধ্যাপক ছিলেন, মাঠের ভিক্ষুদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন ও বিজ্ঞ, এজন্য সকলেই তাকে শ্রদ্ধ৷ কবুত। তিনি সব শুনে বিস্মিত হলেন, সঙ্গে সঙ্গে তার চোখের দৃষ্টি শঙ্কাকুল হ’য়ে উঠল। জিজ্ঞাসা করলেন, *একথা আগে জানাওনি কেন ?” “তিনি নিষেধ করেছিলেন । আমি তার কাছে প্রতিজ্ঞা—*

  • বুঝেছি। তবে এখন বলতে এসেছ কেন ?" “এখন আমার মনে হচ্ছে আমি কার যেন কি অনিষ্ট করেছি।”

মেঘ-মল্লার ৫২ষ্ট্র পূর্ণবৰ্দ্ধন একটুখানি কি ভাৰলেন, তার পর বললেন, “७हेब्ररुभ ७कü-किछू घाँ एव उ] चांभि जांन्ङांभ । পদ্মসম্ভব আর তার কতকগুলো কাগুঞ্জানহীন তান্ত্রিক শিষ্য দেশের ধৰ্ম্ম-কৰ্ম্ম লোপ করতে বসেছে। স্বার্থসিদ্ধির জন্তে এর না করতে পারে এমন কোনো কাজই নেই— আর আমি বেশ দেখছি প্রছাম, যে তোমার এই অবাধ্যতা ও অযথা কৌতুকপ্রিয়তাই তোমার সর্বনাশের মূল হবে।--তুমি কালরাত্রে অত্যন্ত অন্যায় কাৰ্য্য করেছ, তুমি দেবী সরস্বতীকে বন্দিনী করবার সহায়তা করেছ।” এবার প্রদ্যুমের বিস্মিত হবার পালা। তার মুখ দিয়ে কোনো কথা বার হ’ল না । পুর্ণবৰ্দ্ধন বললেন, “এইসব কুসংসর্গ থেকে দূরে রাখবার জন্যই আমি বিহারের কোনও ছাত্রকে বিহারের বাইরে যাবার অনুমতি দিইনে, কিন্তু—যাকৃ– তুমি ছেলেমানুষ, তোমারই বা দোষ কি ? আচ্ছ, এই স্বরদাসকে দেখতে কিরকম বল দেখি ?” প্রদ্যুম্ন স্বরদাসের আকৃতি বর্ণনা করলে । পূর্ণবৰ্দ্ধন বললেন—“আমি জানি। তুমি যাকে স্বরদাস বলচ, তার নাম স্বরদাসও নয় বা তার বাড়ী অবস্তীতেও নয়। সে হচ্ছে প্রসিদ্ধ কাপালিক গুণাঢ্য। কার্ধ্যসিদ্ধির জন্যে তোমার কাছে মিথ্যা নাম বলেছে।" প্রদ্যুম্ন অধীরভাবে বলে উঠল, “কিন্তু আপনি যে বলছেন—” পূর্ণবৰ্দ্ধন বললেন, “সে ইতিহাস বলছি শোনো। নদীর ধারে যে সরস্বতী-মন্দিরের ভগ্নস্তুপ আছে, ওটা হিন্দুদের একটা অত্যন্ত বিখ্যাত তীর্থস্থান। প্রায় দু শত বৎসর পূৰ্ব্বে একজন তরুণ গায়ক ওখানে থাকৃত, তখন মন্দিরের খুব সমৃদ্ধির অবস্থা ছিল না। কিন্তু প্রবাদ এই যে সে গায়কটি মেঘমল্লারে এমন সিদ্ধ ছিল যে আষাঢ়ী পূর্ণিমার রাতে তার আলাপে মুগ্ধ হয়ে দেবী সরস্বতী স্বয়ং তার কাছে আবিভূত হতেন। সেই থেকে ওই মন্দির এক প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান হ’য়ে উঠে। সে গায়ক মারা যাওয়ায় পরেও কিন্তু পূর্ণিমার রাতে সিদ্ধ গায়কে মল্লার আলাপ করলেই দেবী যেন কোন টানে তার কাছে এসে পড়েন। এই গুণাঢ্য একবার অবস্তীর প্রসিদ্ধ গায়ক সুরদাসের সঙ্গে ওই ঢিবিতে উপস্থিত ছিল। স্বরদাস