পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] উচ্চারণ করতে হবে। কিন্তু এমন দৃষ্টাস্ত কবিতায় অতি বিরল। অক্ষরবৃত্ত ছন্দ। অক্ষরবৃত্ত ছন্দের সর্বাঙ্গসম্পূর্ণ শ্রেণী-ভাগ করা বিশেষ সহজ নয় । কেননা বাংলার কবিগণ শত শত বৎসর ধরে এ ছন্দে কবিতা লিখে আসছেন এবং তার ফলে এ-ছনে অসংখ্য ও অদ্ভুত অদ্ভুত রূপবৈচিত্র্য দেখা দিয়েছে । কবিরা নিজের ইচ্ছা-মতেই কোথাও এক অক্ষর বেশী বা কোথাও এক অক্ষর কম ব্যবহার করেই মনে করেছেন এই একটি নূতন ছন্দ হ’য়ে গেল এবং নিজ কল্পনা থেকে এর একটি স্বতন্ত্র নাম দিয়ে ফেলেছেন । এমনি করে’ এ ছন্দে অসংখ্য প্রকার ভেদ ও অসংখ্য নামের উৎপত্তি হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ স্থলেই এই শ্রেণীভাগ ও নামকরণ নিছক খামখেয়ালি বই আর কিছুই নয়। তাছাড়া অক্ষরবৃত্তের নামে অনেক কবিতা চলে আসছে, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সেগুলো অক্ষরবৃত্তের এলাকায় পড়ে না; আসলে সেগুলোর ধ্বনি ও গতিভঙ্গী মাত্রাবৃত্তের ন্যায়। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ পৰ্য্যস্ত এ ছন্দে নানা রকম অস্তুত প্রকার-ভেদ দেখা দিচ্ছিল । বোধ করি অবশেষে রবীন্দ্রনাথের হাতে পড়ে। এ ছন্দ তার স্বরূপ প্রকাশ করতে পেরেছে । তিনি এর কতগুলোকে অক্ষরবৃত্তের এলাকারই রেখেছেন, আর কতগুলোকে মাত্রাবৃত্তের অধিকারেব মধ্যে নিয়ে গেছেন। রবীন্দ্রনাথষ্ট মাত্রাবৃত্ত ছন্দের উদ্ভাবস্থিত ৷ পূৰ্ব্ব কবিদের পাথপেয়ালির একটা দৃষ্টান্ত দিচ্ছি। “প্রখর রবির কর শিরে সঙ্গ হয় হে, তার তেজে বালি ভাতে, পদে নীতি সয় হে ।” এখানে যদি প্রতি ছত্রের শেষ অক্ষরটা না থাকৃত তাহ’লেই এ ছন্দটা হ’ত পয়ার । কিন্তু যেহেতু শেষে একটি “হে’ যোগ করে দেওয়া হয়েছে সেজন্য এইটে আর পয়ার রইল না, সম্পূর্ণ বদলে গিয়ে তার নাম হল "মালতী” ছন্দ । কিন্তু এই মালতীর আগে যদি আর দুটো অক্ষর বসানো যায় তাহলেই এ ছন্দ হয়ে যাবে “মালতীলতা” ! যথা= তুমি আপনার দোষ কভু দেখিতে না পীও হে। দেখি, পাইলে পরের দোষ শত মুখে গাও হে।” মাত্রাবৃত্ত ছন্দ هسون যাহোক, এ-সমস্ত খামখেয়ালির বিস্তৃত আলোচন৷ করার স্থান আমাদের নেই। সুতরাং প্রাচীন শ্রেণীভাগ ও “কুসুম-মালিকা", "চম্পক” “মালকাপ" প্রভৃতি কাল্পনিক নাম ছেড়ে দিয়ে সাধারণ ভাবে আধুনিক ছন্দের শ্রেণীভাগ ও নামকরণ করব । এ সম্বন্ধে প্রথম বক্তব্য এই যে অক্ষরবৃত্ত ছন্দের পাদ-বিন্যাস সাধারণত স্বরবৃত্ত বা মাত্রাবৃত্তের মতে একভাবেই চলে না । এর পাদবিন্যাসের অনেক বৈচিত্র্য আছে। সুতরাং আমাদের পূর্বপ্রণালী অকুসারে এ ছন্দকে চতুরক্ষর-পাদ, অষ্টাক্ষর-পদে প্রভৃতি শাখায় বিভক্ত না করে একেবারেই দ্বিপদী, ত্রিপদী প্রভৃতি শ্রেণীতে বিভক্ত করা সমীচীন মনে করি ; এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রতিপাদের অক্ষর-সংখ্যা দিয়ে গেলেই প্রত্যেক ধারার বিশিষ্ট স্বরূপটি চোখে পড়বে। ১ । দ্বিপদী ( ৬+৫ )— হে নভোমণ্ডল, বল স্বরূপ কে দিল তোমাবে এরূপ রূপ : এ ভব-ভবনে যেদিকে চাই সেদিকে তোমারে দেখিতে পাই । কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ষড়ক্ষর-পাদ, অপুর্ণ দ্বিপদী ; প্রাচীন নাম—একাকলি । ( و + وه ) fain | * আজি শচীমাতা কেন চমকিলে ? ঘুমাতে ঘুমাতে উঠিয়া বসিলে ; পুষ্ঠিত অঞ্চলে নিমুনিমু বলে’ দ্বার খুলি মাও কেন বহিরিলে ? শিবনাথ শাস্ত্রী ষড়ক্ষর-পাদ, পূর্ণ দ্বিপদী ; প্রাচীন নাম—দীর্ঘ একবলি । ( و ... را ) ithه چf সাত কোটি/সপ্তানেরে, হে মুগ্ধা জননি, রেপেছ বteলী ক’রে মালুম করনি । 5 || ज्ञरौौवनांशं প্রাচীন নাম-পয়ার । অষ্টাক্ষর-পাদ, অপূর্ণ দ্বিপদী। ৪ । দ্বিপদী ( ৮+৮) “যেই দিন ও-চরণে ডালি দিমু এ-জীবন, হাসি অশ্র সেই দিন কৰিয়াছি বিসর্জন । 事 聯 হাসিবার বির মীর নাহি আর ছপিনী জনমভূমি, মা আমার, মা জামারশ” জষ্টাক্ষর-পাণ, পূর্ণ দ্বিপদী।