পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ) ভারতশাসনসংস্কার অাইন দ্বারা কি পাইয়াছি, তাহা না ভাবিয়া ও তুলনা না করিয়াই নিউ ইয়র্ক টাইমস ওরূপ প্রশ্ন তুলিয়াছেন। বৃঅর যুদ্ধের পর দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় আত্মকর্তৃত্ব পূর্ণমাত্রায় পাইয়াছে। আমরা সমগ্রভারতের সকল রাষ্ট্রিয় বিভাগের কৰ্ত্ত। হওয়া দূরে থাক, কোন একটা প্রদেশের সমুদয় আভ্যস্তরীণ ব্যাপারেও কর্তৃত্ব লাভ করি নাই । সুতরাং দক্ষিণ আফ্রিকার ঔপনিবেশিকদের রাষ্ট্রীয় অধিকাবের সহিত আমাদের রাষ্ট্ৰীয় অধিকারের যখন তুলনাই হয় না, তখন তাহীদের নেতাদের ব্যবহারের সহিত আমাদের নেতাদের ব্যবহারের সাদৃশ্ব বা ঐক্য আশা করা উচিত নয়। এরূপ আশা যে করা হইয়াছে, তাহাতেই বুঝা যায়, যে, শ্বেতকায়দের মতে শ্বেতকায়ের ষোল আনা অধিকার পাইয়। যেরূপ প্রতিদান করে, ভারতীয়ের সাড়ে তিন পাই পাইয়াও সেইরূপ প্রতিদান করিতে বাধ্য । বৃঅর নেতাদের সহযোগিতাও চমৎকার। ভারতীয়ের ব্রিটিশসাম্রাজ্যের স্বশাসক অংশগুলিতে গেলে কিরূপ ব্যবহার পাইবে, তাহ। বিবেচনা করিবার জন্ত কমিটিনিয়োগে আর সবাই রাজী হইল, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি জেনার্যাল স্মার্টুস রাজী হইলেন না – যদিও কমিটি নিযুক্ত হইলেই যে ভারতীয়দিগকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সর্বত্র শ্বেতকায়দের সমান অধিকার দেওয়া হইবে, এরূপ কোন সম্ভাবনা নাই । মুদ্রার ক্রয়শক্তি ও আন্তর্জাতিক বিনিময়ের হার বহু পুরাকালে মানুষ বেশী ক্রয়বিক্রম্ব করিত না । যাহা কিছু অল্প ক্রয়বিক্রয় মাতৃযের প্রয়োজন হইত, তাহা সাক্ষাৎভাবে দ্রব্য বিনিময় করিয়াই চলিত। যথা, কৰ্ম্মকার অস্ত্রের বিনিময়ে খাদ্য দ্রব্য অথবা বস্ত্র সংগ্ৰহ করিয়া লইত । সেই সময়ে এইরূপ দ্রব্য বিনিময় করিয়া জীবনযাপন সম্ভব ছিল ; তাহার কারণ, মানুষের ব্যবহার্ধ্য দ্রব্যের সংখ্যা তখন অল্পই ছিল এবং যাহা প্রয়োজন তাহ প্রায় সকলেই নিজ হস্তে প্রস্তুত করিয়া লইত। কিন্তু মাতুয ক্রমেই নূতন নূতন অভাবের স্বষ্টি বিবিধ প্রসঙ্গ—মুদ্রার ক্রয়শক্তি ও আন্তর্জাতিক বিনিময়ের হার Y. করিয়া নিজের জীবন জটিলতাময় করিয়া তুলিতে লাগিল এবং ফলে শীঘ্রই প্রত্যেক মানুষ অপরের প্রস্তুত নানা দ্রব্য আহরণ না করিয়া জীবনযাপনে অক্ষম হইয়৷ পড়িল । এই অভাবপূরণের ব্যাপার শীঘ্রই এরূপ জটিল হইয়া উঠিল, যে, সাক্ষাৎভাবে দ্রব্য বিনিময় করিয়া তাহার সমাধান অসম্ভব হইয়া উঠিল । যথা, চৰ্ম্মকার দেখিল, যে, তাহার পক্ষে নিজের সকল অভাব নিজে পুরণ করাও (যথা, চাল, ডাল, তেল, মুন, জামা, কাপড়, বাসন, ঔষধ, অলঙ্কার, অস্ত্র, ; যন্ত্র, আসবাব প্রভৃতি সংগ্ৰহ ) যেরূপ অসম্ভব, সেইরূপ চৰ্ম্মদ্রব্য লইয়া নানা স্থানে চৰ্ম্মদ্রব্য-গ্রহণেচ্ছুক অপর-দ্রব্য-উৎপাদকের সন্ধান করিয়া তাহীদের নিকটই সাক্ষাৎ বিনিময়ের সাহায্যে নিজ অভাবপূরণও অসম্ভব । সাক্ষাৎ বিনিময়ের অসুবিধার ফলে বিনিময়োপায়ের, অথবা যেসকল বস্তুর পরিবর্তে সমাজস্থিত সকলেই সকল দ্রব্য দান বা গ্রহণে প্রস্তুত হইবে সেইসকল বস্তুর, স্বষ্টি । মুদ্র। এইসকল বিনিময়োপায়ের ক্রমবিকাশের ফল । মুদ্রার সাহায্যে মানুষ বৰ্ত্তমানে সকল প্রকার ক্রয় বিক্রয় করে। যথা শ্রমিক তাহার শ্রম মুদ্রার পরিবর্তে বিক্রয় করে । ইহা মাহিনা নামে পরিচিত। ধনিক তাহার ধন মুদ্রার (স্বদের ) পরিবর্তে অপরকে অল্প ৰা অধিক কালের জন্য বিক্রয় করে, ইত্যাদি। মুদ্রার কোন যথার্থ মূল্য অথবা নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা না থাকিলেও চলে ; এমন কি বৰ্ত্তমান কালে বহুক্ষেত্রে মুদ্র বিনিময় সহজসাধ্য করা প্রভৃতি কাৰ্য্য ব্যতীত অন্ত কোন প্রয়োজন সিদ্ধ করে না । অধিক স্থলেই মুদ্র। কাগজখণ্ড মাত্র। ইহা ব্যতীত অন্ত অনেকপ্রকার মুদ্রার যথার্থ মূল্য অপেক্ষা ক্রয়শক্তি অধিক । যথা, একটি রূপার টাকায় যে-পরিমাণ রূপা আছে, সেই পরিমাণ রূপা ক্রয় করিতে এক টাকা অপেক্ষা কম অর্থের প্রয়োজন হয়। মুদ্রার ক্রয়শক্তি তাহার নিজস্ব মূল্য অপেক্ষ অধিক হওয়ার কারণ তাহার ংখ্যা সীমাৰদ্ধ করিয়া রাখা । যদি মুদ্রার সংখ্যা অপ্রতিহতভাবে বাড়িয়া যাইবার উপায় থাকিত, তাহা হইলে তাহার ক্রয়ুশক্তি তাহার যথার্থ মূল্যের সর্মান